চুঁচুড়া ইমামবাড়া সদর হাসপাতাল। —নিজস্ব চিত্র।
এক মহিলা মারা গিয়েছিলেন হাসপাতালে। দেহ নিতে গিয়েছিলেন প্রতিবেশী কয়েক জন যুবক। ভুলবশত তাঁরা অন্য এক মহিলার মৃতদেহ নিয়ে চলে যান। পরে সেই মহিলার আত্মীয়েরা এলে ভুল ধরা পড়ে। হুলস্থুল হয়। শেষে শ্মশানের পথ থেকে দেহ নিয়ে ফেরেন ওই যুবকেরা। সঠিক দেহ নিয়ে যায় দু’পক্ষ। হাঁফ ছেড়ে বাঁচে হাসপাতাল! রবিবার সকালে এই ঘটনা চুঁচুড়া ইমামবাড়া হাসপাতালের।
হাসপাতাল ও স্থানীয় সূত্রে খবর, শ্যামলী মজুমদার নামে এক মহিলা চন্দননগরের বোড়াইচণ্ডীতলায় একাই ভাড়া থাকতেন। অসুস্থ হওয়ায় দুর্গাপুজোর সপ্তমীতে তাঁকে ইমামবাড়া হাসপাতালে ভর্তি করেন পড়শিরা। তিনি ছিলেন মহিলা মেডিক্যাল ওয়ার্ডের ৮ নম্বর শয্যায়। এক দিন পরে তিন তলার ওই ওয়ার্ডেই ৬ নম্বর শয্যায় ভর্তি হন মগরার মিঠাপুকুরের বাসিন্দা মোমিনা বেগম। দু’জনেরই বয়স বছর ষাটেক। রবিবার সকালে অল্প সময়ের ব্যবধানে দু’জনেই মারা যান। সকাল ৯টা নাগাদ শ্যামলীর দেহ ছাড়ার কথা ছিল। আধ ঘণ্টা পরে মোমিনার।
সেই মতো শ্যামলীর দেহ নিতে আসেন প্রতিবেশীরা। হাসপাতালের খবর, ভুল করে মোমিনার দেহ নিয়ে শববাহী গাড়িতে চাপিয়ে শ্মশানের দিকে রওনা হন তাঁরা। কিছুক্ষণ পরেই মোমিনার পরিবারের লোকেরা দেহ নিতে এলে বিষয়টি নজরে আসে। হইচই শুরু হয়। হাসপাতালের তরফে তড়িঘড়ি শববাহী গাড়ির চালককে ফোন করা হয়। তিনি গাড়ি ঘুরিয়ে হাসপাতালে ফিরে আসেন। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের গাফিলতিতেই এমন পরিস্থিতি, এই অভিযোগে বিক্ষোভ দেখান মোমিনার পরিবারের লোকেরা। হাসপাতালের নিরাপত্তাকর্মী থেকে ওয়ার্ড মাস্টার পরিস্থিতি সামলানোর চেষ্টা করেন। তাঁদের অনুনয়ে পরিস্থিতি শান্ত হয়।
এ বিষয়ে দু’পক্ষের কেউই অবশ্য সাংবাদিকদের সামনে মুখ খুলতে চাননি। শ্যমলীর প্রতিবেশীরা শুধু জানান, দুই মৃতার মুখই সাদা চাদরে ঢাকা ছিল। তার জেরেই ভুল। তবে এ ব্যাপারে হাসপাতালের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। ঘটনার সময় উপস্থিত রোগীর আত্মীয়দের দাবি, নার্সদের গাফিলতিতেই এই ঘটনা।
হাসপাতাল সুপার অমিতাভ মণ্ডল এ দিন ছুটিতে ছিলেন। বিকেলে ফোনে বলেন, ‘‘বিষয়টি কিছুই জানি না।’’ তাঁর বক্তব্য, ‘‘দেহ নেওয়ার ক্ষেত্রে পরিবারের লোকেরা শনাক্ত করেন। নার্স নাম মিলিয়ে দেখেন। এ ক্ষেত্রে কী হয়েছে, খোঁজ নেব।’’
শ্যামলীর প্রতিবেশীরা যে শববাহী গাড়ি ডেকেছিলেন, তার চালক দুলাল নন্দী জানান, ওই যুবকেরাই স্ট্রেচারে দেহ নামিয়ে আনেন। মৃতার মুখ কাপড়ে ঢাকা ছিল। দেহ গাড়িতে তুলে তোলাফটক পর্যন্ত যাওয়ার পরে হাসপাতাল থেকে ফোন আসে। দুলাল বলেন, ‘‘ভাগ্যিস ফোনটা এসেছিল।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy