ভোটের লাইনে মহিলারা। কৃষ্ণভাবিনী নারী শিক্ষামন্দিরে। নিজস্ব চিত্র।
অনুপাতে পুরুষ ভোটারের চেয়ে এ বার মহিলা ভোটার বেশি চন্দননগরে। বিষয়টি আনন্দ দিচ্ছে অনেক মহিলাকেই। কিন্তু, তাঁরা চাইছেন, সমাজে সার্বিক প্রতিনিধিত্ব বাড়ুক মহিলাদের। আরও বেশি দায়িত্ব ও ক্ষমতা তুলে দেওয়া হোক তাঁদের হাতে। উবে যাক লিঙ্গবৈষম্য।
শনিবার, পুরভোটের সকাল থেকে শহরের বিভিন্ন এলাকায় ঘুরে দেখা গেল, ভোট দিতে মহিলাদের উৎসাহ কম নয়। শাড়ি, সালোয়ার-জিন্সের পাশাপাশি বোরখা পরা মহিলারাও সকাল থেকে ভোটের লাইনে দাঁড়ালেন। কেউ ফ্ল্যাটের বাসিন্দা, কেউ বা বস্তিবাসী।
মহিলা ভোটারের সংখ্যাবৃদ্ধিতে খুশি ফটকগোড়ার বাসিন্দা মৌসুমি ঘোষ। তবে, তাঁর বক্তব্য, কর্মস্থল থেকে শুরু করে সব ক্ষেত্রেই মেয়েদের আরও বেশি দায়িত্ব ও ক্ষমতা দেওয়া প্রয়োজন। তাঁর কথায়, ‘‘সমাজের সব ক্ষেত্রে মেয়েদের অংশগ্রহণ বাড়ানো দরকার। না হলে, শুধু মুখে সমানাধিকারের কথা বলে লাভ নেই।’’
একই মত পোষণ করেন সঙ্গীত-শিক্ষিকা দেবযানী ঘোষ। তাঁর বক্তব্য, বর্তমান যুগে মেয়েরা অনেক বেশি করে বাইরে বেরোলেও, চাকরি করলেও সমানাধিকারের প্রশ্নে আরও অনেক পথ যাওয়া বাকি। ছোট থেকেই মেয়েদের অনেক ইচ্ছে চেপে রাখতে শিখতে হয় পরিবারের মধ্যেই। ফলে, মেয়েরা পুরোপুরি স্বাধীন হতে এখনও পারেননি বলে তিনি মনে করেন। তিনি বলেন, ‘‘আমি চাই পুরুষ আত্মীয়ের আড়ালে না থেকে নিজেদের নিজস্ব পরিচয় তৈরি হোক। তা হলেই ভোটারের সংখ্যায় এগিয়ে যাওয়া বা সমানাধিকারের আসল স্বাদ আক্ষরিক অর্থে মেয়েরা পাবে।’’
৬ নম্বর ওয়ার্ডের নির্দল প্রার্থী লিপি শর্মা একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা চালান। ছোটদের পড়ান। মহিলা ভোটারের সংখ্যাবৃদ্ধি তাঁর কাছে ‘সদর্থক’ বিষয়। তাঁর বক্তব্য, ‘‘সমাজের সব স্তরের মেয়েরা যাতে নিরুপদ্রবে রাস্তাঘাটে বেরোতে পারে, সেই সমাজব্যবস্থা আশা করি। বাড়ির পুরুষদের প্রভাব থেকে মুক্ত হয়ে মেয়েদের নিজস্ব চিন্তার প্রতিফলন ঘটুক। তা হলে সমাজের উপকারই হবে।’’
শহরের নানা প্রান্তে অনেক মহিলাই অবশ্য নিজের ‘অধিকার’ নিয়ে উদাসীন। তাঁরা জানেন, ভোট দিতে হয়, তাই দেওয়া। পুরসভা বা সরকারের কাছে কী প্রত্যাশা, এই প্রশ্নেও কথা সরে না।
পড়ন্ত বিকেলে চন্দননগর স্ট্র্যান্ডে দেখা হয় ষাটোর্ধ্ব সোনা পাসোয়ানের সঙ্গে। মহিলা পুরসভার অবসরপ্রাপ্ত সাফাইকর্মী। এখন অবশ্য অস্থায়ী ভাবে ওই কাজ করেন। বেশ কয়েক বছর আগে রাস্তা পরিষ্কারের সময় লক্ষাধিক টাকা কুড়িয়ে পেয়ে ফেরত দিয়েছিলেন। তাঁর খেদ, ‘‘খেটে খাই। কষ্টেসৃষ্টে দিন চলে যাচ্ছে। কাজের জায়গা থেকে এককালীন একটা টাকা পেলেও ভাল হত। তবে, না পেলেও চালাতে তো হবেই।’’
মনে লুকনো খেদ নিয়েও ভোট দিতে ভোলেননি ওই বৃদ্ধা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy