ভাঙা গাড়ি ও অন্য আবর্জনার স্তূপ হাওড়ার রাউন্ড ট্যাঙ্ক লেনের পুর স্বাস্থ্যকেন্দ্রে। বুধবার। ছবি: দীপঙ্কর মজুমদার
চতুর্দিকে পড়ে রয়েছে কয়েক দশক ধরে জমে থাকা ভাঙাচোরা গাড়ির ভগ্নাবশেষ। ভাঙা যন্ত্রপাতির মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে জমে রয়েছে বৃষ্টির জল। যত্রতত্র পড়ে রয়েছে আবর্জনা। তার মধ্যে রয়েছে গাড়ির টায়ার। সেই টায়ারের মধ্যে জমা জলে কিলবিল করছে মশার লার্ভা। দিনের বেলাতেও মশার কামড়ে কিছু ক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকা দায়।
এই ছবি কোনও পরিত্যক্ত বাড়ি বা কারখানা চত্বরের নয়। এমনই অবস্থা হাওড়া পুরসভার রাউন্ড ট্যাঙ্ক লেনের প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রের। পরিস্থিতি এতটাই খারাপ যে, আশপাশে থাকা বাসিন্দারা অভিযোগ করেছেন, স্বাস্থ্যকেন্দ্রটাই হয়ে গিয়েছে মশার বংশবিস্তারের জায়গা। পুরসভাকে বার বার বলেও গত কয়েক দশকে ওই স্বাস্থ্যকেন্দ্র থেকে স্তূপীকৃত ভাঙা গাড়ি, টায়ার সরানো যায়নি। নিয়মিত আবর্জনা পরিষ্কার না করায় বৃষ্টির জমা জলে মশার বংশবৃদ্ধির অতি উত্তম জায়গা হয়ে গিয়েছে গোটা স্বাস্থ্যকেন্দ্রটাই।
জেলা স্বাস্থ্য দফতরের হিসাব অনুযায়ী, ইতিমধ্যেই হাওড়া পুরসভার ২৯ নম্বর ওয়ার্ডে অবস্থিত ওই এলাকায় মশাবাহিত রোগ মারাত্মক আকার নিয়েছে। তিন জন ম্যালেরিয়ায় আক্রান্ত হয়েছেন। আর ডেঙ্গিতে আক্রান্ত হয়েছেন ১৫ জন। এ ছাড়া, বহু মানুষ জ্বরে ভুগছেন। এলাকার যখন এই পরিস্থিতি, তখন সেখানকার স্বাস্থ্যকেন্দ্রের অবস্থা নিয়ে উদ্বিগ্ন সেখানে কর্মরত পুরসভার চতুর্থ শ্রেণির কর্মী, সাফাইকর্মী ও গাড়িচালকেরা। কারণ, রাউন্ড ট্যাঙ্ক লেনের ওই স্বাস্থ্যকেন্দ্রের ভিতরেই রয়েছে পুরসভার বিভিন্ন দফতরের কর্মীদের অস্থায়ী আবাসন। অত্যন্ত অস্বাস্থ্যকর ওই পরিবেশে থাকা বাসিন্দাদের অভিযোগ, গোটা এলাকায় ডেঙ্গি-ম্যালেরিয়া ছড়িয়ে পড়ছে। ওই স্বাস্থ্যকেন্দ্রে অনেক রোগী আসেন, চিকিৎসকেরা আসেন। সেখানে সদ্যোজাতদের চিকিৎসাও হয়। তা সত্ত্বেও পুরসভার স্বাস্থ্য দফতরের কোনও হুঁশ নেই বলে অভিযোগ তাঁদের ।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক মহিলা কর্মী বলেন, ‘‘এখানে এত মশা যে, দিনের বেলাতেও আমাদের মশারি টাঙিয়ে শুতে হচ্ছে। বাচ্চাদের নিয়ে সব সময়ে আতঙ্কের মধ্যে আছি। কারণ, এই ওয়ার্ডে ম্যালেরিয়া, ডেঙ্গি সবই হচ্ছে।’’
পুর কর্তৃপক্ষ এর আগে বার বার বাসিন্দাদের নির্দেশ দিয়েছেন, পরিত্যক্ত টায়ারে যাতে জল না জমে, তা সব সময়ে দেখতে হবে। কোথাও জল জমে থাকলে তা ফেলে দিতে হবে। কিন্তু পুরসভারই স্বাস্থ্যকেন্দ্রের এমন বেহাল অবস্থা ক্ষোভ তৈরি করেছে সেখানকার কর্মী ও আশপাশের বাসিন্দাদের মধ্যে।
হাওড়া পুরসভার চেয়ারপার্সন সুজয় চক্রবর্তী বলেন, ‘‘পুরসভার স্বাস্থ্যকেন্দ্রের মধ্যে এমন অবস্থা কেন হল, তা খোঁজ নিয়ে দেখব। তবে ওই স্বাস্থ্যকেন্দ্রটি দীর্ঘদিন বন্ধ ছিল। তাই হয়তো ঠিক মতো পরিষ্কার করা হয়নি। আমি স্বাস্থ্য দফতরকে বলে অবিলম্বে ব্যবস্থা নিচ্ছি।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy