বুদ্ধেশ্বরের বাড়িতে প্রতিবেশীদের ভিড়। নিজস্ব চিত্র।
‘মেরে জান খতরে মে হ্যায়’! গত বুধবার স্বামীর ফোন থেকে এমনই অডিয়ো বার্তা পেয়েছিলেন স্ত্রী। সেই বার্তা পেয়েই স্বামীকে ফোন করেন মহিলা। কিন্তু তাঁর আর কোনও সাড়া পাননি। ফোন বন্ধ ছিল। স্বামীর বিপদ আঁচ করতে পেরে একটা অজানা আতঙ্ক ঘিরে ধরেছিল তাঁকে।
বাপেরবাড়িতে ছিলেন মহিলা। সেই বার্তা পেয়ে তড়িঘড়ি লিলুয়ার দাসপাড়ায় শ্বশুড়বাড়ি ফেরেন তিনি। আশপাশের এলাকায় স্বামী সম্পর্কে খোঁজখবর নেন। তখন জানতে পারেন তিন জন এসে তাঁকে গাড়িতে তুলে নিয়ে গিয়েছেন। এর পরই পুলিশের কাছে একটি অপহরণের অভিযোগ দায়ের করেন মহিলা। সেই ঘটনার কয়েক দিন পর গিরিডিহ জেলার গোবিন্দপুর প্রধান সড়কে টুন্ডি থানার অন্তর্গত বেহদা এবং কামারডিহের মাঝে ওই ব্যক্তির দেহ উদ্ধার হয়।
ঘটনার সূত্রপাত পরকীয়া সম্পর্ককে ঘিরে। পুলিশ জানিয়েছে, লিলুয়ার দাসপাড়ার বাসিন্দা বুদ্ধেশ্বর সাউ গত বুধবার থেকে নিখোঁজ হয়ে যান। তারা জানতে পেরেছে, বুদ্ধেশ্বরের সঙ্গে লিলুয়ার ভট্টনগরের বাসিন্দা বিশ্বনাথ সাউয়ের স্ত্রীর বিবাহবহির্ভূত সম্পর্ক ছিল। তা নিয়েই মাঝেমধ্যে দুই পরিবারের অশান্তি হত। গত বুধবার বুদ্ধেশ্বরের স্ত্রী লক্ষ্মী বাপেরবাড়ি যান। রাত সাড়ে ১০টা নাগাদ তাঁর মোবাইলে একটি অডিয়ো বার্তা আসে— ‘মেরে জান খতরে মে হ্যায়’! তা শোনার পরই আঁতকে উঠেছিলেন লক্ষ্মী। কী হয়েছে তা জানার জন্য তৎক্ষণাৎ বুদ্ধেশ্বরের মোবাইলে ফোন করেন তিনি। কিন্তু কিছুতেই আর যোগাযোগ করতে পারেননি। ফলে বুদ্ধেশ্বর কোথায় রয়েছেন, কী অবস্থায় রয়েছেন তা জানতে পারেননি।
তদন্তে নেমে লিলুয়া থানার পুলিশ জানতে পারে বুদ্ধেশ্বরকে গাড়ি করে উঠিয়ে নিয়ে গিয়েছিলেন বিশ্বনাথ সাউ এবং তাঁর দুই আত্মীয় পঙ্কজ সাউ ও সুনীল সাউ। তল্লাশি চালিয়ে হাওড়া থেকে ওই তিন জনকে গ্রেফতার করে পুলিশ। ধৃতদের জেরা করে পুলিশ জানতে পেরেছে, বুধবার রাত ৮টা নাগাদ বুদ্ধেশ্বরকে বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে যান তাঁরা। তার পর গাড়ির মধ্যেই শ্বাসরোধ করে খুন করে ঝাড়খণ্ডে তোপচাঁচিতে একটি নির্জন এলাকায় ফেলে দিয়ে আসেন।
অন্য দিকে, ঝাড়খন্ডের গিরিডিহ জেলার গোবিন্দপুর প্রধান সড়কে টুন্ডি থানার অন্তর্গত বেহদা এবং কামারডিহের মাঝে এক অজ্ঞাতপরিচয় ব্যক্তির দেহ উদ্ধারে চাঞ্চল্য ছড়ায়। ঘটনার খবর পেয়ে টুন্ডি থানর পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে দেহ উদ্ধার করে। খোঁজ নিয়ে পুলিশ জানতে পারে দেহটি লিলুয়া থেকে নিখোঁজ হওয়া ব্যক্তি বুদ্ধেশ্বরের।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy