Advertisement
২২ ডিসেম্বর ২০২৪
Durga Puja 2023

গঙ্গায় নয়, হোস পাইপের জলে এ বার ‘বিসর্জন’ শ্রীরামপুরেও

নেতাজি মোড়ের সভাপতি পিন্টু নাগ শ্রীরামপুরের পুর-পারিষদ (জঞ্জাল)। পুরসভার স্যানিটারি ইনস্পেক্টর অনুজ বন্দ্যোপাধ্যায়ও এই পুজোয় যুক্ত।

প্রতিমার মাটি ধুইয়ে দিচ্ছেন পুর-পারিষদ পিন্টু নাগ ও পুরপ্রধান। নিজস্ব চিত্র

প্রতিমার মাটি ধুইয়ে দিচ্ছেন পুর-পারিষদ পিন্টু নাগ ও পুরপ্রধান। নিজস্ব চিত্র Stock Photographer

প্রকাশ পাল
শ্রীরামপুর শেষ আপডেট: ২৬ অক্টোবর ২০২৩ ০৮:৫০
Share: Save:

দশমীর সন্ধ্যা। গঙ্গার ঘাটে প্রতিমার সারি। কোনও প্রতিমাকে জলে নামানো হয়েছে। কোনও প্রতিমা পাড়ে অপেক্ষায়। সেই ভিড়ে গা ভাসায়নি শ্রীরামপুরের ২৭ নম্বর ওয়ার্ডের নেতাজি মোড় সর্বজনীন। এখানকার পুজোকর্তারা স্থির করেছিলেন, প্রতিমা জলে ফেলে গঙ্গা দূষণের কারণ হবেন না। মণ্ডপেই হোস পাইপের সাহায্যে জল দিয়ে ধুয়ে ফেলা হল প্রতিমার মাটি। প্রতিমার পোশাক, অস্ত্রশস্ত্র-সহ অন্যান্য সামগ্রী পাঠানো হবে বর্জ্য প্রতিস্থাপন প্রকল্পে।

গত কয়েক বছর কোন্নগরে এই ভাবে বেশ কিছু প্রতিমা ‘বিসর্জন’ হয়েছে। শ্রীরামপুরে এ বারেই প্রথম। গঙ্গাদূষণ রোধের এই চেষ্টাকে সাধুবাদ জানাচ্ছেন পরিবেশকর্মী থেকে বহু সাধারণ মানুষ।

বছর ছযেক ধরে কোন্নগরের হাতিরকুলে লোকনাথ ঘাটে গঙ্গাপারে দূষণহীন বিসর্জনের ব্যবস্থা করে আসছেন পুর কর্তৃপক্ষ। সেখানে কিছুটা জায়গায় গর্ত খুঁড়ে প্রথমে ঝামা বিছানো হয়। পাথুরে ইট, চুন ব্লিচিং পাউডার, বালি ফেলে একাধিক স্তর করা হয়। শেষ ধাপে ইট সাজানো হয়। এখানে প্রতিমা রেখে হোস পাইপের মাধ্যমে গঙ্গার জল দিয়ে প্রতিমা গলিয়ে ফেলা হয়। মাটি ধোওয়া জ‌ল ওই স্তরের মধ্য দিয়ে শোধিত হয়ে গঙ্গায় মেশে। কাঠামো যায় কুমোরবাড়িতে। ফু‌ল-বেলপাতা, সাজসজ্জা, অস্ত্রশস্ত্র কঠিন বর্জ্য প্রতিস্থাপন প্রকল্পে। পুরপ্রধান স্বপন দাস জানান, এ ভাবে ১৬টি প্রতিমা বিসর্জন দেওয়া হয়েছে এ বছর। সব মিলিয়ে (জনা ৫০ শ্রমিক, হাইড্রলিক যন্ত্র ইত্যাদি) খরচ হয়েছে ২ লক্ষ টাকার মতো। পুরসভাই খরচ মেটাচ্ছে।

নেতাজি মোড়ের সভাপতি পিন্টু নাগ শ্রীরামপুরের পুর-পারিষদ (জঞ্জাল)। পুরসভার স্যানিটারি ইনস্পেক্টর অনুজ বন্দ্যোপাধ্যায়ও এই পুজোয় যুক্ত। পিন্টু জানান, এ বার অষ্টমীর সন্ধ্যায় তাঁরা ওই সিদ্ধান্ত নেন। পরিকল্পনা রয়েছে, আগামী বছর থেকে গঙ্গার ধারে এই ব্যবস্থা করা হবে আগ্রহী পুজো কমিটিগুলিকে নিয়ে। গঙ্গা থেকে জল তুলেই প্রতিমার মাটি গলানো হবে। মাটি ধোওয়া জল শোধন করে গঙ্গায় ফেলা হবে। পুরপ্রধান গিরিধারী সাহাও নেতাজি মোড়ে হোস পাইপ হাতে এই কাজে সামিল হয়েছিলেন। পুরসভার ব্যবস্থাপনাতেই নামমাত্র খরচে এই প্রতিমাও ধুয়ে ফেলা হয়েছে বলে পিন্টু জানান। পুরপ্রধান বলেন, ‘‘গঙ্গাকে দূষণ থেকে বাঁচাতে প্রত্যেক পুজো কমিটিকে বলব, তারা যাতে এই কাজে সামিল হন। বিশেষজ্ঞদের সঙ্গেও কথা বলব।’’

পরিবেশকর্মী বিশ্বজিৎ মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘প্রতিমার রং গঙ্গায় মিশে দূষণ ছড়ায়। মাছ-সহ জলজ প্রাণীর ক্ষতি হয়। জলজ বাস্তুতন্ত্র নষ্ট হয়। শ্রীরামপুরের ওই পুজো কমিটিকে তাদের শহর মডেল করুক। সর্বত্র দূষণহীন ভাসানের ব্যবস্থা হোক। যারা সরকারি অনুদান পাচ্ছে, সবাইকে এর আওতায় আনা হোক।’’ একই বক্তব্য স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন যুক্তিমন কলা ও বিজ্ঞান কেন্দ্রের সম্পাদক জয়ন্তকুমার পাঁজার।

পিন্টু জানান, প্রতিমার মাটি গলানোর আগে শোভাযাত্রা সহকারে গঙ্গায় ঘট ভাসান দেওয়া হয়।

অন্য বিষয়গুলি:

Serampore
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy