জাদুঘরটি খোলার প্রস্তুতি চলছে। নিজস্ব চিত্র।
স্বাধীনতা আন্দোলনের সঙ্গে ওতপ্রোত ভাবে জড়িয়ে রয়েছেন চন্দননগরের নাম। বিপ্লবীদের স্মৃতিতে গত বছরের ৩১ অগস্ট চন্দননগর কলেজে জাদুঘর চালু হয়েছিল। ১৮৬২ সালের ওই দিনেই কলেজটি প্রতিষ্ঠিত হয়। তবে, জাদুঘর চালু হলেও এতদিন সাধারণের প্রবেশাধিকার ছিল না। কাল, রবিবার থেকে তা সাধারণের জন্য খুলে দেওয়া হচ্ছে। সে দিনই বিভিন্ন দেশের ৩০ জন পর্যটকের আসার কথা। সবাইকে স্বাগত জানাতে প্রায় আড়াইশো বছরের পুরনো চন্দননগরের রথের দু’টি নিমকাঠের ঘোড়া বসানো হয়েছে জাদুঘরের সামনে।
সশস্ত্র স্বাধীনতা আন্দোলনে জড়ানোর দায়ে ১৯০৮ থেকে টানা ২৩ বছর বন্ধ ছিল চন্দননগর কলেজ। পরে এই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের উজ্জ্বল প্রত্যাবর্তন হয়। সম্প্রতি সেই ভবন সংস্কার এবং তার একাংশে শহরের শিল্প-সংস্কৃতি, বিপ্লব আর কলেজের ইতিহাসের জাদুঘর গড়ে তোলা হয়। গত বছর ৬ অক্টোবর আনুষ্ঠানিক ভাবে বিপ্লবীদের স্মৃতির উদ্দেশে জাদুঘরটি উৎসর্গ করা হয়। সে দিনই অধ্যক্ষ দেবাশিস সরকার সাধারণের জন্য জাদুঘর খুলে দেওয়ার ইচ্ছা প্রকাশ করেছিলেন।
অধ্যক্ষ জানান, যে শহরে জাদুঘর, সেই শহরের হারিয়ে যেতে বসা ইতিহাসকে সেখানে সংরক্ষিত করতে পারার মধ্যে একটা আলাদা অনুভূতি রয়েছে। সেই মতো প্রায় আড়াইশো বছরের পুরনো চন্দননগর রথের খোঁজ শুরু হয়। সেই রথে থাকা প্রায় ১৩ ফুট লম্বা দু'টি নিম কাঠের ঘোড়াকে জাদুঘরের সামনে বসানো হয়েছে। মাঝে থাকছে সারথি। পুরনো রথে থাকা অন্যান্য মডেলগুলিকেও আনা হয়েছে। অযত্নে পড়ে থাকা সেই সব শিল্পকলাকে ঘষে-মেঝে ঝকঝকে করে তোলার কাজ চলছে কলেজ চত্বরেই।
রথ পরিচালন সমিতি সূত্রে জানা গিয়েছে, আনুমানিক ১৭৭৬ সালে তৎকালীন ব্যবসায়ী যাদুবেন্দ্র ঘোষ প্রতিষ্ঠিত সম্পূর্ণ নিম কাঠের তৈরি রথ বয়সের ভারে ভারাক্রান্ত হয়ে শেষবার পথে বেরিয়েছিল ১৯৬১ সালে। পরের বছর তৈরি করা হয় ন’টি চূড়াবিশিষ্ট লোহার তৈরি রথ। ভগ্নপ্রায় কাঠের রথের জায়গা হয় লক্ষ্মীগঞ্জের জগন্নাথবাটীতে। কালের নিয়মে রথের অবশিষ্টাংশেরও ক্ষয় হতে শুরু করে।
রথ পরিচালন সমিতির সহ-সভাপতি রবীন্দ্রনাথ মুখোপাধ্যায় বলেন, "দ্রুত অবক্ষয়ের মধ্যে থেকে ইতিহাসকে পুনরুজ্জীবিত করল চন্দননগর কলেজ। আগামী প্রজন্ম দেখবে, জানবে চন্দননগর রথের ইতিহাস।’’ অধ্যক্ষ বলেন, "বিপ্লবতীর্থ চন্দননগরে বিপ্লবীদের ত্যাগের একটা আভাস ফুটিয়ে তোলার চেষ্টা করা হয়েছে জাদুঘরে। আরও নতুন নতুন বিষয় যুক্ত হচ্ছে। তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য যাদুবাবুর পুরনো রথের কিছু অবশিষ্ট অংশ।’’
অধ্যক্ষ জানান, শিল্বী শৈবাল দাস, সৈকত নিয়োগী, সৌমব্রত দাশগুপ্ত, সমীর রায়, পার্থপ্রতিম সাহাদের প্রচেষ্টায় জাদুঘরটিকে সাজিয়ে তোলা হয়েছে। দেশের একটি বিখ্যাত ভ্রমণ সংস্থা মারফত ৩০ জন বিদেশি এই জাদুঘর দেখার আগ্রহ প্রকাশ করেছিলেন। আগামী রবিবার তাঁদের আসার সঙ্গে সঙ্গেই সকলের জন্য খুলে দেওয়া হবে জাদুঘর। প্রতি শনি ও রবিবার বিকেল তিনটে থেকে ছ'টা পর্যন্ত তা খোলা থাকবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy