—প্রতীকী চিত্র।
ডাক্তারির সর্বভারতীয় প্রবেশিকা পরীক্ষার (নিট) পরে এ বার অনিয়মের অভিযোগ ইউজিসি-নেট-এও। কলেজে অধ্যাপনা বা পিএইচডি-র জন্য প্রয়োজনীয় নেট পরীক্ষা বাতিলের ঘোষণা করেছে পরীক্ষা নিয়ামক সংস্থা ন্যাশনাল টেস্টিং এজেন্সি। পরপর এ ভাবে পরীক্ষা বাতিল হওয়ায় হতাশায় হাওড়া ও হুগলির পরীক্ষার্থীরা। অধিকাংশ পরীক্ষার্থীরা নতুন পরীক্ষার জন্য প্রস্তুত হচ্ছেন বটে। কিন্তু সেই পরীক্ষাও ‘দুর্নীতির পাঁক’-এ পড়বে কি না, তা নিয়ে সন্দেহে প্রায় সকলে।
হাওড়ার পরীক্ষার্থীরা জানান, রাজ্যে শিক্ষকতার চাকরিতে নিয়োগ কার্যত বন্ধ। এই অবস্থায় উচ্চ শিক্ষিতদের সামনে বড় ভরসাস্থল হল নেট। এই পরীক্ষার স্বচ্ছতা নিয়ে সংশয়ের অবকাশ ছিল না। এই পরীক্ষায় সাফল্য পেলে কলেজে পড়ানো এবং গবেষণার জগতে পা রাখার সুযোগ পেতেন উচ্চ শিক্ষিতেরা। সেই নেট পরীক্ষা বাতিলের সিদ্ধান্ত যে উচ্চ শিক্ষিতদের কাছে আত্মবিশ্বাসে কিছুটা হলেও যে চিড় ধরিয়েছে তা অকপটে জানিয়ে দিলেন অনেকেই।
উলুবেড়িয়ার বাসিন্দা এক তরুণী জানান, এ বারে নেট দিয়েছিলেন। তাঁর আসন পড়েছিল আলমপুরের একটি বেসরকারি স্কুলে। প্রস্তুতি নিয়েই পরীক্ষায় বসেছিলেন তিনি। তাঁর কথায়, ‘‘এর আগেও একাধিকবার নেটে বসেছিলাম। উত্তীর্ণ না হলেও হতাশ হইনি। কারণ জানতাম, একদিন না একদিন সফল হব।’’ কিন্তু পরীক্ষা বাতিলের সিদ্ধান্তের কথা জেনে তাঁর প্রতিক্রিয়া, ‘‘বাতিল হয়ে যাওয়া পরীক্ষায় ফের বসতে তো হবেই। কিন্তু নেটের মান নিয়ে সংশয় কিছুতেই যাচ্ছে না।’’
বাউড়িয়ার এক যুবক জানান, ২০১৯ সালে নেট উত্তীর্ণ হয়েছিলেন। কিন্তু ফল ভাল না হওয়ায় গবেষণা বা অধ্যাপনার সুযোগ পাননি। ভাল ফলের আশায় নেট দিয়েই চলেছেন। এ বছর তাঁর প্রস্তুতি ছিল বেশ ভাল। তাঁরও আসন পড়েছিল আলমপুরের একটি বেসরকারি স্কুলে। পরীক্ষা বাতিলের সিদ্ধান্ত নিয়ে তিনি বলেন, ‘‘সব কিছু এলোমেলো হয়ে গেল। নেটের মতো পরীক্ষাতেও যদি প্রশ্ন ফাঁস হয় আমরা যাব কোথায়? খুব খারাপ লাগছে।’’
হুগলির পরীক্ষার্থীদের গলাতেও একই সুর। দীর্ঘ প্রস্তুতি, বড় অঙ্কের টাকা দিয়ে ফর্ম ফিল আপের পরেও নেটে অস্বচ্ছতার অভিযোগ ওঠায় স্তম্ভিত পরীক্ষার্থীরা৷ আগামী দিনে হয়তো আবারও নতুন করে প্রস্তুতি নিয়ে পরীক্ষায় বসবেন সকলেই, কিন্তু সেখানেও এই পরীক্ষা বাতিলের আশঙ্কা থেকেই যাবে বলেও
তাঁদের দাবি।
হরিপালের এক তরুণীর কেন্দ্র ছিল রিষড়ায়। তাঁর কথায়, ‘‘এত কষ্ট সব জলে গেল। এই নষ্ট সময়ের দাম কে দেবে? তাছাড়া নেট-এর মতো এত গুরুত্বপূর্ণ পরীক্ষাগুলিতে অনিয়মের ফাঁক রাখাই বা হবে কেন?
শিক্ষার ক্ষেত্রে এমন ছিনিমিনি খেলা চলছে কেন?’’
হতাশ শুধু পরীক্ষার্থীরাই নন, হতাশার সুর শিক্ষকদের গলাতেও। গোঘাটের বেঙ্গাই অঘোরকামিনী মহাবিদ্যালয়ের অধ্যক্ষ পরমার্থ ঘোষ বলেন, ‘‘এত উচ্চস্তরের পরীক্ষা!। এই পরীক্ষা শেষে অধ্যাপক তৈরি হবেন। সেখানে এমন অনিয়ম কাঙ্ক্ষিত নয়। এই জাতীয় পরীক্ষা পরিচালনার ক্ষেত্রে ‘ন্যাশনাল টেস্টিং এজেন্সি’ কে অনেক সংযত এবং সাবধান হতে হবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy