Advertisement
০৩ নভেম্বর ২০২৪
Howrah Municipaity

‘টাকার অভাবে’ জীবাণুনাশ করতে পারছে না হাওড়া পুরসভা

এ বার সোডিয়াম হাইপোক্লোরাইট পর্যাপ্ত পরিমাণে না থাকায় তা করা যাচ্ছে না। কেউ কোভিডে মারা গেলেও সেই বাড়িটি জীবাণুনাশের কাজ হচ্ছে না।

ফাইল চিত্র।

ফাইল চিত্র।

দেবাশিস দাশ
কলকাতা শেষ আপডেট: ২৮ এপ্রিল ২০২১ ০৫:৫৭
Share: Save:

হাওড়া পুরসভার ভাঁড়ারে পর্যাপ্ত পরিমাণ সোডিয়াম হাইপোক্লোরাইট নেই। যে কারণে শহরের বিভিন্ন জায়গায় বন্ধ হয়ে গিয়েছে জীবাণুনাশের কাজ। শুধুমাত্র শ্মশান আর কোভিড হাসপাতালগুলিতে ওই কাজ করেই দায় সারছে পুরসভা। সোডিয়াম হাইপোক্লোরাইট না থাকায় পুরসভার ভিতরেও জীবাণুনাশের কাজ নিয়মিত হচ্ছে না বলে অভিযোগ। এমনকি এ-ও অভিযোগ উঠেছে যে, যে সমস্ত এলাকায় কোভিডে একাধিক মৃত্যুর ঘটনা ঘটছে, সেখানেও গত বছরের মতো নিয়ম মেনে জীবাণুনাশের কাজ হচ্ছে না। পুর কর্তৃপক্ষের বক্তব্য, পুরসভার রাজস্ব আদায় সার্বিক ভাবে কমে যাওয়ার ফলে অর্থাভাব তৈরি রয়েছে। সেই কারণেই প্রয়োজন মতো সোডিয়াম হাইপোক্লোরাইট কেনা যাচ্ছে না। তবে শ্মশান ও হাসপাতালগুলিতে নিয়মিত ভাবেই জীবাণুনাশের কাজ চলছে।

রাজ্যে করোনায় মৃত্যুর নিরিখে হাওড়া দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে। সোমবারের সরকারি বুলেটিন অনুযায়ী, হাওড়ায় এখনও পর্যন্ত মৃত্যু হয়েছে ১০০২ জনের। এই মুহূর্তে অ্যাক্টিভ কেসের সংখ্যা প্রায় সাড়ে পাঁচ হাজার। মুখ্যসচিব নির্দেশ দিলেও এখনও পর্যন্ত কোনও সেফ হোম সেখানে চালু হয়নি। বালিটিকুরি ইএসআই হাসপাতালে শয্যা-সংখ্যা ৩০০ থেকে বাড়িয়ে ৬০০ করার কথা থাকলেও তা আজও হয়নি। হাওড়া জেলা হাসপাতাল, উলুবেড়িয়া জেলা হাসপাতাল ও দক্ষিণ হাওড়া স্টেট জেনারেল হাসপাতালে এখনও পর্যন্ত করোনা ওয়ার্ড তৈরি হয়নি। অন্য দিকে, হাওড়ার অধিকাংশ সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতালে শয্যা ভর্তি হয়ে যাওয়ায় কোথাও ভর্তি হতে পারছেন না রোগীরা।

এই অবস্থায় ঘন বসতিপূর্ণ হাওড়া শহরে নিয়মিত জীবাণুনাশের কাজ না হওয়ায় করোনা সংক্রমণ আরও মারাত্মক আকার নিতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন পুরসভার স্বাস্থ্য দফতরের অফিসারেরাই। তাঁদের বক্তব্য, গত বছর লকডাউনের সময়েও প্রায় প্রতিদিন হাওড়ার বিভিন্ন বাজার, মার্কেট কমপ্লেক্স ও ঘন বসতিপূর্ণ এলাকায় দমকলের সাহায্যে জীবাণুনাশের কাজ চালানো হয়েছিল। করোনায় কেউ মারা গেলে তাঁর বাড়িতেও জীবাণুনাশের কাজ হত। কিন্তু এ বার সোডিয়াম হাইপোক্লোরাইট পর্যাপ্ত পরিমাণে না থাকায় তা করা যাচ্ছে না। কেউ কোভিডে মারা গেলেও সেই বাড়িটি জীবাণুনাশের কাজ হচ্ছে না।

পুরসভার এক স্বাস্থ্যকর্তা বললেন, ‘‘আমরা বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি। তাঁরা সমস্যার দ্রুত সমাধানের আশ্বাস দিয়েছেন। তবে শিবপুর শ্মশানঘাট-সহ কবরস্থান ও বিভিন্ন সরকারি কোভিড হাসপাতালে নিয়মিত জীবাণুনাশের কাজ চলছে। আসলে একটিমাত্র গাড়ি থাকায় সমস্যা হচ্ছে।’’

হাওড়া পুরসভার অফিসার ও কর্মীরা জানিয়েছেন, গত ২০ তারিখ পুরসভার পক্ষ থেকে বিজ্ঞপ্তি জারি করে কয়েক জন পদস্থ কর্তাকে নোডাল অফিসার হিসেবে জীবাণুনাশ, করোনা পরীক্ষা, অ্যাম্বুল্যান্স ও শববাহী গাড়ির ব্যবস্থাপনার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। কিন্তু এখনও পর্যন্ত গোটা বিষয়টি খাতায়-কলমে থেকে যাওয়ায় কাজের কাজ কিছুই হয়নি।

পুরসভার এক পদস্থ অফিসার বললেন, ‘‘আমাদের অফিস নিয়মিত জীবাণুমুক্ত করা হচ্ছে না। বাইরে থেকে যাঁরা আসছেন, তাঁদেরও থার্মাল গান দিয়ে পরীক্ষা না করেই ভিতরে ঢুকতে দেওয়া হচ্ছে। এর ফলে পুরকর্মীদের মধ্যে সংক্রমণ ছড়ানোর আশঙ্কা বাড়ছে।’’

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE