Advertisement
১৯ নভেম্বর ২০২৪
আরামবাগে বামেদের ‘সাফল্যে’ চর্চা
CPM

ধর্মঘটে মিশ্র প্রভাব দুই জেলায়

হুগলির আরামবাগ মহকুমায় এক সময় বামেরা বন্‌ধ ডাকলে রাস্তাঘাট শুনশান থাকত। তৃণমূল জমানায় কার্যত সেই ছবিই এ দিন দেখা গেল এখানে। এই নিয়ে রাজনৈতিক মহলে চর্চা শুরু হয়েছে।

সিঙ্গুরে বামেদের মিছিল। ছবি: দীপঙ্কর দে।

সিঙ্গুরে বামেদের মিছিল। ছবি: দীপঙ্কর দে।

নিজস্ব প্রতিবেদন
চুঁচুড়া-উলুবেড়িয়া শেষ আপডেট: ১৩ ফেব্রুয়ারি ২০২১ ০৬:১৭
Share: Save:

শুক্রবার বামেদের ডাকা ১২ ঘণ্টার ধর্মঘটে হাওড়া এবং হুগলিতে মিশ্র প্রভাব পড়েছে। বামেদের সঙ্গে শামিল হয়েছিল কংগ্রেসও। বিভিন্ন জায়গায় পথ অবরোধ হয়। পুলিশের অতি তৎপরতায় কোথাও বেশিক্ষণ তা স্থায়ী হয়নি।

হুগলির আরামবাগ মহকুমায় এক সময় বামেরা বন্‌ধ ডাকলে রাস্তাঘাট শুনশান থাকত। তৃণমূল জমানায় কার্যত সেই ছবিই এ দিন দেখা গেল এখানে। এই নিয়ে রাজনৈতিক মহলে চর্চা শুরু হয়েছে। বন্‌ধ সফল করতে সকালে ধর্মঘটীরা রাস্তায় নামেন। সকাল প্রায় ১১টা পর্যন্ত প্রায় সব দোকানপাট বন্ধ ছিল। পরে আরামবাগ, গোঘাট, খানাকুল, পুরশুড়া— সর্বত্রই তৃণমূল রাস্তায় নেমে কিছু দোকানপাট খুলিয়ে দেয় বলে অভিযোগ। তাতেও মহকুমার বিস্তীর্ণ এলাকায় রাস্তাঘাট বিকেল পর্যন্ত কার্যত শুনশানই ছিল। সকালে আরামবাগ শহরের নানা জায়গায়, গোঘাটে দু’টি রাজ্য সড়কে, পুরশুড়ায় আরামবাগ-তারকেশ্বর রোডে অবরোধ হয়।

এই জেলায় বাস সে ভাবে চোখে পড়েনি। দূরপাল্লার বাসমালিক (হুগলি ইন্টার রিজিয়ন) সংগঠনের সম্পাদক গৌতম ধোলে বলেন, ‘‘যাত্রী না থাকায় লোকসানের কথা ভেবেই বাস চলেনি। আরামবাগ থেকে তারকেশ্বর পর্যন্ত কিছু বাস চলেছে।’’ একই কারণে আরামবাগ-বর্ধমান রাস্তাতেও কম বাস চলেছে বলে জানান বাসমালিক সংগঠনের সম্পাদক শান্তনু গুপ্ত।

পান্ডুয়ায় বাম-কংগ্রেস মিলিত ভাবে সকাল ৮টা থেকে প্রায় দু’ঘণ্টা ট্রেন অবরোধ করে। তাতে হাওড়া-বর্ধমান মেন শাখায় ট্রেন চলাচল ব্যহত হয়। সাধারণ যাত্রী থেকে পরীক্ষার্থীরা সমস্যায় পড়েন। স্থানীয় সিপিএম বিধায়ক আমজাদ হোসেন অবরোধে নেতৃত্ব দেন। চাঁপদানি, বৈদ্যবাটী, শেওড়াফুলিতে বন্‌ধের প্রভাব তেমন পড়েনি। জেলার বিভিন্ন জায়গায় জিটি রোড, অহল্যাবাই রোড, জাঙ্গিপাড়া-শ্রীরামপুর রাস্তা অবরোধ করেন বন্‌ধ সমর্থকরা। ডানকুনি হাউজিং মোড়ে টায়ার জ্বালিয়ে দুর্গাপুর এক্সপ্রেসওয়ে অবরোধ করা হয়।‌ সিঙ্গুরে অধিকাংশ দোকানপাট বন্ধ ছিল।

হুগলি শিল্পাঞ্চল মোটের উপরে স্বাভাবিক ছিল। শহরাঞ্চলে অটো-টোটো চলেছে। চুঁচুড়ার কামারপাড়ার দেশবন্ধু স্কুলের সামনে কিছু বনধ্ সমর্থক পিকেটিং করেন। পুলিশ গিয়ে তাঁদের সরিয়ে দিলে পড়ুয়ারা স্কুলে ঢোকে। চকবাজারে ডাকঘরের গেট বন্ধ করে দলীয় পতাকা লাগিয়ে দেন বন্‌ধ সমর্থকরা। তার ফলে ডাকঘরে ঢুকতে না পেরে গ্রাহকরা ফিরে যান। বালির মোড়ে একটি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কে বন্‌ধ সমর্থকরা গ্রাহকদের বাধা দিলে দু’পক্ষের মধ্যে বচসা হয়। পুলিশ পরিস্থিতি সামলায়।

হাওড়ার গ্রামীণ এলাকায় বাগনান, উলুবেড়িয়া, বাউড়িয়া, শ্যামপুর, আমতা প্রভৃতি জায়গায় বেশিরভাগ দোকান খোলা ছিল। দক্ষিণ-পূর্ব রেলের হাওড়া-খড়্গপুর শাখায় ট্রেন চলাচল ছিল স্বাভাবিক। বেসরকারি বাস, অটো, ছোট গাড়ি বিক্ষিপ্তভাবে চলেছে। উলুবেড়িয়া শিল্পাঞ্চলে পাঁচটি চটকলের মধ্যে তিনটিতে উৎপাদন বন্ধ ছিল। অন্য দু’টি চলেছে।

বাগনান, উলুবেড়িয়া প্রভৃতি জায়গায় বাম-কংগ্রেস যৌথভাবে মুম্বই রোড অবরোধ করে। তবে কোথাও অবরোধ দশ মিনিটের বেশি স্থায়ী হয়নি। বাগনানে সকাল সাড়ে ৯টা নাগাদ মুম্বই রোড অবরোধ করতে আসেন বাম-কংগ্রেসের নেতা-কর্মীরা। তাঁদের পুলিশ জানায়, এই রাস্তা দিয়ে কিছুক্ষণের মধ্যেই যাবেন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়। তিনি চলে গেলে যেন অবরোধ করা হয়। পুলিশের অনুরোধ মেনে তাঁরা অপেক্ষা করতে থাকেন। প্রায় পৌনে এক ঘণ্টা পরে পার্থবাবু সেখান দিয়ে যান। তারপরে অবরোধ শুরু হয়। তবে, পুলিশের হস্তক্ষেপে ৭ মিনিটের মধ্যেই অবরোধ তুলে নিতে হয়। অবরোধে হাজির ছিলেন বাগনানের প্রাক্তন সিপিএম বিধায়ক আক্কেল খান এবং আমতার কংগ্রেস বিধায়ক অসিত মিত্র। পুলিশের ভূমিকায় ক্ষোভ প্রকাশ করেন অসিতবাবু। উলুবেড়িয়ায় একটি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কে হামলা চালানোর অভিযোগ ওঠে বন্‌ধ সমর্থকদের বিরুদ্ধে।

অন্য বিষয়গুলি:

strike CPM
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy