Advertisement
০৬ নভেম্বর ২০২৪
CPI

WB Municipal election 2022: সিপিআই প্রার্থীর স্বামীকে রাস্তায় ফেলে মারধর

বেলা বাড়তেই ৩ নম্বর ওয়ার্ডে রমেশচন্দ্র উচ্চ বালিকা বিদ্যালয় এবং রেশন অফিসে ভোটগ্রহণ কেন্দ্রে তৃণমূল ব্যাপক ছাপ্পা দেয় বলে অভিযোগ।

শ্রীরামপুরে প্রহৃত সিপিআই প্রার্থীর স্বামী (বাঁ দিকে), তারকেশ্বর উচ্চ বালিকা বিদ্যালয়ের ২৬৮ নম্বর বুথে।

শ্রীরামপুরে প্রহৃত সিপিআই প্রার্থীর স্বামী (বাঁ দিকে), তারকেশ্বর উচ্চ বালিকা বিদ্যালয়ের ২৬৮ নম্বর বুথে। নিজস্ব চিত্র

প্রকাশ পাল
শ্রীরামপুর শেষ আপডেট: ২৮ ফেব্রুয়ারি ২০২২ ০৭:৫৬
Share: Save:

সকাল দেখে সারা দিনের আভাস বোঝা যায়নি শ্রীরামপুর পুরসভায়। বেলা যত গড়িয়েছে, এখানে ততই বেড়েছে ভোটের উত্তাপ। একের পর এক অভিযোগ ধেয়ে এসেছে প্রশাসনের কাছে। গোলমালের অভিযোগ পেয়ে পুলিশ গাড়ি ছুটিয়ে গিয়েও সর্বত্র বাগে আনতে পারেনি পরিস্থিতি।

বেলা বাড়তেই ৩ নম্বর ওয়ার্ডে রমেশচন্দ্র উচ্চ বালিকা বিদ্যালয় এবং রেশন অফিসে ভোটগ্রহণ কেন্দ্রে তৃণমূল ব্যাপক ছাপ্পা দেয় বলে অভিযোগ। বামেদের অভিযোগ, দুপুর পৌনে ৩টে নাগাদ রেশন অফিসে তৃণমূলের লোকেরা ছাপ্পা ভোট দিচ্ছিল। সিপিআই প্রার্থী মৌসুমি বসুর স্বামী দেবব্রত বসু সেই ছবি তুলতে গেলে তাঁকে রাস্তায় ফেলে বেধড়ক মারধর করা হয়। দেবব্রতের অভিযোগ, ‘‘তৃণমূলের মহিলারা রাস্তায় ফেলে উপর্যুপরি লাথি মেরেছে।’’ গোলমালের জেরে পরিস্থিতি এমন হয়, ওই ভোটকেন্দ্রের কোলাপসিবল গেট ভিতর থেকে বন্ধ করে দেন ভিতরে থাকা পুলিশকর্মীরা। পরে আরও পুলিশ এসে গেট খোলে। ফের ভোট চালু হয়। তবে বাইরে গোলমাল চলতে থাকে।

গত দু’বারের পুরভোটে এই ওয়ার্ডে জিতেছিলেন নির্দল প্রার্থী নিতাই গুহ। ওয়ার্ডটি মহিলা
সংরক্ষিত হওয়ায় এ বার তিনি অন্য প্রার্থী দাঁড় করান। নিতাইয়েরও অভিযোগ, তৃণমূল যথেচ্ছ ছাপ্পা দিয়েছে। তৃণমূল অভিযোগ মানেনি। দেবব্রতকে মারধরের অভিযোগ নিয়ে তৃণমূলের প্রার্থী অঙ্কিতা গোস্বামীর প্রতিক্রিয়া, ‘‘এটা সম্পূর্ণ নাটক। আমাদের কেউ কাউকে মারেনি।’’

৬ নম্বর ওয়ার্ডে শাসক-বিরোধী তরজায় মাঝেমধ্যেই এলাকা তেতে ওঠে। সিপিএম প্রার্থী মৌ সেনগুপ্ত বুথে ঢুকে ভোটারদের প্রভাবিত করছেন, এই অভিযোগ তুলে তৃণমূলের লোকজন হইচই জুড়ে দেন। বুথ লাগোয়া তারাপুকুর মোড়ে তা নিয়ে দু’পক্ষের বচসা হয়। গোলমাল বাড়তে থাকায় পুলিশ হস্তক্ষেপ করে। এই সময় পুলিশের সঙ্গে তৃণমূল কর্মী-সমর্থকদের বচসা হয়। তৃণমূল প্রার্থী পল্লবী ঘোষের সঙ্গে পুলিশের তর্কাতর্কি হয়। পরে স্থানীয় তৃণমূল বিধায়ক অরিন্দম গুঁইন এসে দলীয় কর্মীদের শান্ত করার চেষ্টা করেন। সিপিএম এখানে ছাপ্পা ভোটের অভিযোগ তুলেছে। অভিযোগ উড়িয়ে পল্লবীর দাবি, ‘‘বিজেপি এবং সিপিএম একজোট হয়ে শান্তিপূর্ণ ভোটের আবহ নষ্ট করেছে।’’ শেষবেলায় ১৯ নম্বর ওয়ার্ডে কংগ্রেস ছাপ্পা ভোটের অভিযোগ তুলেছে তৃণমূলের বিরুদ্ধে। তৃণমূল অভিযোগ অস্বীকার করেছে।

সিপিএমের অভিযোগ, ২৮ নম্বর ওয়ার্ডে তাঁদের পোলিং এজেন্ট প্রবাল করকে তৃণমূলের লোকেরা মারধর করে। গুরুতর জখম অবস্থায় তাঁকে হাসপাতালে ভর্তি করতে হয়। ১ নম্বর ওয়ার্ডের সিপিএম প্রার্থী অরবিন্দ ঘোষ এবং তাঁর ভাইকেও মারধরের অভিযোগ ওঠে শাসক দলের বিরুদ্ধে। তৃণমূল নেতা সন্তোষ সিংহ অভিযোগ মানেননি।

এ দিকে ২৫ নম্বর ওয়ার্ডে তৃণমূল এবং সিপিএম উভয় দলই পরস্পরের বিরুদ্ধে ছাপ্পার অভিযোগ তুলেছে। ভোটগ্রহণের পরে ইভিএমের গাড়ি আটকে দীর্ঘক্ষণ বিক্ষোভ দেখান সিপিএম প্রার্থী শর্মিষ্ঠা দাস এবং দলের কর্মীরা। পুলিশের ভূমিকা নিয়েও বিক্ষোভকারীরা প্রশ্ন তোলেন। সন্তোষের অভিযোগ, ‘‘ওই ওয়ার্ডের তিনটি বুথে সিপিএম প্রচুর ছাপ্পা দিয়েছে।’’ সিপিএম প্রার্থী ভারতী সেনের (বিদায়ী কাউন্সিলর) বক্তব্য, ‘‘এখনকার রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে সিপিএম ছাপ্পা ভোট দিয়েছে, এমন অভিযোগ হাস্যকর। ওরাই ছাপ্পা দিয়েছে।’’

অন্য বিষয়গুলি:

CPI WB assembly election
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE