অর্চিতা বন্দ্যোপাধ্যায়। থ্যালাসেমিয়া আক্রান্ত মেধাবী ছাত্রী। নিজস্ব চিত্র।
উচ্চ মাধ্যমিকে ৪৩৮। কিন্তু কতটা শারীরিক যন্ত্রণার সঙ্গে যুঝতে হয়েছে জাঙ্গিপাড়ার রশিদপুর পঞ্চায়েতের আতড়া গ্রামের অর্চিতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে, পরীক্ষার ফলে সে কথা লেখা নেই।
অর্চিতা থ্যালাসেমিয়া আক্রান্ত। নিয়মিত হাসপাতালে যেতে হয়। পরিশ্রম বেশি হলে শরীর দেয় না। কাহিল শরীরেই বইয়ের পাতায় চোখ রাখেন তিনি।
গুটী উদয়চাঁদ বিদ্যামন্দিরের এই ছাত্রী এডুকেশনে পেয়েছে ৯৩। বাংলায় ৯১। ভূগোল এবং সংস্কৃতে ৯০। ইংরেজিতে ৭৪। তিনি চান এডুকেশনে উচ্চশিক্ষা করতে।
ন’মাস বয়সে হুপিং কাশি হওয়ার সময় পরীক্ষায় ধরা পড়ে শরীরে থ্যালাসেমিয়ার বাসা। অর্চিতা জানান, নির্দিষ্ট হারে শরীরে রক্ত তৈরি হয় না। আয়রনের পরিমাণ বেশি, এমন খাবার খাওয়া নিষেধ। নিম্নবিত্ত পরিবারের সমস্যাকেও হারিয়েছেন এই তরুণী। বাবা অনুপম বন্দ্যোপাধ্যায় কলকাতায় একটি সংস্থায় কাজ করতেন। মেয়ের অসুস্থতার কারণে নিয়মিত যেতে না পারায় সেই কাজ ছাড়তে হয়েছিল। এখন কাছেই ইমারতি দোকানে হিসাবরক্ষকের কাজ করেন। রোজগার খুব বেশি নয়। তিনি জানান, মেয়েকে নিয়মিত চুঁচুড়া ইমামবাড়া হাসপাতালে ‘চেক আপ’ করাতে নিয়ে যেতে হয়। রক্ত নেন বেলুড় শ্রমজীবী হাসপাতালে। যাতায়াতেই কয়েক ঘণ্টা।
অনুপম জানান, অর্চিতা মাসে এক হাজার টাকা ভাতা পান। এ ছাড়াও বৃত্তি পাওয়ায় পড়াশোনায় সুবিধা হয়েছিল। অনুপমের কথায়, ‘‘মেয়ের মানসিক জোর খুব। ওর রেজ়াল্টে আমরাখুব খুশি। উচ্চশিক্ষার ক্ষেত্রে বৃত্তি পেলে ভাল, না হলে কষ্টেসৃষ্টে চালানোর চেষ্টা করব।’’
অর্চিতার স্বপ্ন, প্রতিষ্ঠিত হয়ে নিজের মতো থ্যালাসেমিয়া আক্রান্তদের পাশে দাঁড়াবেন। ওষুধ-সহ প্রয়োজনীয় অন্য বিষয়ের পাশাপাশি মানসিক শক্তি জোগানোর চেষ্টা করবেন।
থ্যালাসেমিয়া আক্রান্তদের সাহায্যার্থে কাজ করা সংগঠন রমেশচন্দ্র দেব স্মৃতি রক্ষা সমিতির সঙ্গে অর্চিতা যুক্ত। সংগঠনের কর্ণধার নান্টু দেব বলেন, ‘‘যে শারীরিক এবং মানসিক যন্ত্রণা অতিক্রম করে অর্চিতা এত ভাল ফল করলেন, তার জন্য কোনও প্রশংসাই যথেষ্ট নয়।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy