স্নেহাশিস চক্রবর্তী।
মন্ত্রিত্বের স্বাদ কতটা মিঠে, তা সময় বলবে। এমন দফতর হাতে এল, যা ওজনদার হলেও প্রতি পদে রয়েছে চ্যালেঞ্জ। নয়া পরিবহণমন্ত্রী তথা হুগলির জাঙ্গিপাড়ার বিধায়ক স্নেহাশিস চক্রবর্তী বুধবার রাতে দাবি করলেন, যানবাহনে গতি আনতে চেষ্টার কসুর করবেন না। তাঁর কথায়, ‘‘রাজ্যে পরিবহণ নিয়ে কাজের সুযোগ আছে। আপ্রাণ চেষ্টা করব, পরিষেবা যাতে আরও উন্নত করা যায়।’’
মঙ্গলবার সন্ধ্যার পর থেকেই দুরুদুরু বুকে দলনেত্রীর ফোনের জন্য অপেক্ষা করছিলেন স্নেহাশিস। কিছুক্ষণের মধ্যেই এসেছিল সেই কাঙ্ক্ষিত ফোন। শোনেন, তিনি মন্ত্রিসভার সদস্য হচ্ছেন। বুধবার বিকেলে স্নেহাশিস রাজভবনে পৌঁছন স্ত্রী সুজাতা আর পুত্র আঞ্জিষ্ণুকে নিয়ে। শপথ নেন পূর্ণমন্ত্রী হিসেবে। ফিরহাদ হাকিমকে সরিয়ে তাঁকে এই পদে বেছে নিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
২০১১ সালের বিধানসভা ভোটে জাঙ্গিপাড়ায় প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী সিপিএমের সুদর্শন রায়চৌধুরীকে হারিয়ে স্নেহাশিস বিধায়ক হন। ঠান্ডা মেজাজের দক্ষ এই সংগঠককে আর ফিরে তাকাতে হয়নি। ক্রমে দায়িত্ব বেড়েছে। এক বছর আগে তৃণমূল হুগলিকে দু’টি পৃথক সাংগঠনিক জেলায় ভাগ করে। শ্রীরামপুর-হুগলির সভাপতি হন স্নেহাশিস। সোমবার ওই পদ থেকে তাঁকে সরিয়ে দেয় দল। তখনই নিশ্চিত হয়ে যায়, অন্য দায়িত্ব পাচ্ছেন এই তরুণ তুর্কি।
টোটোর দাপট বাড়ছে সর্বত্র। রাজ্যে বহু বাসরুট বন্ধ। বাসের অভাবে স্নেহাশিসের জেলা হুগলির বাসিন্দাদেরই নাজেহাল অবস্থা। একাধিক বার অটো-টোটো বদলে গন্তব্যে পৌঁছতে গ্যাঁটের কড়ি আর সময় দুই-ই বেশি খরচ হচ্ছে যাত্রীদের। এর সুরাহা মিলবে কী ভাবে?
স্নেহাশিসের বক্তব্য, ‘‘এটা বাস্তব, টোটোকে নিয়মে নিয়ে আসা জরুরি। এ ক্ষেত্রে আদালতের একটি রায়ও স্মরণযোগ্য। জাতীয় ও রাজ্য সড়কে টোটো চলাচলে আইনি নিষেধ রয়েছে। একমাত্র ওই দুই সড়কের সংযোজক রাস্তাতেই টোটো চলতে পারবে। সব পক্ষের সঙ্গে কথা বলে, মানুষের রুজিরুটি বিষয়-সহ সব দিক বিবেচনা করেই সিদ্ধান্ত নেব। এ ভাবেই বাসরুটগুলি ফের চাঙ্গা হবে।’’
নতুন কোনও ভাবনা?
নতুন মন্ত্রীর বক্তব্য, তৃণমূল সরকার কলকাতায় বাতানুকূল বড় বাস চালু করেছে। এ বার একই ভাবে হাওড়া, হুগলি, উত্তর ও দক্ষিণ ২৪ পরগনায় যাতে বাতানুকূল বাস চালানো যায়, পরীক্ষামূলক ভাবে তা দেখা হবে। দূরপাল্লার বাসরুটের ক্ষেত্রেও উন্নতির সুযোগ রয়েছে।
চ্যালেঞ্জ আরও আছে। ১৫ বছরের পুরনো গাড়ি বাতিলের নির্দেশ রয়েছে পরিবেশ আদালতের। তা করে দেখাতে হবে স্নেহাশিসকে। এর আগে শুভেন্দু অধিকারী (এখন বিজেপিতে। বিরোধী দলনেতা) এবং ফিরহাদ পরিবহণমন্ত্রী থাকার সময় কলকাতায় অ্যাপ ক্যাবের ভাড়া সকলের নাগালে আসেনি। স্নেহাশিস বলেন, ‘‘শুভেন্দুবাবু যখন দায়িত্বে ছিলেন, খুব একটা গুছিয়ে ওঠা যায়নি। তবে, আগ বাড়িয়ে কিছু বলব না। আগে দফতরের অফিসারদের সঙ্গে এ নিয়ে আলোচনা করব। তবে, একটা বিষয় বলতে পারি, আমি নিজে সাধারণ ঘরের ছেলে। তাই ভাড়া এমন রাখার চেষ্টা করব, যাতে তা সাধারণের ধরাছোঁয়ার মধ্যে থাকে।’’ বাসমালিকদের ভাড়া বাড়ানোর দাবি নিয়ে স্নেহাশিস মন্তব্য করেননি।
ইতিমধ্যেই পরিবহণ দফতরের অফিসারদের সঙ্গে কথা বলে স্নেহাশিস জেনেছেন, নতুন ১১৮০টি বাস পাওয়া গিয়েছে। সেগুলি যথাযথ ভাবে কাজে লাগানোর কথা তিনি ভাববেন। তবে, কিছুটা সময় নিয়ে আগে পুরো পরিস্থিতি বোঝার চেষ্টা করবেননতুন পরিবহণমন্ত্রী।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy