Advertisement
E-Paper

বাঁধ সারাই শুরু সেচ দফতরের

২০১৭ সালের বন্যার পর থেকে প্রতি বছর ভাঙনের কাজগুলো এখনও শেষ হয়নি।

প্রস্তুতি: চলছে বাঁধ সংস্কারের কাজ। আরামবাগের পল্লিশ্রী এলাকায়।

প্রস্তুতি: চলছে বাঁধ সংস্কারের কাজ। আরামবাগের পল্লিশ্রী এলাকায়। ছবি: সঞ্জীব ঘোষ।

পীযূষ নন্দী

শেষ আপডেট: ০৭ জুন ২০২১ ০৭:২০
Share
Save

এমনিতেই নদীবাঁধ মেরামত নিয়ে সেচ দফতরের বিরুদ্ধে দীর্ঘসূত্রিতার অভিযোগ অনেক। তার উপর বর্ষার মুখে জোড়াতালি দিয়ে বাঁধ সংস্কার নিয়েও অভিযোগ তোলেন আরামবাগের বাসিন্দারা। এই পরিস্থিতিতে আপাতত শহরের গায়ে দ্বারকেশ্বর নদের বাঁধে ১৬টি স্লুইস গেটে জং ধরা অংশ গ্রিজিং, অয়েলিং-সহ মেরামত করা হচ্ছে। আর সদরঘাট এবং গার্লস কলেজ সংলগ্ন দুটি পলকা বাঁধ সংস্কারের প্রস্তুতি চলছে।

মহকুমা সেচ দফতর সূত্রে জানা যায়, প্রতি বর্ষায় সাধারণত জুলাই মাসের শেষ থেকে অক্টোবর মাসের মাঝামাঝি পর্যন্ত দু থেকে তিন দফা পর্যন্ত বন্যা হয় আরামবাগ মহকুমায়। মহকুমার মধ্যে দিয়ে বয়ে গেছে মুণ্ডেশ্বরী নদী, দ্বারকেশ্বর, দামোদর, এবং রূপণারায়ণ নদ। প্রতি বছর ডিভিসির ছাড়া জলের তোড়ে বিপুল সংখ্যক নদী বাঁধ ভাঙে। সেগুলি সংস্কারে আর্থিক অনুমোদন মিললে দফায় দফায় সংস্কার হয়। গত ২০১৭ সালের বন্যার পর থেকে প্রতি বছর ভাঙনের কাজগুলো এখনও শেষ হয়নি।

চলতি বছরের গত ২৩ মে মহকুমাশাসক নৃপেন্দ্র সিংহ, বৈঠক ডেকে একটি যৌথ কমিটি গড়ে দিয়ে বিভিন্ন নদী বাঁধের দুর্বল এবং ভঙ্গুরপ্রবণ বাঁধ চিহ্নিতকরণ করার নির্দেশ দিয়েছেন। কমিটিতে রাখা হয়েছে সেচ দফতরের আধিকারিক, সংশ্লিষ্ট ব্লকের বিডিও, পুলিশ এবং বিদ্যুৎ দফতরের আধিকারিকদের। মহকুমাশাসক বলেন, “আগামী ১৫ জুন সেই রিপোর্ট জমা দিতে বলেছি। সেই রিপোর্ট খতিয়ে দেখে গুরুত্ব অনুযায়ী সংস্কারের কাজ হবে। এবং একইসঙ্গে দেখা হবে, গত বছরের চিহ্নিত করা ভাঙ্গনগুলির সংস্কার কাজ এখনও কটা বাকি আছে।”

মহকুমার বিভিন্ন ব্লক প্রশাসন সূত্রে জানা খবর, গত বছর যৌথ কমিটির পরিদর্শনে প্রায় ৯০টা দুর্বল এবং ভাঙা বাঁধ চিহ্নিত হয়। এগুলির মধ্যে খানাকুলের দুটি ব্লকেই মোট ৬৯টা দুর্বল এবং ভাঙা নদী বাঁধ। সেগুলির মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ ৮টি জায়গা সেচ দফতর থেকে মেরামত করা হলেও বাকি ৬১টা জায়গা অরক্ষিতই রয়ে গেছে। সেগুলো গত বর্ষায় কিছু জায়গায় ১০০ দিনের কাজে সংস্কার হলেও বৃষ্টির জলেই সেই ঝুড়ো মাটি উধাও।

আরামবগের বড়ডোঙ্গলের কমল সরকার, খানাকুলের নতিবপুরের শেখ রওসন কাজি, পুরশুড়ার ভাঙ্গামোড়ার বিমল বাইরী প্রমুখ ভুক্তভোগীদের অভিযোগ, “প্রতি বছর নিয়ম করে ঠিক বর্ষার মুখেই বাঁধ সংস্কারের তোড়জোড় চলে। বাঁধ টেকসই হয় না। অল্প স্রোতেই ফের ভেঙে যায়। সরকারের কোটি কোটি টাকাও জলে যায়। কিছু মানুষের পেট ভরে। আমাদের বানভাসি পরিস্থিতির বদল হয় না।’’

প্রতি বছর বর্ষার মুখে কাজ করা নিয়ে বরাবর বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলোরও অভিযোগ থাকে। সিপিএম ক্ষমতায় থাকাকালীন তৃণমূল অভিযোগ করে এসেছে। এখন তৃণমূল ক্ষমতায় আসার পর বিজেপি তেমনই অভিযোগ করছে। বিজেপির আরামাবাগ সাংগঠনিক সেল সভাপতি তথা পুরশুড়া বিধায়ক বিমান ঘোষের অভিযোগ, “সরকারি তহবিল নয়ছয় করতেই বর্ষার মুখে নদী বাঁধ সংস্কারের রেওয়াজ চলে আসছে। আমরা দাবি করেছি, বর্ষা বা ডিভিসি জল ছাড়ার আগে বাঁধ যাতে শক্তপোক্ত হয় তার জন্য নদী বাঁধ সংস্কারের কাজ মে মাসের মধ্যে শেষ করা হোক।” এ বিষয়ে তৃমূলের জেলা সভাপতি দিলীপ যাদবের জবাব, ‘‘নেত্রী তথা মুখ্যমন্ত্রী ইতিমধ্যেই বিষয়টা নিয়ে পদক্ষেপ করেছেন।”

প্রতি বছর বর্ষার মুখে কাজ শুরুর অভিযোগ নিয়ে জেলা সেচ দফতরের (নিম্ন দামোদর) এগজিকিউটিভ ইঞ্জিনিয়ার তপন পাল বলেন, “সারা বছরই কাজ হয়। কিছু কাজ আগে করা যায় না। বর্ষায় ক্ষয়ক্ষতিগুলোর অবস্থা বিবেচনা করে কাজ করি।” দীর্ঘসূত্রিতার অভিযোগ নিয়ে তাঁর বক্তব্য, “বড় কাজগুলো, যেমন ২ কোটি-৩ কোটি টাকার কাজগুলো আমরা প্রকল্প করে পাঠিয়ে দিই। যেমন যেমন অনুমোদন হয়, সেইমতোই কাজ হয়। লকডাউন, ভোট ইত্যাদি নানা কারণে গত বছরের পাঠানো প্রকল্পগুলোর একটাও অনুমোদন হয়নি।”

Irrigation department

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:

Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy

এটি একটি প্রিন্ট আর্টিক্‌ল…

  • এমন অনেক খবরই এখন আপনার হাতের মুঠোয়

  • সঙ্গে রোজ পান আনন্দবাজার পত্রিকার নতুন ই-পেপার পড়ার সুযোগ

  • ই-পেপারের খবর এখন শুধুই ছবিতে নয়, টেক্সটেও

প্ল্যান সিলেক্ট করুন

মেয়াদ শেষে নতুন দামে আপনাকে নতুন করে গ্রাহক হতে হবে

Best Value
এক বছরে

৫১৪৮

১৯৯৯

এক বছর পূর্ণ হওয়ার পর আপনাকে আবার সাবস্ক্রিপশন কিনতে হবে। শর্তাবলী প্রযোজ্য।
*মান্থলি প্ল্যান সাপেক্ষে
এক মাসে

৪২৯

১৬৯

এক মাস পূর্ণ হওয়ার পর আপনাকে আবার সাবস্ক্রিপশন কিনতে হবে। শর্তাবলী প্রযোজ্য।