উদ্ধার: নেতিয়ে পড়েছে বালিহাঁসগুলি। নিজস্ব চিত্র
ওড়ার ক্ষমতা হারিয়ে আচমকা শ’য়ে শ’য়ে বালিহাঁস অসুস্থ হয়ে পড়ছে বলাগড়ের সোমরা-১ পঞ্চায়েত এলাকায়। কোনও রকমে এলাকার পুকুরে এসে আশ্রয় নিয়েছে তারা। বাগে পেয়ে ইতিমধ্যেই গ্রামবাসীদের অনেকে প্রচুর পাখি ধরে নিয়ে গিয়েছেন মাংসের লোভে। বিক্রি করা হয় বলেও অভিযোগ। খবর পেয়ে বন দফতর এবং পাখিপ্রেমীরা অসুস্থ পাখিদের উদ্ধারে নেমেছেন। ওই এলাকায় বালিহাঁসের আস্তানা দীর্ঘদিনের। মূলত, গঙ্গার চরেথাকে তারা।
আচমকা কী কারণে অত পাখি অসুস্থ হয়ে পড়ল, বন দফতরের আধিকারিকরা জানাতে পারেননি। তাঁরা জানিয়েছেন, প্রত্যেকটিরই ডানায় ক্ষত রয়েছে। কয়েকটি পাখিকে বেলগাছিয়ায় পশু হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে চিকিৎসা এবং অসুস্থতার কারণ নির্ধারণের জন্য। এ ছাড়াও, ওই এলাকার জলাশয়ের জল-সহ সংশ্লিষ্ট কয়েকটি জিনিসের নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষায় পাঠানো হয়েছে।
দফতরের এক আধিকারিক বলেন, ‘‘অসুস্থতার কারণ বোঝা গেলেই, আর কোনও পাখির তা যাতে না হয়, তার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া যাবে।’’
স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, মঙ্গলবার থেকে প্রচুর বালিহাঁস সোমরা-১ পঞ্চায়েতের পাইগাছি-সহ আশপাশের গ্রামের পুকুরে আশ্রয় নিতে শুরু করে। স্থানীয় কোরলা এলাকার বাসিন্দা, পাখিপ্রেমী আশিস সাঁতরা খবর পেয়ে বুধবার সকালে সেখানে গিয়ে জানতে পারেন, প্রচুর পাখি গ্রামবাসীরা ধরে নিয়ে গিয়েছেন। সেই পালা তখনও চলছে। বিষয়টি তিনি সমাজমাধ্যমে পোস্ট করেন। বন দফতরের কর্মী, স্থানীয় পঞ্চায়েতের লোক, বাঁশবেড়িয়ার একটি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের সদস্যেরা পৌঁছন। কিছু পাখিকে উদ্ধার করে একটি বাড়িতে খাঁচায় রাখা হয়। কেউ যাতে পাখি না-ধরেন এবং না-মারেন, তা নিয়ে প্রচার চালানো হয়।
বৃহস্পতিবারেও বন দফতরের আধিকারিক, কর্মী, ওই পাখিপ্রেমীরা এলাকায় যান। বাড়ি বাড়ি তল্লাশি চালিয়ে অনেক পাখি উদ্ধার করা হয়। সেগুলিকে এবং খাঁচায় থাকা পাখিগুলিকে একটি বড় পুকুরে রাখা হয়। মানুষকে সচেতন করতে এ দিনও প্রচার চলে। রানা মান্না নামে এক পাখিপ্রেমীর কথায়, ‘‘অনেক পাখি মানুষের হাতে মারা পড়েছে। আশা করব, বাকিদের বাঁচানো যাবে। কী কারণে ওরা অসুস্থ হল, জানা জরুরি।’’
আশিসরা জানান, পাখিগুলি চেষ্টা করেও উড়তে পারছে না। ডানা থেকে পালক খসে পড়ছে। রোদ উঠলে জলেও বেশিক্ষণ থাকতে পারছে না। ছায়ায় চলে যাচ্ছে। উড়তে না-পারায় পুকুরের পাশে, রাস্তায় হাঁটার সময় সহজেই মানুষের নাগালে চলে আসছিল তারা। লাঠি, জাল, গুলতি দিয়ে সহজেই কাবু করে ফেলা হচ্ছিল। এ দিন অনেক বাড়িতেই হাঁস-মুরগির খাঁচায় ৪-৫টি বা তারও বেশি বালিহাঁস মেলে। তবে, সচেতনতা প্রচারে কাজ হয়েছে বলে তাঁরা মনে করছেন। অসুস্থ পাখিগুলিকে কেউ যাতে বিরক্ত না করেন, স্থানীয় বাসিন্দারা সে দিকে লক্ষ্য রাখবেন। অপেক্ষা, পাখিগুলির সুস্থ হওয়ার।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy