ভুল করে পাকিস্তানের সীমানায় ঢুকে পড়েছিলেন তিনি। পাকিস্তান রেঞ্জার্স তাঁকে বন্দি করে। তাঁর মুক্তির অপেক্ষায় গোটা দেশ। হুগলির রিষড়ায় বিএসএফ জওয়ান পূর্ণমকুমার সাউয়ের বাড়ির এলাকাতেও একই প্রার্থনা।
ছ’বছর আগে বায়ুসেনার উইং কমান্ডার অভিনন্দন বর্তমান পাক সেনার হাতে আটক হয়েছিলেন। দু’দেশের আলোচনার মাধ্যমে তিনি মুক্তি পান। তাঁর মতোই আলোচনা সাপেক্ষে বন্দিদশা থেকে মুক্ত হয়ে দ্রুত দেশে ফিরুন পূর্ণম, চায় তাঁর পরিবার।
ছোট থেকে আর পাঁচটা ছেলের মতোই বেড়ে ওঠা পূর্ণমের। কাছেই লেনিন মাঠে চলত দৌড়ঝাঁপ, ফুটবল খেলা। স্বপ্ন ছিল, সেনাবাহিনীতে কাজ করবেন। রিষড়া বিদ্যাপীঠ থেকে উচ্চ মাধ্যমিক পাশ করার পরেই সীমান্ত রক্ষী বাহিনীতে চাকরি পেয়ে যান। মাঝে পেরিয়ে গিয়েছে প্রায় ১৭ বছর। পরিচিতেরা বলছেন, পাড়ার মিশুকে ছেলে ভালয় ভালয় ফিরে আসুন, এটাই তাঁরা চান।
বাবা ভোলানাথ সাউ জানান, রাতে তিনি স্বপ্ন দেখেন, পূর্ণম পাকিস্তান থেকে মুক্তি পেয়েছেন। শুধু তাই নয়, সুস্থ শরীরে বাড়িও ফিরে এসেছেন। বাবার কথায়, ‘‘তার পরেই ঘুম ভেঙে গেল। কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে অনুরোধ, ছেলে যেন সুরক্ষিত ভাবে দেশে ফেরে, সেই ব্যবস্থা করা হোক।’’ তিনি জানান, ছেলের অপেক্ষায় তাঁর স্ত্রী দেবন্তী কেঁদে কেঁদে সারা। পুত্রবধূ রজনীরও শরীর ভাল নেই। নাতি আরব তৃতীয় শ্রেণিতে পড়ে স্থানীয় ইংরেজি মাধ্যম বিদ্যালয়ে। বাবার ফেরার অপেক্ষায় সে স্কুলে যেতে চাইছে না।
রজনী বলেন, ‘‘কেন্দ্রের কাছে হাতজোড় করে অনুরোধ, কিছু একটা সমাধান সূত্র বের করুক।’’ তাঁর সংযোজন, ‘‘এখন পরিস্থিতি ঠিক নেই। বুঝতে পারছি না, স্বামীকে কেন গ্রেফতার করা হল। ভুল করেহয়তো সীমান্ত পেরিয়েছে। কিন্তু এমন যাওয়া-আসা তো লেগেই থাকে! মনে হচ্ছে কাশ্মীরের ঘটনার কিছু একটা প্রভাব পড়ছে।’’
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)