উলুবেড়িয়া নিমদিঘি বাজারের একটি আনাজের দোকানে ছবিটি তুলেছেন সুব্রত জানা।
কোনও আনাজই ছোঁয়ার জো নেই! ছ্যাঁকা দিচ্ছে ডিমও।
এক ইয়াসের ধাক্কায় দুই জেলার বাজার আগুন। সামান্য সজনে ডাঁটার দামও সেঞ্চুরি করে ফেলেছে। করোনা আবহে পুষ্টির জন্য গরিব মানুষের ভরসা ছিল ডিম। তার দামও অন্তত দু’টাকা করে বেড়ে গিয়েছে জোড়ায়। বাজার ভেদে কোথাও কোথাও আরও বেশি। মুরগির মাংসের দামও ঊর্ধ্বমুখী।
করোনা পরিস্থিতিতে পরিবহণ সমস্যা আছে ঠিকই। কিন্তু গত ২৬ মে ইয়াসের আগে-পরে বাজারদরের এই ফারাকটা সাধারণ মানুষকে চিন্তায় ফেলেছে। দাম যে দ্রুত কমবে, সেই আশার আলোও আপাতত দেখা যাচ্ছে না। চাষি এবং ব্যবসায়ীরা মানছেন, ওই বিপর্যয়ে আনাজের ক্ষতি হওয়ায় জোগানে টান পড়েছে। তারই প্রভাব পড়ছে বাজারে।
হুগলির সবচেয়ে বড় আনাজ বাজার বসে শেওড়াফুলিতে। সেখানকার ‘কাঁচা সব্জি বাজার ব্যবসায়ী সমিতি’র সম্পাদক সুকল্যাণ চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘ইয়াস এবং করোনা পর্বে গত এক সপ্তাহ আগেও আনাজের যা দাম ছিল, তার চেয়ে ১০-২০% করে বেড়েছে।” বাগনানের গোপালপুর গ্রামের চাষি সোমনাথ বেজ বলেন, ‘‘বৃষ্টিতে আমাদের এলাকায় ঢেঁড়শ, পটল, ঝিঙে এইসব গাছের বেশ ক্ষতি হয়েছে। আনাজের জোগান আছে। তবে খুবই অল্প।’’
ইয়াসের জেরে বৃষ্টি এবং কটালের জেরে জলোচ্ছ্বাসের কারণেই দুই জেলার আনাজ চাষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়। বুধবার বাগনানের বিভিন্ন খুচরো বাজারে পটল বিক্রি হয়েছে কেজিপ্রতি ৫০-৬০ টাকা দরে। ইয়াসের আগে সেই দাম ছিল ৩০-৪০ টাকা। এ দিন ঝিঙে বিক্রি হয়েছে ৬০ টাকা কেজি দরে। ইয়াসের আগে দাম ছিল ৩০-৪০ টাকা। দামবৃদ্ধির এই উদাহরণ প্রায় সব আনাজের ক্ষেত্রেই রয়েছে দুই জেলার বিভিন্ন বাজারে। ব্যতিক্রম শুধু আলু।
এক সপ্তাহ আগেও আরামবাগের খুচরো বাজারে ডিম বিক্রি হয়েছে ১০-১১ টাকা জোড়ায়। বুধবার সেই দাম ছিল ১৩ টাকা। এক কেজি মুরগির মাংসের দাম ১৬০-১৭০ টাকা থেকে পৌঁছে গিয়েছে ২০০-২২০ টাকায়।
ডিম-ব্যবসায়ী পার্থ সাঁতরা বলেন, ‘‘এ রাজ্যে চাহিদার তুলনায় ডিমের উৎপাদন কম। ফলে, ডিমের জন্য ভিন্ রাজ্যের উপরে নির্ভর করতে হয়। বর্তমান পরিস্থিতিতে গোটা দেশেই ডিমের চাহিদা বেড়েছে। তাই দামও কিছুটা বেড়েছে।’’ অনেকে ডিম-বিক্রেতা আবার দাবি করেছেন, পরিবহণ সমস্যার জন্য দাম বেড়েছে।
এই পরিস্থিতিতে কী করে হেঁশেল চলবে, ভেবে পাচ্ছেন না অনেকেই। বৈদ্যবাটী কাজিপাড়ার বাসিন্দা মধুমিতা চট্টোপাধ্যায়ের কথায়, ‘‘আনাজের দাম আগুন। ডিম-মাংসও তাই। সব কিছুই নাগালের বাইরে চলে যাচ্ছে। রাজ্য সরকার দামে একটু রাশ না টানলে নিম্নবিত্তরা যাবে কোথায়!’’ মূল্যবৃদ্ধি নিয়ন্ত্রণের দাবি তুলেছে ‘অল ইন্ডিয়া সিটিজেনস্ ফোরাম’ নামে একটি নাগরিক সংগঠনও।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy