ডায়রিয়ার প্রকোপ ছড়িয়েছে বলাগড় ব্লকের ডুমুরদহ নিত্যানন্দপুর-১ পঞ্চায়েতের দাদপুর এলাকায়। গত কয়েক দিনে ১৬ জন গ্রামবাসী অসুস্থ হয়ে পড়েন। তার মধ্যে ৮ জনকে ভর্তি করানো হয়েছিল জিরাট হাসপাতালে। পরে এক জনকে কালনা হাসপাতালে স্থানান্তরিত করানো হলে তিনি সেখানেই মারা যান। অন্য জন চুঁচুড়া হাসপাতালে যাওয়ার পথেই মারা যান। মৃতেরা হলেন মনি মান্ডি (২৫) ও মঞ্জু সাধু (৩৮)।
এলাকাবাসীর দাবি, ডায়রিয়াতেই মারা গিয়েছেন ওই দু’জন। তবে তা মানতে নারাজ হুগলির মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক মৃগাঙ্কমৌলি কর। তিনি বলেন, “মৃতদের জ্বর এবং বমির উপসর্গ ছিল। তবে তাঁরা যে ডায়রিয়াতেই মারা গিয়েছেন, তা এখনই বলা যাবে না।’’
এর আগে বাঁকুলিয়া ধোবাপাড়া পঞ্চায়েতেও ডায়রিয়ার প্রকোপ দেখা গিয়েছিল। এলাকাবাসীর ক্ষোভ, তাঁরা যে পুকুরে জল ব্যবহার করেন, সেখানে নিয়মিত আবর্জনা পড়ে। ওই পুকুরের জল থেকেই এই সংক্রমণ ছড়িয়েছে। মনি মান্ডির স্বামী হাকান বলেন, “শনিবার সকালে স্ত্রী অসুস্থ হয়ে পড়ে। জিরাট হাসপাতালে নিয়ে গেলে প্রাথমিক চিকিৎসার পর ছেড়ে দেয়। বাড়ি আসার কয়েক ঘণ্টা পরেই আরও অসুস্থ হয়ে পড়েছিল মনি। চুঁচুড়া হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পথে মারা গেল।’’ তাঁর ক্ষোভ, ‘‘ওই পুকুরে কাপড় কাচা, বাসন মাজা, স্নান চলে। ওই নোংরা জল থেকেই
এমন হয়েছে।’’
রবিবার ওই এলাকা পরিদর্শনে গিয়েছিলেন মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক মৃগাঙ্কমৌলি কর, বিডিও সুপর্ণা বিশ্বাস, ডুমুরদহ নিত্যানন্দপুর-১ পঞ্চায়েতের উপপ্রধান শ্যামাপ্রসাদ রায় বন্দ্যোপাধ্যায়-সহ আরও অনেকে। মৃগাঙ্কমৌলি বলেন, ‘‘পুকুরটি কাঁটা দিয়ে ঘেরা হয়েছে। এলাকায় একটি নলকূপ বসানোর পাশাপাশি বাড়ি বাড়ি ২৫ লিটার করে বিশুদ্ধ জল দেওয়া হয়েছে। স্বাস্থ্য কর্মীরা এলাকায় খোঁজ রাখছেন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ রয়েছে।”
বিডিও বলেন, “প্রশাসনের তরফে সব সময় একটি অ্যাম্বুল্যান্স ওই এলাকায় রাখা রয়েছে। পুকুর ও নলকূপের জলের নমুনা সংগ্রহ করে ল্যাবে পরীক্ষার পাঠানো হয়েছে। রিপোর্ট এলে বোঝা যাবে, কী থেকে সংক্রমণ ছড়িয়েছে।’’
শ্যামাপ্রসাদ জানান, এলাকায় ১২-১৪টি পরিবারের জন্য একটি নলকূপ ছিল, তা সিল করা হয়েছে। পরিবর্তে পর্যাপ্ত জলের ব্যবস্থা
রয়েছে। পুকুরে চুন ও এলাকায় ব্লিচিং ছড়ানো হয়েছে।
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)