সাফসুতরো করা হয়েছে বাগনানের খাজনাবাহালা হাইমাদ্রাসা। নিজস্ব চিত্র।
রাজনৈতিক সভা, মিছিল, খেলা, পুজোর কেনাকাটা, ভিড় ঠেলে ঠাকুর দেখা—সবই তো হল। তা হলে স্কুল বন্ধ থাকবে কেন? এই প্রশ্ন তুলে শিক্ষকমহল এবং অভিভাবকদের একটা বড় অংশ। অবশেষে স্কুল খোলার সরকারি ঘোষণায় তাঁরা খুশি। কিন্তু প্রত্যন্ত এলাকার স্কুলগুলিতে পড়ুয়াদের সবাই আবার ফিরবে কি না, তা নিয়ে সংশয়ও রয়েছে। কারণ, স্কুল বন্ধ থাকায় এবং সংসারের আর্থিক অনটনে গরিব পরিবারের অনেক পড়ুয়া ইতিমধ্যে নানা ছোটখাটো কাজে যুক্ত হয়ে গিয়েছে।
নিখিল বঙ্গ শিক্ষক সমিতির (এবিটিএ) কর্মকর্তাদের বক্তব্য, দীর্ঘদিন ধরেই তাঁরা স্কুল খোলার দাবি জানাচ্ছিলেন। তাঁরা মনে করেন, স্কুলে এসেই পড়ুয়া প্রকৃত শিক্ষা পেতে পারে। ফোনের মাধ্যমে অনলাইনে এটা সম্ভব নয়। ওই সংগঠের এক কর্তা বলেন, ‘‘এ বার হয়তো দেখা যাবে, অনেকেই স্কুলছুট হয়েছে। নির্দিষ্ট বয়সের আগে স্কুলছাত্রীদের বিয়ে হয়ে গিয়েছে, এমন আশঙ্কাও থাকছে। এই পরিস্থিতিতে স্কুলে পঠনপাঠন চালু করা অত্যন্ত জরুরি ছিল। অবশেষে তা হচ্ছে। সব পড়ুয়াকে স্কুলে ফেরানোই চ্যালেঞ্জ।’’
এই সুখবরের মধ্যে অবশ্য চিন্তা থাকছে করোনা নিয়ে। কারণ, দুই জেলাতেই সংক্রমণ বাড়ছে। শিক্ষক-শিক্ষিকাদের একাংশ এ নিয়ে চিন্তিত। তাঁদের সংশয়, এখন যখন সংক্রমণ বাড়ছে, নতুন নতুন গণ্ডিবদ্ধ এলাকা ঘোষণা হচ্ছে, তখন এই সিদ্ধান্ত কতটা কার্যকর হবে!
এক শিক্ষিকের কথায়, ‘‘স্কুলপড়ুয়াদের বয়স আঠেরো বছরের নীচে। তাদের টিকা হয়নি। ফলে, বাবা-মায়েরা ছেলেমেয়েকে স্কুলে পাঠাতে কতটা চাইবেন, সেটাও প্রশ্নে। আমরা সবসময়েই চাই, স্কুল খুলুক। পড়াশোনার ক্ষতি হচ্ছে, এটা অস্বীকারের উপায় নেই। ফের স্কুলের রুটিনে পড়ুয়াদের বাঁধাই চ্যালেঞ্জ আমাদের।’’
প্রাথমিক স্কুলেও পাঠনপাঠন চালু করার দাবি উঠেছে। এ নিয়ে অবশ্য এখনও সরকারি সিদ্ধান্ত হয়নি। ওই বিভাগেও পঠনপাঠন চালু করার জন্য সরকারের কাছে আবেদন জানিয়েছেন প্রাথমিকের শিক্ষকদের একটা বড় অংশ। ওয়েস্টবেঙ্গল ট্রেন্ড প্রাইমারি টিচার্স অ্যাসোসিয়েশনের রাজ্য সভাপতি পিন্টু পাড়ুই বলেন, ‘‘স্কুলগুলি খুলছে এটা বড় খবর। সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানাচ্ছি। তবে দীর্ঘদিন প্রাথমিক স্কুলগুলি বন্ধ আছে। এখানে অনলাইনে পঠনপাঠনও সম্ভব নয়। প্রাথমিক স্কুলের ছাত্রছাত্রীদের বড় ক্ষতি হয়ে যাচ্ছে।’’ হুগলির একটি স্কুলের প্রধান শিক্ষক বলেন, ‘‘আমরা অনলাইনে পঠনপাঠন চালিয়ে দেখেছি নীচের শ্রেণিগুলিতে দু’তিন জনের বেশি যোগই দেয় না।’’
হুগলি জেলায় মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক স্কুলের সংখ্যা সাতশোরও বেশি। স্কুল খোলার সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছে শিক্ষক সংগঠনগুলি। পঞ্চম শ্রেণি থেকেও পঠনপাঠন চালুর দাবি উঠছে। স্কুল খোলায় খুশি হাওড়ার বাগনানের দেবস্মিতা ভট্টাচার্য। তিনি বলেন, ‘‘আমার মেয়ের সামনের বছর মাধ্যমিক। স্কুলে গিয়ে পড়াশোনাটা শুরু না হলে মুশকিল। এরা যথেষ্ট বড়। ফলে কোভিড-বিধি মেনে স্কুলে যেতে আশা করি, কোনও সমস্যা হবে না।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy