Advertisement
০৫ নভেম্বর ২০২৪
Light Hub

Light Hub: দোকান বিক্রি হয়নি, ফাঁকাই পড়ে ‘আলো হাব’

আলোকশিল্পীরা জানান, ওই হাবে দোকানঘর পেতে তাঁদের এককালীন নগদ টাকা দিতে হবে।

বন্ধ চন্দননগরের আলো হাব (বাঁ দিকে)। পেশা বদলে এখন মুদির দোকান আলোকশিল্পীর। নিজস্ব চিত্র

বন্ধ চন্দননগরের আলো হাব (বাঁ দিকে)। পেশা বদলে এখন মুদির দোকান আলোকশিল্পীর। নিজস্ব চিত্র

কেদারনাথ ঘোষ
চন্দননগর শেষ আপডেট: ২৭ জুলাই ২০২১ ০৭:৩৯
Share: Save:

‘আলোর শহর’ চন্দননগরের আলোকশিল্পীদের জন্য রাজ্য সরকার প্রতিশ্রুতিমতো ‘আলো হাব’ তৈরি করে দিয়েছে। স্টেশন সংলগ্ন কেএমডিএ পার্কে তৈরি ওই প্রকল্পের উদ্বোধন হয় পাঁচ মাস আগে। কিন্তু একটি দোকানও বিক্রি হয়নি। ফলে, ওই প্রকল্পের ভবিষ্যৎ নিয়ে প্রশ্ন উঠছে।

আলোকশিল্পীরা জানান, ওই হাবে দোকানঘর পেতে তাঁদের এককালীন নগদ টাকা দিতে হবে। সেইসঙ্গে মাসিক রক্ষণাবেক্ষণ খরচও চাওয়া হয়েছে সরকারি তরফে। কিন্তু করোনা পরিস্থিতিতে তাঁরা আর্থিক সঙ্কটে ভুগছেন। এই মুহূর্তে টাকা দিয়ে ঘর নেওয়া তাঁদের পক্ষে অসম্ভব। এ নিয়ে বিধায়ক ইন্দ্রনীল সেনের সঙ্গে বৈঠকেও বসেছেন তাঁরা। তাঁদের অনুরোধে বিধায়ক টাকার পরিমাণ কিছুটা কমিয়েছেনও। তা সত্ত্বেও এখনও ওখানে দোকান নেওয়ার পরিস্থিতি নেই।

চন্দননগরের পুর কমিশনার স্বপন কুণ্ডু বলেন, ‘‘পুরসভার তরফে ওই প্রকল্পের যাবতীয় কাজ শেষ হয়েছে। উদ্বোধন হলেও করোনা পরিস্থিতির জন্য প্রকল্পটি চালু হয়নি। প্রকল্পটি চালু হলে আলোকশিল্পী ও তাঁদের নতুন প্রজন্ম উপকৃত হবে।’’ বিধায়ক বলেন, ‘‘সংশ্লিষ্ট দফতরকে অনুরোধ করেছি আলোকশিল্পীদের সমস্যা নিয়ে দ্রুত বৈঠকে বসতে। আমি আশাবাদী, আলোচনার মাধ্যমে সমস্যা মিটিয়ে ফেলা যাবে।’’ মহকুমাশাসক (চন্দননগর) অয়ন দত্তগুপ্ত বলেন, ‘‘খোঁজখবর নেওয়া হয়েছে। সংশ্লিষ্ট দফতরের সঙ্গে কথা বলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’’

এ শহরের আলো-শিল্পের সঙ্গে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ ভাবে প্রায় দশ হাজার মানুষ যুক্ত। ২০১৭ সালের জুনে হুগলির প্রশাসনিক বৈঠকে এসে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আলোকশিল্পীদের জন্য ‘আলো-হাব’ তৈরির কথা ঘোষণা করেন। ২০১৯ সালে কারিগরি শিক্ষা দফতরের উদ্যোগে ১৫ কোটি টাকায় কাজ শুরু হয়। কেএমডিএ পার্কে প্রায় দু’বিঘা জমিতে জেলা পূর্ত দফতর তিনতলা ভবন তৈরি করে। চলতি বছরের ৮ ফেব্রুয়ারি মুখ্যমন্ত্রী কলকাতা থেকে ভার্চুয়ালি প্রকল্পটির উদ্বোধন করেন। হাবে ৬০টি দোকান রয়েছে। রয়েছে প্রশিক্ষণ ও কর্মশালার ব্যবস্থা। আলোকশিল্পীদের কাজ প্রদর্শনের সুযোগও রয়েছে।

কিন্তু এত কিছুর পরেও শিল্পীরা উৎসাহিত হচ্ছেন না। করোনা আবহে অনেকে পেশাও বদলে ফেলেছেন। শহরের বাগবাজার থেকে বিদ্যালঙ্কার পর্যন্ত রাস্তার পাশে অনেক আলোর দোকানই মুদিখানা, মুরগির মাংস আর আনাজের দোকানে বদলে গিয়েছে।

বিদ্যালঙ্কার কলুপুকুর রোডের আলোকশিল্পী মনোজ সাহা বলেন, ‘‘৩৬ বছর ধরে আলোর কাজের সঙ্গে যুক্ত ছিলাম। এখন পেট চালাতে মুদিখানার দোকান করেছি। কবে যে পুরনো পেশায় ফিরব, জানি না।’’ অন্য এক আলোকশিল্পীর কথায়, ‘‘এখনও কোনও পুজোর আলোর বায়না পাইনি। সকলেই সরকারি সিদ্ধান্তের জন্য অপেক্ষায় রয়েছে। কী ভাবে সংসার চালাব, ভেবে উঠতেই পারিনি।’’

অন্য বিষয়গুলি:

Chandannagar Light Light Hub
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE