বাণীবন বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের পরীক্ষাকেন্দ্রে ঢোকার আগে নিজেদের সিট নম্বর দেখে নিচ্ছে ছাত্রীরা। প্রকাশ পাল।
করোনার জুজু নেই। বিধিনিষেধের ব্যাপারও নেই। তবে, বৃহস্পতিবার, মাধ্যমিকের প্রথম দিন মাস্ক বিভ্রাটে হয়রান হতে হল হুগলির চুঁচুড়ার কাপাসডাঙা সতীন সেন বিদ্যাপীঠে পরীক্ষা দিতে আসা ছাত্রীদের। অভিযোগ, মাস্ক না পরলে পরীক্ষাকেন্দ্রে ঢোকা যাবে না, এই গুজব ছড়িয়ে পড়ে। ছাত্রীরা দুশ্চিন্তায় পড়ে। মাস্ক জোগাড় করতে ছোটাছুটি শুরু করেন অভিভাবকরা। হুলস্থুল পরিস্থিতি হয়। শেষে তৃণমূলের তরফে মাস্ক বিলি করা হয়।
তৃণমূলের স্থানীয় পুর প্রতিনিধি (কাউন্সিলর) নির্মল চক্রবর্তীর দাবি, সকালে বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে তাঁরা মাস্কের বিষয়টি জানতে পারেন। তিনি বলেন, ‘‘আমরা দলের পক্ষ থেকে অভিভাবকদের জন্য বসার শিবির করেছি। খবর পাওয়ার পরেই মাস্কের ব্যবস্থা করে দিয়েছি।’’
প্রধান শিক্ষক তরুণ কুমারের অবশ্য দাবি, ‘‘কে বা কারা মাস্ক পরা নিয়ে রব তুললেন, জানি না। বিদ্যালয়ের তরফে এমন কোনও বার্তা দেওয়া হয়নি। অনেকেই মাস্ক না-পরে পরীক্ষা দিয়েছে।’’ জেলা বিদ্যালয় পরিদর্শক (মাধ্যমিক) তপনকুমার বসু জানিয়েছেন, মাধ্যমিকে পরীক্ষার্থীদের মাস্ক পরা বাধ্যতামূলক, এমন কোনও নির্দেশিকা নেই। ওই ঘটনার খোঁজ নেবেন বলে তিনি জানান।
হুগলি উচ্চ বালিকা বিদ্যালয়, কামারপাড়া বালিকা শিক্ষামন্দির, ঘুটিয়াবাজার বিনোদিনী উচ্চ বালিকা বিদ্যালয় এবং ডানলপ উচ্চ বিদ্যালয়ের ছাত্রীদের পরীক্ষাকেন্দ্র হয়েছে সতীন সেন বিদ্যাপীঠে। সব মিলিয়ে পরীক্ষার্থী ২৭৯ জন। এ দিন সকাল ১০টা বাজতেই মেয়েদের নিয়ে অভিভাবকেরা পরীক্ষাকেন্দ্রে আসতে শুরু করেন। অভিযোগ, সওয়া ১০টা নাগাদ বিদ্যালয়ের গেটের সামনে কোনও এক জন বলেন, মাস্ক না পরে ঢোকা যাবে না।
পরীক্ষার্থী, অভিভাবকরা জানান, করোনা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে থাকায় মাস্ক পরার চল কার্যত উঠে গিয়েছে। হঠাৎ ওই ঘোষণায় তাঁরা ঘাবড়ে যান। আশপাশের দোকানে মাস্ক কিনতে ভিড় করেন বাবা-মায়েরা। এ সবের মধ্যেই পুর প্রতিনিধি নির্মল দলবল নিয়ে এসে মাস্ক বিলি শুরু করেন।
পরীক্ষা দিতে ঢোকার মুখে এমন পরিস্থিতিতে মেয়েদের মনসংযোগের ক্ষতি হয় বলে বাবা-মায়েদের অনেকের ক্ষোভ। হুগলি উচ্চ বালিকা বিদ্যালয়ের দুই ছাত্রী জানায়, মাস্কের ব্যপারে তাদের আগে থেকে কিছু জানানো হয়নি। মাস্ক ছাড়া পরীক্ষা দিতে ঢোকা যাবে না শুনে, তারা কার্যত ভয় পেয়ে গিয়েছিল। বিনোদিনী উচ্চ বালিকা বিদ্যালয়ের এক ছাত্রী বলে, ‘‘কোভিডের পর থেকে ব্যাগে সব সময় মাস্ক রাখি। তাই, বেঁচে গেলাম। কিন্তু, আগে থেকেজানানো উচিত ছিল।’’ কামারপাড়া বালিকা শিক্ষামন্দিরের এক পরীক্ষার্থীর বাবার কথায়, ‘‘রীতিমতো ঝঞ্ঝাট। খুব খারাপ হল।’’ ছাত্রীরা জানায়, পরীক্ষাকেন্দ্রে মাস্ক নিয়ে কোনও কড়াকড়ি ছিল না। মাস্ক ছাড়াই বহু মেয়ে পরীক্ষা দিয়েছে।
বিজেপির জেলা নেতা সুরেশ সাউয়ের দাবি, ‘‘সকাল থেকেই তৃণমূলের ছেলেরা ওই স্কুলের গেটে ঘুরঘুর করছিলেন। পাশে ওঁদের শিবির ছিল। সেখানে মাস্ক এনে রাখা হয়েছিল। সবাই যাতে মাস্ক নেন, সে জন্য ওরাই মিথ্যা রটিয়ে দেন। নিজেদের প্রচারের জন্য পরীক্ষার্থীদের কথা ওরা ভাবল না।’’ তৃণমূল নেতৃত্ব অভিযোগ মানেননি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy