খানাকুলের ঘোষপুর পঞ্চায়েত এলাকায় ভোমরা খাল। নিজস্ব চিত্র।
একদিন জোরালো বৃষ্টি হলেই খাল উপচে মাঠ ভাসিয়ে দেয়। তাতে ফসল নষ্ট হয় আরামবাগ মহকুমার ৫টি পঞ্চায়েত এলাকার প্রায় ৭০০ একর জমির। বন্যা হলে তো কথাই নেই! ‘ভোমরা’ নামে ওই খালটি সংস্কারের দাবি তুলছেন আরামবাগ ব্লকের গৌরহাটি ২, সালেপুর ১ ও ২, খানাকুল ১ ব্লকের ঘোষপুর এবং ঠাকুরানিচক পঞ্চায়েত এলাকার ভুক্তভোগী কৃষিজীবী মানুষ।
খালটি প্রায় ২০ কিলোমিটার লম্বা। বন্যা মোকাবিলায় আরামবাগ মাস্টার প্ল্যানের প্রথম পর্যায়ে শেষ সাড়ে ৪ কিলোমিটার সংস্কার হয়েছে। কিন্তু বাকি সাড়ে ১৫ কিলোমিটার অংশে হাত পড়েনি। তাতেই বিপত্তি। খানাকুলের ঘোষপুর পঞ্চায়েতের পিলখাঁ গ্রামের চাষি অভিজিৎ বাগের ক্ষোভ, ‘‘খালটি সংস্কারের আমাদের দীর্ঘদিনের দাবি আজও মেটেনি। গত ৩০ মে, একদিনের বৃষ্টিতেই মজা খাল উপচে শুধু পিলখাঁ মৌজারই প্রায় ২৫০ বিঘা জমির বাদাম জলে ডুবে নষ্ট হয়েছে।’’ তাঁর আড়াই বিঘা বাদাম চাষের মধ্যে একটু উঁচুতে থাকা ১০ কাঠা জমি বাঁচাতে পেরেছেন বলে জানান।
খালের জল না বেরোনোয় বাদাম এবং তিল নষ্টের অভিযোগ সালেপুরে ১ পঞ্চায়েতের রামনগরের বিমল মণ্ডল, গৌরহাটি ২ পঞ্চায়েত ডহরকুন্ডুর স্বপন বাগ, খানাকুলের ঠাকুরানিচকের শেখ ইসমাইল প্রমুখেরও। কৃষকেরা জানান, আরামবাগ শহর, মায়াপুর ২ এবং মাধবপুর পঞ্চায়েত এলাকার মাঠে জমা বৃষ্টির জল সালেপুর ১ পঞ্চায়েতের কোলেপুকুরে এসে ভোমরা খাল বেয়ে আলু, বাদাম, তিল নষ্ট করে। আমন ধানের চারা ডুবেও ক্ষতি হয়। খালটির পূর্ণাঙ্গ সংস্কারের দাবি তুলেছেন তাঁরা।
চাষিদের দাবি এবং অভিযোগের সারবত্তা স্বীকার করে হুগলি জেলা সেচ দফতরের এক আধিকারিক জানান, অরোরা খালে মেশার মুখে ভোমরা খালের সাড়ে ৪ কিলোমিটার অংশ সংস্কার করা হয়েছে আরামবাগ মাস্টার প্ল্যানের প্রথম পর্যায়ে। আবার ১৬ কিলোমিটার দীর্ঘ অরোরা খালের প্রথম অংশের চার কিলোমিটার সংস্কার করা হয়েছে। এ বার দ্বিতীয় পর্যায়ে অরোরা খালের বাকি থাকা ১২ কিলোমিটার অংশ সংস্কারের ছাড়পত্র মিলেছে। তিনি বলেন, ‘‘কাজটি হলে ভোমরা খালের নিকাশি নিয়ে সমস্যা থাকবে না বলেই আমাদের আশা। তারপরেও সমস্যা থেকে গেলে ভোমরা খালের বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নজরে এনে সমাধানের পরিকল্পনা করা হবে।’’
আরামবাগ মহকুমার সমস্ত জমা জল বিভিন্ন খাল বেয়ে দক্ষিণে, মহকুমার শেষ প্রান্ত খানাকুলে অরোরো খাল হয়ে রূপনারায়ণ নদে পড়ে। আরামবাগ মাস্টার প্ল্যানের প্রথম দফায় অরোরা খালের উপরের দিকে ৪ কিলোমিটার সংস্কার হলেও শেষ ১২ কিমি ওই প্রকল্পে ধরা ছিল না। তার ফলেই মহকুমার সার্বিক জল নিকাশি নিয়ে সমস্যা রয়ে গিয়েছে। অরোরা খালের পূর্ণাঙ্গ সংস্কার হলে সমস্যা অনেকটাই মিটবে বলে সংশ্লিষ্ট সব পক্ষের আশা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy