একই যাত্রায় পৃথক ফল।
হাওড়া জেলার হাইস্কুলগুলির পঞ্চম থেকে দশম শ্রেণির ছাত্রছাত্রীরা জানুয়ারির প্রথম সপ্তাহে নতুন পাঠ্যপুস্তক পেয়ে গিয়েছে। কিন্তু এখনও হাতে বই পায়নি জেলার সরকারি হাইমাদ্রাসাগুলির প্রায় ৩২ হাজার পড়ুয়া। শিক্ষাবর্ষ শুরু হয়ে গেলেও পড়াশোনা শুরু করতে পারছে না তারা। ফলে, তাদের অভিভাবকদের মধ্যে ক্ষোভের সঞ্চার হয়েছে। মাদ্রাসা শিক্ষকদের আশঙ্কা, নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে বই না-মেলায় সিলেবাস শেষ করতে সমস্যা হতে পারে। হাওড়ায় হাইমাদ্রাসার সংখ্যা ৩২। পড়ুয়ার সংখ্যা কমপক্ষে ৩২ হাজার।
কেন মেলেনি পাঠ্যপুস্তক?
বই দেওয়ার দায়িত্বে থাকা মাদ্রাসা শিক্ষা দফতর সূত্রের খবর, আগে সরকার পোষিত হাইস্কুলগুলির বই ছাপা হয়। তারপর ছাপা হয় হাইমাদ্রাসার বই। সেই কাজে বিলম্ব হওয়ায় সমস্যা দেখা গিয়েছে। হাইমাদ্রাসাগুলিতে মধ্যশিক্ষা পর্ষদের নিয়মই অনুসরণ করা হয়। বাংলা, গণিত, ইংরেজি, ইতিহাস, ভুগোল ও বিজ্ঞানের বই মধ্যশিক্ষা পর্ষদের সিলেবাস মেনেই তৈরি হয়। হাইমাদ্রাসার ছাত্রছাত্রীরা বিনামূল্যে সেই পাঠ্যপুস্তক পায়।
মাদ্রাসার পঞ্চম শ্রেণির পড়ুয়াদের পাঁচটি বই দেওয়া হয়। ষষ্ঠ শ্রেণির পড়ুয়াদের পাওয়ার কথা ১৩টি বই। সপ্তম ও অষ্টম শ্রেণির ছাত্রছাত্রীদের ১৪টি করে বই দেওয়ার কথা। নবম ও দশম শ্রেণির পড়ুয়াদের পাওয়ার কথা চারটি করে বই। এই সব বই খোলাবাজারে মেলে না। ফলে, সরকারের দেওয়া বইয়ের উপরেই পড়ুয়াদের নির্ভর করতে হয়।
একাধিক মাদ্রাসার বেশ কয়েক জন শিক্ষক জানিয়েছেন, আপাতত পুরনো বই দিয়েই পড়াশোনা চালানোর পরামর্শ দিয়েছেন পড়ুয়াদের। হাইস্কুলগুলিতে পাঠ্যপুস্তক দেওয়া হয়েছে জানুয়ারির প্রথম সপ্তাহে। তিন দিন ধরে বই বিলি হয়েছে।
শ্যামপুরের খাজনাবাহালা হাইমাদ্রাসার প্রধান শিক্ষক মণিরুল ইসলাম বলেন, ‘‘নতুন বছরের শুরুতেই ছাত্রছাত্রীদের হাতে নতুন বই তুলে দিই। কিন্তু গত কয়েক বছর ধরে ঠিক সময়ে বই আসছে না। ছাত্র-ছাত্রী ও তাদের অভিভাবকেরা রোজ স্কুলে এসে তাগাদা দিচ্ছেন। তাঁদের ফিরিয়ে দিতে হচ্ছে। খুব খারাপ লাগছে। নির্দিষ্ট সময়ে বই না-পেলে সিলেবাস শেষ করব কী ভাবে?’’
মাদ্রাসাগুলিতে বই বিলির তত্ত্বাবধানে রয়েছে মাদ্রাসা শিক্ষা দফতর। মাদ্রাসাগুলির প্রধান শিক্ষকদের অভিযোগ, তাঁরা নিয়মিত নতুন বইয়ের জন্য দফতরে তাগাদা দিচ্ছেন দফতরে। কিন্তু
কবে পাঠ্যপুস্তক মিলবে, তার নিশ্চয়তা পাচ্ছেন না। ওই দফতর সূত্রের খবর, এই সমস্যা শুধু হাওড়া জেলার নয়। রাজ্যের প্রায় সাড়ে ছ’শো মাদ্রাসার কোথাও এখনও বই
দেওয়া শুরু হয়নি। দফতরের কর্তাদের আশ্বাস, শীঘ্রই বই পাঠিয়ে দেওয়া হবে। আপাতত আশ্বাসই সম্বল।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy