চাষ না হওয়া জমি। সিঙ্গুরে। ফাইল ছবি।
আরও একটা বর্ষার মরসুম চলছে। কিন্তু সিঙ্গুরের সেই জমির একাংশ এখনও চাষযোগ্য হয়নি। ফলে, সংশ্লিষ্ট জমির মালিকেরা এ বারও চাষ করতে পারেননি। তাই অবিলম্বে ওই জমি চাষযোগ্য করার আবেদন নিয়ে ফের সরকারের দ্বারস্থ হওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছেন এক সময়ে জমি আন্দোলনে যুক্ত চাষিদের একাংশ।
ওই চাষিদের মধ্যে সিঙ্গুরের জমি আন্দোলনের পরিচিত মুখ দুধকুমার ধাড়া বলেন, ‘‘ওই জমিকে চাষযোগ্য করার থমকে যাওয়া কাজ ফের শুরু করা হোক। এ নিয়ে ঘরোয়া ভাবে আমরা ইতিমধ্যে পাঁচটি বৈঠক করেছি দলমত নির্বিশেষে। বৈঠকে সবাই সহমত হয়েছেন যে, ওই জমির একাংশে আর চাষ সম্ভব নয়। তাই আমাদের দাবি, সেই অংশে কোনও শিল্পোদ্যোগী শিল্প করুন। বাকি অংশে চাষ হোক। সেই জমিই চাষযোগ্য করে দিক সরকার। এই আবেদন আমরা রাজ্য সরকারের কাছে শীঘ্রই পৌঁছে দেব। প্রস্তুতি চলছে।’’ জেলা প্রশাসনের এক কর্তা অবশ্য বলেন, ‘‘সিঙ্গুরের ওই জমিতে যে কিছু সমস্যা আছে তা দূর করতে আগেই কাজ শুরু হয়েছিল। প্রথমে বর্ষা ও পরে নির্বাচনের কারণে তা বিলম্বিত হয়। সেই কাজের পরিকল্পনা এখনও রয়েছে। কারও মাধ্যমে কোনও পরামর্শ এলে ভেবে দেখার সুযোগ সব সময়েই রয়েছে।’’
টাটাদের গাড়ি কারখানার জন্য বাম আমলে রাজ্য সরকার সিঙ্গুরের প্রায় হাজার একর জমি অধিগ্রহণ করেছিল। কিন্তু সেই অধিগ্রহণ ‘অবৈধ’ ঘোষণা করে ২০১৬-তে সুপ্রিম কোর্ট জমি ফিরিয়ে দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছিল রাজ্য সরকারকে। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ওই জমি চাষযোগ্য করে ফেরত দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। সেই মতো কাজও শুরু হয়েছিল। কিন্তু অর্ধেকের বেশি জমিতে এখনও চাষ করা যাচ্ছে না বলে চাষিদের একাংশের দাবি। এই দাবি অবশ্য জেলা প্রশাসন মানছে না। প্রশাসনের দাবি, অল্প পরিমাণ জমিই চাষের আওতার বাইরে রয়েছে।
চাষিরা জানান, গোপালনগর, খাসেরভেড়ি এবং সিংহেরভেড়ির ওই জমিতেই মূল কারখানা তৈরি হয়েছিল। ফলে, ওই অংশের জমিই সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়। রাজ্য সরকার জমির হাল ফেরাতে নেমে ওই নির্মাণ ডিনামাইট দিয়ে গুঁড়িয়ে দেয়। সেখনে মাটিতে কোদাল দিলেই উঠে আসছে কংক্রিট। চাষিদের বক্তব্য, ওই অংশে আর চাষ সম্ভব নয়। তবে, তার আশপাশের জমি চাষযোগ্য করে দিলে চাষ করা যাবে। সিঙ্গুরের বিধায়ক তথা মন্ত্রী বেচারাম মান্না বলেন, ‘‘যাঁরা আবেদন করবেন বলেছেন, নিশ্চিত ভাবে প্রশাসনের তরফে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’’
চাষিরা ওই জমি চাষযোগ্য করার দাবি, প্রথম তুলছেন, এমন নয়। আগেও তুলেছেন। সেই সময় সেচ-সহ বিভিন্ন দফতরের আধিকারিকেরা প্রকল্প এলাকায় গিয়ে জমির পুরনো নিকাশির মানচিত্র কাজে লাগিয়েই জমি ফের চাষযোগ্য করার পক্ষে রায় দেন। সেই কাজে নিকাশি নালার জন্য ১২টি কালভার্ট তৈরির কথা হয়েছিল। কিন্তু কয়েকটি কালভার্ট তৈরি ছাড়া সেই কাজ আর এগোয়নি বলে চাষিদের খেদ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy