Advertisement
১৮ নভেম্বর ২০২৪
drainage system

বেহাল নিকাশি নিয়ে চুপ কেন মুখ্যমন্ত্রী, প্রশ্ন শহরে

বেহাল নিকাশি ব্যবস্থা নিয়েই তাঁরা বেশি সরব। এই পুরসভায় ওয়ার্ড ১৯টি। শহরবাসীর অভিযোগ, আধ ঘণ্টার বৃষ্টিতেই ১৩টি ওয়ার্ড নোংরা জলে ভাসে।

বদ্ধ নালা। আরামবাগ এসডিও অফিসের পিছনে। ছবি: সঞ্জীব ঘোষ

বদ্ধ নালা। আরামবাগ এসডিও অফিসের পিছনে। ছবি: সঞ্জীব ঘোষ

পীযূষ নন্দী
আরামবাগ শেষ আপডেট: ২৬ জুন ২০২৪ ০৮:০০
Share: Save:

বর্জ্য ব্যবস্থাপনা প্রকল্প তৈরির জমিই দিতে পারেনি আরামবাগ পুরসভা। সোমবার নবান্নে রাজ্যের বিভিন্ন পুরসভার কাজের মাপকাঠির নিরিখে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এ কথা উল্লেখ করেন। তবে ‘গ্রিন সিটি’ প্রকল্পের বরাদ্দ পেলেও নিকাশি, স্বাস্থ্য অথবা পুকুর ভরাট, নির্মাণ ইত্যাদির সমস্যা মুখ্যমন্ত্রীর নজরে কেন নেই, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন আরামবাগ শহরের মানুষ।

বেহাল নিকাশি ব্যবস্থা নিয়েই তাঁরা বেশি সরব। এই পুরসভায় ওয়ার্ড ১৯টি। শহরবাসীর অভিযোগ, আধ ঘণ্টার বৃষ্টিতেই ১৩টি ওয়ার্ড নোংরা জলে ভাসে। বর্ষায় তো কথাই নেই! জমা জল বেরনোর পথগুলি এমনিতেই অপরিকল্পিত ভাবে তৈরি। তার উপরে নজরদারির অভাবে নিকাশি নালা বা খালে কলকারখানার ছাই ফেলা, পুকুর ভরাট ইত্যাদি কারণে বহু ক্ষেত্রেই ওই পথ কার্যত সম্পূর্ণ বন্ধ।

১৩ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা শেখ ইসমাইল, ১৯ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা ভুবন মণ্ডল প্রমুখের অভিযোগ, এক শ্রেণির পুরসদস্য এবং প্রোমোটারদের যোগসাজশে বেআইনি ভাবে পুকুর ভরাট ও নির্মাণের প্রক্রিয়া চলে। বেআইনি কাজে বাধা দিতে গিয়ে হুমকির মুখে পড়তে হয়। পুরসভায় জানালে পদক্ষেপ করা হয় না। যথাযথ নিকাশি ব্যবস্থা না থাকায় সারা বছর মশার উপদ্রব থাকে। মশা নিয়ন্ত্রণে কার্যকরী কোনও পদক্ষেপ করা হয় না বলেও অভিযোগ। ফলে ডেঙ্গি, ম্যালেরিয়া সহ নানা রোগ হয়। স্বাস্থ্য দফতরের রিপোর্ট অনুযায়ী, প্রতি বছর গড়ে ১০-১৫ জনের ডেঙ্গি ধরা পড়ে।

নির্দিষ্ট ছাড় না রেখে নিকাশি নালার এক দিক দখল করে যথেচ্ছ বাড়ি নির্মাণ নিয়েও ক্ষোভ-বিক্ষোভ কম হয়নি। স্থানীয় বাসিন্দারা জানিয়েছেন, বেআইনি ও অপরিকল্পিত এই সব নির্মাণের জেরে বিভিন্ন ওয়ার্ডের অধিকাংশ রাস্তায় অ্যাম্বুল্যান্স, দমকলের গাড়ি বা প্রয়োজনীয় সামগ্রী নিয়ে ট্রাক্টর চলতে পারে না। ভোগান্তি হয়।

‘গ্রিন সিটি’ প্রকল্পে কয়েক বছর আগে প্রায় ১৮ কোটি টাকা এলেও সেই অর্থে প্রত্যেক ওয়ার্ডেই কাজ নিয়ে দুর্নীতির অভিযোগ রয়েছে। সাধারণ মানুষের ক্ষোভ, ‘গ্রিন সিটি’র নামে ‘লোক দেখাতে’ শুধু কিছু সরঞ্জাম দিয়ে সাজানো হয়। হাইমাস্টের স্তম্ভ আছে, আলো নেই। প্যানেল বসানো হলেও সৌর-বিদ্যুতের ব্যবস্থা হয়নি। কয়েকটি এঁদো পুকুরের পাড় বাঁধাই করা হয়েছে, অথচ পুকুর সংস্কার করা হয়নি। সেগুলি জঞ্জাল আর মশার আড়ত। পুরসভার নানা কাজে দুর্নীতির অভিযোগ রয়েছে শাসকদল তৃণমূলের বিরোধীদেরও।

পুরসভায় একমাত্র পানীয় জলের সরবরাহ নিয়ে মানুষ খুশি। যদিও গরুকে স্নান করানো, বাগানে সেচ দেওয়া ইত্যাদি বিভিন্ন ভাবে প্রচুর জল অপচয়েরও অভিযোগ আছে।

‘পরিকল্পনাহীন’ ভাবে গড়ে ওঠা শহরে বেশ কিছু সমস্যা আছে, স্বীকার করে পুরপ্রধান, তৃণমূলের সমীর ভাণ্ডারী বলেন, ‘‘মূল সমস্যা নিকাশি। এটা কাটাতে বেশ কিছু ভূগর্ভস্থ নিকাশি নালা এবং মজে যাওয়া নালার পলি তোলায় অনেকটাই সুরাহা হয়েছে। অন্যান্য সমস্যা সমাধানেরও চেষ্টা চলছে।’’ সমীর পুরপ্রধানের চেয়ারে বসেছেন দু’বছর আগে। এই সময়ে কোথাও কোনও দুর্নীতি হয়নি তাঁর দাবি।

অন্য বিষয়গুলি:

drainage system Arambagh Mamata Banerjee
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy