E-Paper

ভাটায় কাজে এসেই সন্তানের জন্য স্কুলের খোঁজ

এ রাজ্যের ইটভাটায় কাজ করেন অসংখ্য পরিযায়ী শ্রমিক। দু’এক জায়গায় স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন বা ব্যক্তিগত উদ্যোগে সীমাবদ্ধ থাকে তাঁদের ছেলেমেয়ের পড়াশোনা।

ভর্তি চলছে।

ভর্তি চলছে। —নিজস্ব চিত্র।

প্রকাশ পাল

শেষ আপডেট: ১৯ নভেম্বর ২০২৪ ০৮:৪৫
Share
Save

সদ্য শুরু হয়েছে ইট তৈরির মরসুম। হুগলির জিরাটে ইটভাটায় এসেই স্থানীয় আশুতোষ স্মৃতি মন্দির প্রাথমিক বিদ্যালয়ে যোগাযোগ শুরু করেছেন দেহাতি কিছু মানুষ। তাঁরা পরিযায়ী শ্রমিক। তাঁদের সন্তানেরা পড়াশোনা করবে। স্কুলে যাবে সাকিনা কুমারী, সুমনা কুমারী, কুদন মাঝি, ঝুমান কুমারী, মোহিত কুমারেরা। শুধুই ধুলোমাটিতে কাটবে না শৈশব।

এ রাজ্যের ইটভাটায় কাজ করেন অসংখ্য পরিযায়ী শ্রমিক। দু’এক জায়গায় স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন বা ব্যক্তিগত উদ্যোগে সীমাবদ্ধ থাকে তাঁদের ছেলেমেয়ের পড়াশোনা। বাকিদের সঙ্গে বইখাতার সম্পর্ক ছিন্ন! সেই পরিস্থিতিতে শিক্ষা মানচিত্রে এমন চিত্র উৎসাহব্যঞ্জক বলে মনে করছেন অনেকে।

বলাগড় বিজয়কৃষ্ণ মহাবিদ্যালয়ের শিক্ষক তথা জাতীয় সেবা প্রকল্পের (এনএসএস) আধিকারিক পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের উদ্যোগে ২০২২ সালে জিরাটের একটি ইটভাটায় পাঠশালা গড়ে ওঠে। তাঁর পাশাপাশি এনএসএসের স্বেচ্ছাসেবক এবং জিরাট কলোনি উচ্চ বিদ্যালয়ের কিছু প্রাক্তনী পড়াতেন। প্রশাসনের সহযোগিতায় গত বছর পাঠশালার পড়ুয়ারা আশুতোষ স্মৃতি মন্দির প্রাথমিক স্কুলে স্কুলে ভর্তি হয়। পরে বলাগড় ব্লকের অন্যত্রও এই উদ্যোগ শুরু হয়। এই বন্দোবস্ত দেশে মডেল করার দাবি ওঠে।

জিরাটের স্কুলটির প্রধান শিক্ষক মহাদেব শীল জানান, গত বছর প্রায় ৮০ জন ভর্তি হয়েছিল। মরসুম শেষে শ্রমিকেরা ঘরে ফেরেন। তাঁরা এখন ইটভাটায় ফিরতে শুরু করেছেন। স্কুলে আসছেন তাঁদের সন্তানেরা। ২৫ জন নতুন ভর্তি হয়েছে। তাঁর কথায়, ‘‘নতুন যারা ভর্তি হয়েছে, তাদের বাবা-মায়েরা নিজেরাই এসে ভর্তির ব্যাপারে খোঁজ নিয়েছেন। ভর্তিতে পার্থবাবু যথারীতি সাহায্য করেছেন। আরও ভর্তি হবে।’’ পার্থের সহকর্মী শুভম দস্তিদারও ভর্তির সময় উপস্থিত ছিলেন।

ঝাড়খণ্ডের পিঙ্কি দেবী কাজ করতেন হরিয়ানায়। এ বার তিনি এখানে। প্রধান শিক্ষককে জানান, প্রতিবেশী মংলা দেবীর কাছে স্কুলের সুবিধার কথা শুনেই এখানে আসা। ইউনিফর্ম, সাবান, খাবার দেওয়ার কথাও জেনেছেন। তাঁর ছেলে বাহুবলী কুমার এখানে ভর্তি হল। মংলার ছেলে গত বছর ভর্তি হয়েছিল।

তবে, বাহুবলীদের জন্য ক্লাসরুমের স্থান সঙ্কুলান নিয়ে চিন্তায় স্কুল কর্তৃপক্ষ। তাঁরা জানান, এই শিশুদের অনেকে বাংলায় সড়গড় হলেও হিন্দির শিক্ষক থাকলে কথাবার্তার আদানপ্রদানে আরও সুবিধা হবে। পার্থের আশা, যে ভাবে এই কাজ চলছে, সরকার এ নিয়ে ভাববে। তিনি জানান, সোমরার সুখারিয়া প্রাথমিক বিদ্যালয়, গুপ্তিপাড়ার সুলতানপুর প্রাথমিক বিদ্যালয়েও পরিযায়ী-সন্তানদের ভর্তি শুরু হয়েছে।

জেলা পরিষদের শিক্ষা কর্মাধ্যক্ষ সুবীর মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘শ্রেণিকক্ষের জন্য সর্বশিক্ষা মিশনের তরফে রাজ্যে প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে। এই ধরনের স্কুলকে প্রাধান্য দেওয়া হচ্ছে। জিরাটের স্কুলটিতে হিন্দি শিক্ষকের বিষয়ে খোঁজ নেব।’’ অবর বিদ্যালয় পরিদর্শক গৌরব চক্রবর্তী বলেন, ‘‘ওই স্কুলে নতুন করে ২৫ জন ভর্তি হয়েছে। সংশ্লিষ্ট পরিকাঠামোয় হিন্দিভাষী শিক্ষকের সুযোগ নেই। যে সমস্ত শিক্ষক হিন্দি জানেন, তারাই বাংলা-হিন্দি মিলিয়ে পড়ান।’’

তথ্য সহায়তা: বিশ্বজিৎ মণ্ডল

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

brick kiln Students Migrant Workers

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy

এটি একটি প্রিন্ট আর্টিক্‌ল…

  • এমন অনেক খবরই এখন আপনার হাতের মুঠোয়

  • সঙ্গে রোজ পান আনন্দবাজার পত্রিকার নতুন ই-পেপার পড়ার সুযোগ

  • ই-পেপারের খবর এখন শুধুই ছবিতে নয়, টেক্সটেও

প্ল্যান সিলেক্ট করুন

মেয়াদ শেষে নতুন দামে আপনাকে নতুন করে গ্রাহক হতে হবে

Best Value
এক বছরে

৫১৪৮

১৯৯৯

এক বছর পূর্ণ হওয়ার পর আপনাকে আবার সাবস্ক্রিপশন কিনতে হবে। শর্তাবলী প্রযোজ্য।
*মান্থলি প্ল্যান সাপেক্ষে
এক মাসে

৪২৯

১৬৯

এক মাস পূর্ণ হওয়ার পর আপনাকে আবার সাবস্ক্রিপশন কিনতে হবে। শর্তাবলী প্রযোজ্য।