মৃতা অনুশ্রী হাজরা (বাঁ দিকে)। ধৃত অনুশ্রীর স্বামী চন্দন মাঝি (বাঁ দিকে)। —নিজস্ব চিত্র।
ডোমজুড়ে যুবতীর রহস্যমৃত্যুর ঘটনায় তৃতীয় ব্যক্তির জড়িত থাকার সম্ভাবনা দেখছেন তদন্তকারীরা। মঙ্গলবার এক মহিলাকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে পুলিশ। ওই মহিলা মৃতা অনুশ্রী হাজরার ঘনিষ্ঠ বান্ধবী বলে খবর। পুলিশ সূত্রে খবর, প্রিয় বান্ধবীর মৃত্যুর খবর পেয়েও তাঁর কোনও খোঁজ নেননি ওই মহিলা। বরং রবিবার রাতে অনুশ্রীর মৃত্যুর পর থেকে ‘নিখোঁজ’ ছিলেন তিনি। এই সূত্র ধরে তদন্ত করছে পুলিশ। অন্য দিকে, অনুশ্রীর স্বামী চন্দন মঝিকে গ্রেফতার করা হয়েছে। মঙ্গলবার তাঁকে ৭ দিনের পুলিশি হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছে আদালত।
পুলিশ সূত্রে খবর, রবিবার বন্ধুর বাড়িতে যাওয়ার জন্য সাইকেল নিয়ে বাড়ি থেকে বার হন হাওড়ার ডোমজুড়ের সলপ-হাজরা মোড়ের বাসিন্দা অনুশ্রী। রাত ৮টা নাগাদ মায়ের সঙ্গে ফোনে কথা হয় তাঁর। জানান, বাড়ি ফিরছেন সাইকেল চালিয়ে। কিন্তু বাড়ি আর ফেরা হয়নি। পরে ঝালুয়ারবেড়ের একটি নির্জন এবং অন্ধকার রাস্তায় তাঁর দেহ মেলে। কাপড় দিয়ে বাঁধা ছিল তাঁর চোখ। ওই ঘটনার তদন্তে নেমে প্রথমে অনুশ্রীর স্বামীকে আটক করে পুলিশ। মৃতার বাপের বাড়ির দাবি, অনুশ্রীর নৃত্যশিল্পী হিসাবে বিভিন্ন অনুষ্ঠানে অংশ নেওয়া তাঁর স্বামীর পছন্দ ছিল না। শ্বশুরবাড়ি থেকেও আপত্তি ওঠে। এ নিয়ে মন কষাকষি হলে বিবাহবিচ্ছেদের সিদ্ধান্ত নেন অনুশ্রী। তিনি বাপের বাড়িতেই থাকতেন। একটি চাকরি করতেন অনুশ্রী। পাশাপাশি, ছোটদের নাচ শেখাতেন। বিবাহবিচ্ছেদের মামলা চলাকালীন অনুশ্রীর রহস্যমৃত্যুতে খুনের অভিযোগ তোলেন তাঁর বাপের বাড়ির লোকজন। তাঁদের অভিযোগের ভিত্তিতে চন্দনকে গ্রেফতার করা হয়।
ময়নাতদন্তের পর পুলিশ জানায় মাথায় গুলি করে অনুশ্রীকে খুন করা হয়। অনুশ্রীর বাপের বাড়ির অভিযোগ, তাদের জামাই চন্দনই এই খুন করেছেন। তদন্তে নেমে পুলিশের প্রাথমিক অনুমান, এই ঘটনায় পরিচিত আরও কেউ জড়িত রয়েছেন। যাঁর সঙ্গে মৃতার স্বামীর ঘনিষ্ঠতা ছিল। এই প্রেক্ষিতে এক জন মহিলার নাম উঠে আসছে। তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করছে পুলিশ। তদন্তকারীদের একটি সূত্রে খবর, ওই মহিলা মৃতার অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ ছিলেন।
উল্লেখ্য, অনুশ্রী এবং চন্দনের বিয়ে হয় বছর দেড়েক আগে। তার আগে থেকেই দু’জনের মধ্যে ঘনিষ্ঠতা ছিল। দুই পরিবারের সম্মতিতে চার হাত এক হয়। কিন্তু বিয়ের পর থেকে অনুশ্রীর সঙ্গে স্বামী এবং শ্বশুরবাড়ির লোকজনের মন কষাকষি শুরু হয় বলে দাবি পরিবারের। অনুশ্রীর বাপের বাড়ির লোকজন পুলিশকে জানিয়েছে, তাঁদের মেয়ে নাচতে ভালবাসতেন। সেটা স্বামী এবং শ্বশুরবাড়ির লোকেরাও জানতেন। কিন্তু বিয়ের পর থেকেই অনুষ্ঠানে নাচতে বাধা দেওয়া হত তাঁদের মেয়েকে। এমনকি, এ নিয়ে তাঁকে একাধিক বার মারধর করা হয়েছে। শ্বশুরবাড়ির অত্যাচার সহ্য করতে না পেরে মাস ছয়েক আগে বাপের বাড়িতে চলে আসেন তিনি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy