দীর্ঘ দিন ধরে রাজ্যে একশো দিনের কাজ প্রকল্প বন্ধ। এই অবস্থায় হুগলিতে ওই প্রকল্পের কিছু বাছাই শ্রমিকের পূর্ণ কর্মসংস্থানের লক্ষ্যে প্রশিক্ষণ শুরু হতে চলেছে ১২ অগস্ট থেকে। একশো দিনের কাজ প্রকল্পের অধীন ‘উন্নতি’ প্রকল্পে মাশরুম চাষ, মুরগি বা ছাগল খামার তৈরি, দুধ উৎপাদন, মাছ, মৌমাছি বা রেশম চাষ, জৈব গ্যাসের প্লান্ট, দর্জির কাজ ইত্যাদির প্রশিক্ষণ চলবে বলে জেলা প্রশাসন জানিয়েছে।
প্রশাসন সূত্রের খবর, ‘উন্নতি’র উদ্দেশ্য, একশো দিনের কাজ প্রকল্পের উপরে নির্ভরশীলতা কমিয়ে শ্রমিকের উপযোগী অন্য পেশায় স্বনির্ভর এবং সুরক্ষিত করা। গত অর্থবর্ষে হুগলিতে ‘উন্নতি’ চালু হলেও প্রচারের অভাব ছিল। মাত্র কয়েক জন শ্রমিককে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছিল। এ বার বিশেষ প্রচার চালিয়ে সব পঞ্চায়েত এলাকা থেকে উপভোক্তা নির্বাচন শুরু করেছে সংশ্লিষ্ট
ব্লক প্রশাসন।
একশো দিনের কাজের প্রকল্পে জেলায় প্রায় ৮ লক্ষ জবকার্ডধারী আছেন। তবে সকলেই ওই প্রশিক্ষণ নিতে পারবেন না। জেলা প্রশাসনের এক আধিকারিক বলেন, “২০১৮ সাল পর্যন্ত যাঁরা একশো দিনের প্রকল্পে একশো দিনই কাজ সম্পূর্ণ করেছেন, তাঁদের মধ্যে ১৮-৪৫ বছর বয়সি ইচ্ছুক শ্রমিকেরাই নিরখচায় প্রশিক্ষণের সুযোগ এবং ভাতা পাবেন। এ বার জেলায় ২৫০ জনকে প্রশিক্ষণ দেওয়ার লক্ষ্যমাত্রা নেওয়া হয়েছে।’’
জেলা প্রশাসন জানিয়েছে, ১২ অগস্ট প্রথম দফায় ৪২ জনকে নিয়ে পান্ডুয়ায় প্রশিক্ষণ শুরু হবে, থাকবেন সংশ্লিষ্ট বিষয়ের বিশেষজ্ঞেরা। বিভিন্ন ব্লক প্রশাসন থেকে ইতিমধ্যে যে সব শ্রমিককে এই প্রকল্পের আওতায় আনা হবে। তাঁদের চিহ্নিত করা এবং তাঁরা কোন পেশায় আগ্রহী, সে বিষয়ে সমীক্ষার কাজ প্রায় শেষ।
ব্লক প্রশসানগুলি থেকে জানা গিয়েছে, প্রশিক্ষণের পরে উদ্যোগী উপভোক্তাদের চাহিদা বুঝে তহবিল মিলবে একশো দিনের কাজ প্রকল্পের সক্ষমতা তহবিল থেকে। এ ছাড়াও ‘দীনদয়াল উপাধ্যায় গ্রামীণ
কৌশল্যা যোজনায়’ যুবকদের কর্মসংস্থান প্রকল্পের আর্থিক সুযোগ-সুবিধাও মিলবে।
প্রকল্পটি নিয়ে আশাবাদী শ্রমিকদের অনেকেই। মুরগি খামারের জন্য প্রশিক্ষণে নাম নথিভুক্ত করা গোঘাটের মান্দারণ পঞ্চায়েতের শেখ রহিম আলি, অনুপ রায় জানিয়েছেন, মুরগি খামার করে স্বনির্ভর হতে ইচ্ছুক বলে নিরীক্ষক দলকে তাঁরা জানিয়েছেন। এ ভাবে স্থায়ী
রোজগার নিশ্চিত হবে বলেই তাঁদের আশা। গোঘাটের ইদলবাটী গ্রামের শুভদীপ ঘোষ, চণ্ডীপুরের আনন্দ পান মাশরুম চাষ করে স্বনির্ভর হওয়ার
স্বপ্ন বুনছেন।
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)