এখানেই পোড়ানো হবে আতশবাজি। নিজস্ব চিত্র।
চার দশকের রীতিতে ছেদ ফেলেছিল করোনা অতিমারি। গত দু’বছর হুগলির গুপ্তিপাড়ায় জগদ্ধাত্রী পুজোর বিসর্জনে আতশবাজি প্রদর্শনী হয়নি। ওই সময় থেকে শব্দবাজির পাশাপাশি আতশবাজির ক্ষেত্রেও নানা বিধিনিষেধ আরোপ করে আদালত। ফলে, গুপ্তিপাড়ায় এ বার আতশবাজি প্রদর্শনী হবে কি না, তা নিয়ে জল্পনা ছিল। জানা গিয়েছে, ওই প্রদর্শনী হবে। পোড়ানো হবে শুধু ‘সবুজ বাজি’, এমনই দাবি উদ্যোক্তাদের।
গুপ্তিপাড়ায় জগদ্ধাত্রী পুজোর সংখ্যা কুড়ির বেশি। অন্যান্য বার ৭ থেকে ১০টি পুজো কমিটি প্রদর্শনীতে যোগ দেয়। এ বার সেই সংখ্যা অনেকটাই কমেছে। তিনটি কমিটি ওই প্রদর্শনীতে যোগ দেবে বলে জানা গিয়েছে। ওই তিন কমিটির কর্মকর্তাদের দাবি, নিষিদ্ধ আতশবাজি নয়, আদালত নির্দেশিত ‘সবুজ বাজি’ পোড়ানো হবে।
হুগলি গ্রামীণ জেলা পুলিশের এক আধিকারিক জানান, কোনও অবস্থাতেই যাতে নিষিদ্ধ বাজি না পোড়ে, তা দেখা হবে। ‘সবুজ বাজি’র ক্ষেত্রে নির্দিষ্ট ভাবে প্রশাসনের অনুমতি নিতে হবে।
জগদ্ধাত্রী পুজোর দশমীতে বিভিন্ন কমিটির প্রতিমা শোভাযাত্রা করে রথ সড়কে আনা হয়। রথ সড়ক ময়দানে পেল্লাই মাচা বেঁধে আতশবাজি পোড়ানো হয় ওই সব পুজো কমিটির তরফে। বহু মানুষ দেখতে আসেন। জানা গিয়েছে, এ বার প্রদর্শনীতে বিন্ধ্যবাসিনী, তেলিপাড়া কাঁঠালেশ্বরী এবং ষষ্ঠীতলা শিবমন্দির পুজো কমিটি যোগ দেবে। বিন্ধ্যবাসিনী পুজো সমিতির সম্পাদক তারক নাথ বলেন, ‘‘সরকারি নির্দেশ মেনেই সবুজ বাজি পোড়ানো হবে। কলকাতা থেকে ওই বাজি আনা হবে।’’ তাঁরা ৭০ হাজার টাকার বাজি কিনবেন বলে তারক জানান। অন্য দুই পুজো কমিটির কর্তারাও জানিয়েছেন, ‘সবুজ বাজি’ বাদে অন্য কোনও বাজি পোড়ানো হবে না। দুই কমিটিরই বাজির বাজেট ২৫ হাজার টাকা করে। রাত ৮টা থেকে ১০টা পর্যন্ত প্রদর্শনী চলবে। গুপ্তিপাড়া-২ পঞ্চায়েতের উপপ্রধান শেখ আলম বলেন, ‘‘সরকারি নিয়ম মেনে শুধুমাত্র সবুজ বাজি পোড়ানো যাবে।’’
বাংলার বারোয়ারি পুজোর ক্ষেত্রে গুপ্তিপাড়ার বিশেষ জায়গা রয়েছে। এখানকার বিন্ধ্যবাসিনী জগদ্ধাত্রী বাংলার প্রথম বারোয়ারি পুজো বলে পরিচিত। আজও সেই পুজো হয়ে আসছে। দশমীতে আতশবাজির কারিকুরি শেষ হলে গঙ্গার ঘাটে প্রতিমা বিসর্জন দেওয়া হয়। প্রথমে ভাসান দেওয়া হয় দেবী বিন্ধ্যবাসিনীকে। তার পরে অন্য প্রতিমা। এলাকার প্রবীণ বাসিন্দাদের একাংশের বক্তব্য, আগে বৈদ্যুতিক আলোর রমরমা ছিল না। বাজির আলোয় প্রতিমা এগিয়ে যেত নিরঞ্জনে।
স্থানীয় লোকজনের অভিজ্ঞতা বলছে, প্রদর্শনীতে একের পর এক আতশবাজি রকমারি ফুলঝুরি ছড়িয়ে দেয় আকাশে। আকাশ ধোঁয়ায় ঢেকে যায়। দূষণ ছড়ায়। এতদিন আতশবাজির পাশাপাশি শব্দবাজিও ফেটেছে যথেষ্ট। উদ্যোক্তাদের দাবি, এ বার নিষিদ্ধ কোনও বাজিই থাকবে না। জগদ্ধাত্রী পুজো আয়োজনের সঙ্গে যুক্ত এক কর্মকর্তা বলেন, ‘‘প্রশাসনের প্রস্তুতি বৈঠকেই সিদ্ধান্ত হয়েছে, সবুজ বাজি পোড়ানো যেতে পারে। তবে, তাও অবশ্যই প্রশাসনের অনুমতিসাপেক্ষে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy