E-Paper

সন্ধে নামতেই শব্দের তাণ্ডব

পরিবেশকর্মী শুভ্রকান্তি সামন্তের অভিযোগ, তারকেশ্বর, ধনেখালির মতো গ্রামীণ এলাকাতেও শব্দবাজি ফেটেছে। তবে, বলাগড়ে সার্বিক ভাবে বাজির তাণ্ডব এ বার অনেকটাই কম ছিল।

—প্রতীকী চিত্র।

—প্রতীকী চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৩ নভেম্বর ২০২৩ ০৯:২৫
Share
Save

আশঙ্কাই সত্যি হল। কালীপুজোয় আকাশে আঁধার ঘনাতেই দেদার বাজি ফাটল দুই জেলার (হাওড়া ও হুগলি) বেশরভাগ এলাকায়। হুগলিতে শব্দবাজির বেশি দাপট দেখা গেল শিল্পাঞ্চলে। বাজির বিষ ধোঁয়ায় বাতাসে প্রবল দূষণের আশঙ্কা করছেন পরিবেশকর্মীরা।

কালীপুজোয় রাত ৮টা থেকে ১০টা পর্যন্ত শুধুমাত্র সবুজ বাজি পোড়ানোর ছাড়পত্র দিয়েছে আদালত। যদিও নির্ধারিত সময়ের ঢের আগেই বাজি ফাটানো শুরু হয়। সন্ধ্যার পরে গ্রামীণ হাওড়ার উলুবেড়িয়া, আমতা, বাগনান-সহ সর্বত্র বাজির শব্দ ভালই কানে এসেছে। রাতের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বেড়েছে শব্দের হানাদারি। উলুবেড়িয়ার প্রৌঢ় বিশ্বনাথ চট্টোপাধ্যায়ের খেদ, ‘‘কোথায় পুলিশের নজরদারি? শব্দে কান পাতা দায়। বিকট শব্দে বুক কেঁপে উঠছে।’’ হাওড়া গ্রামীণ জেলা পুলিশের আধিকারিকরা অবশ্য দাবি করেছেন, নজরদারি চলছে।

সন্ধ্যার পর থেকেই শব্দের তাণ্ডব শুরু হয় হুগলির জেলা সদর চুঁচুড়ায়। ব্যান্ডেল, কেওটা প্রভৃতি এলাকায় প্রচণ্ড শব্দে বাজি ফেটেছে। চন্দননগর, ভদ্রেশ্বর, বৈদ্যবাটী, শ্রীরামপুর, কোন্নগর, উত্তরপাড়াতেও বাজির শব্দে মানুষ নাকাল হয়েছেন। শ্রীরামপুর ওয়ালশ হাসপাতালের সামনে সশব্দে বাজি ফেটেছে বলে অভিযোগ। চন্দননগর কমিশনারেটের এক কর্তার অবশ্য দাবি, সর্বত্র টহলে জোর দেওয়া হয়েছে। ধরপাকড় চলছে।

বাজির প্রাবল্যে অনেকেই সমস্যার কথা জানিয়েছেন। কোন্নগরে গঙ্গার ধারে আবাসনের বাসিন্দা, ৮০ ছুঁইছুঁই শৈলেন পর্বতের অভিযোগ, ‘‘আশপাশে তো বটেই, গঙ্গার ও পারে, উত্তর ২৪ পরগনা থেকেও অবিরাম শব্দ এসেছে। ঘরে থাকার উপায় নেই।’’ তাঁর ক্ষোভ, ‘‘বাজির শব্দমাত্রা বাড়িয়ে রাজ্যের দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদ তথা সরকার বোধহয় এটাই চেয়েছিল!’’ পরিবেশকর্মীদের একাংশের দাবি, যেখানে আবাসন বেশি, বাজির দাপট সেখানে বেশি। বৈদ্যবাটীর বাসিন্দা অরূপ বসুর প্রশ্ন, ‘‘সন্ধ্যার পর থেকে যে সব বাজির শব্দ শোনা যাচ্ছে, সেগুলো কী ভাবে কোথায় বিক্রি হল?’’ চন্দননগরের একাংশে সকালেও বিক্ষিপ্ত ভাবে বাজি পুড়েছে বলে অভিযোগ।

পরিবেশকর্মী শুভ্রকান্তি সামন্তের অভিযোগ, তারকেশ্বর, ধনেখালির মতো গ্রামীণ এলাকাতেও শব্দবাজি ফেটেছে। তবে, বলাগড়ে সার্বিক ভাবে বাজির তাণ্ডব এ বার অনেকটাই কম ছিল। পুলিশের দাবি, দুর্গাপুজোর পর থেকেই নিষিদ্ধ বাজি বিক্রি ও ফাটানো বন্ধে কড়া নজরদারি, প্রচারে অনেকটাই কাজ হয়েছে।

বিকেল থেকে বিক্ষিপ্ত ভাবে বাজি ফেটেছে আরামবাগ শহর এবং মহকুমার নানা জায়গায়। সন্ধ্যায় শব্দ কিছুটা বাড়ে। পুলিশের দাবি, শব্দ হলেই নিষিদ্ধ রাসায়নিকের তৈরি বাজি, এমন নয়। সবুজ বাজির ভাল আমদানি হয়েছে। সেগুলিই ফেটেছে। তবে আরামবাগে অতীতের মতো মুহুর্মুহু কানফাটানো আওয়াজ গত বছর দুয়েক ধরেই নেই। এ বারেও তাই। কমেছে আতশবাজিও। অনেকে বলছেন, পুলিশের ধরপাকড়ের ভয়ে বাজি বিক্রির বহর কমেছে।

এসডিপিও (আরামবাগ) অভিষেক মণ্ডল বলেন, ‘‘নিষিদ্ধ বাজি রুখতে বছরভর অভিযান চলেছে। নিষেধাজ্ঞা কার্যকর করতে প্রচার চলেছে।’’ পান্ডুয়া ব্লকেও বাজির উৎপাত কম ছিল। পান্ডুয়ার মাগুরা গ্রামের এক প্রবীণ বাসিন্দা জানান, এ বার সেখানে শব্দবাজি না-ফাটায় নিস্তার মিলেছে। ছোটরা ফুলঝুরি এবং তুবড়ি জ্বালিয়েছে।

পরিবেশকর্মীদের অবশ্য অভিযোগ, অতিরিক্ত দূষণ ঘটায়, এমন বাজিই সর্বত্র পুড়েছে। পরিবেশকর্মী বিশ্বজিৎ মুখোপাধ্যায়ের অভিযোগ, ‘‘আতশবাজির বিষ ধোঁয়া বাতাস দূষিত করবে। রাস্তায় আলোর দিকে তাকিয়ে খালি চোখেই ধোঁয়ার স্তর মালুম হয়েছে। কয়েক ঘণ্টার বেহিসেবি আনন্দের মাসুল ফের দিতে হবে পরিবেশকে। মানুষকেও প্রত্যক্ষ ভাবে ভুগতে হবে।’’

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Firecrackers Kali Puja 2023

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy

এটি একটি প্রিন্ট আর্টিক্‌ল…

  • এমন অনেক খবরই এখন আপনার হাতের মুঠোয়

  • সঙ্গে রোজ পান আনন্দবাজার পত্রিকার নতুন ই-পেপার পড়ার সুযোগ

  • ই-পেপারের খবর এখন শুধুই ছবিতে নয়, টেক্সটেও

প্ল্যান সিলেক্ট করুন

মেয়াদ শেষে নতুন দামে আপনাকে নতুন করে গ্রাহক হতে হবে

Best Value
এক বছরে

৫১৪৮

১৯৯৯

এক বছর পূর্ণ হওয়ার পর আপনাকে আবার সাবস্ক্রিপশন কিনতে হবে। শর্তাবলী প্রযোজ্য।
*মান্থলি প্ল্যান সাপেক্ষে
এক মাসে

৪২৯

১৬৯

এক মাস পূর্ণ হওয়ার পর আপনাকে আবার সাবস্ক্রিপশন কিনতে হবে। শর্তাবলী প্রযোজ্য।