প্রতীকী ছবি।
নাবালিক বিয়ে আটকানো বা সচেতনতা বৃদ্ধি যাঁদের কাজের মধ্যে পড়ে, তাঁদেরই একজন দুই ছেলের বিয়ে দিয়েছেন দুই নাবালিকার সঙ্গে!
এমনই খবর পেয়ে বলাগড়ের বাঁকুলিয়া-ধোবাপাড়া পঞ্চায়েতের এক সদস্যার বাড়ি থেকে তাঁর দুই নাবালিকা পুত্রবধূকে উদ্ধার করে হোমে পাঠানো হল প্রশাসনিক ব্যবস্থায়। ওই সদস্যার ছোট ছেলেরও বিয়ের বয়স হয়নি বলে জানা গিয়েছে।
আঠেরো বছরের কম বয়সে মেয়েদের এবং ২১ বছরের নীচে ছেলেদের বিয়ে দেওয়া নিষিদ্ধ। নাবালিকা বিয়ে আটকাতে কন্যাশ্রী, রূপশ্রীর মতো প্রকল্প রয়েছে। তবুও নাবালিকা বিয়ের ঘটনা ঘটছেই। নাবালিকা বিয়ে আটকাতে জনপ্রতিনিধিদের ভূমিকা রয়েছে। কিন্তু এ নিয়ে তাঁরা যথেষ্ট ওয়াকিবহাল কি না, তাঁদের সচেতন করতে প্রশাসনেরই বা কী ভূমিকা, বলাগড়ের এই ঘটনায় এমন প্রশ্ন উঠছে।
প্রশাসন সূত্রের দাবি, নির্দিষ্ট কর্মসূচির মাধ্যমে পঞ্চায়েত সদস্যদের এ নিয়ে সচেতন করা হয়। পঞ্চায়েতের গ্রাম, স্বাস্থ্য ও পুষ্টি বিষয়ক কমিটিতে পঞ্চায়েত সদস্য থাকেন। তাঁদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়। তাতে বিয়ের বয়স, নিরাপদ মাতৃত্বের বিষয়গুলি থাকে। পঞ্চায়েত দফতরের নির্দেশে প্রতি মাসের চতুর্থ রবিবার পঞ্চায়েতে বৈঠকে প্রধান-সহ অন্য সদস্য, কর্মচারী, স্বাস্থ্যকর্মী, অঙ্গনওয়াড়ি কর্মীরা থাকেন। সেখানে এলাকাভিত্তিক বিয়ের সংখ্যা, সন্তান জন্ম, টিকার বিষয়ে রিপোর্ট তৈরি হয়। বলাগড়ের ঘটনাটির ব্যাপারে খোঁজ নেওয়া হবে বলে মহকুমাশাসক (সদর) সৈকত গঙ্গোপাধ্যায় জানান।
প্রশাসন সূত্রের খবর, ওই পঞ্চায়েত সদস্যার বড় ছেলের বিয়ে এক নাবালিকার সঙ্গে হয়েছে, এই খবর পেয়ে গত বৃহস্পতিবার বিডিও দফতর, চাইল্ড লাইন এবং পুলিশের আধিকারিক ওই বাড়িতে যান। দেখা যায়, ছোট ছেলেরও বিয়ে হয়েছে। বড় ছেলে হোটেলে কাজ করেন। ছোট ছেলে রংমিস্ত্রি।
ওই বাড়িতে গিয়ে প্রশাসনের প্রতিনিধিরা দেখেন, ছোট বউ উঠোনে কাজ করছে। বড় বউ ঘরে প্লাস্টিকের ফুল তৈরির কাজ করছে শাশুড়ির সঙ্গে। দুই নাবালিকা বধূকে সেখান থেকে উদ্ধার করে চাইল্ড ওয়েলফেয়ার কমিটির (সিডব্লিউসি) নির্দেশে হোমে পাঠানো হয়।
বড় বউয়ের বাড়ি পাশের গ্রামে। বছর দেড়েক আগে মন্দিরে তার বিয়ে হয়। মেয়েটির বয়স এখন ১৭ বছর। সে সপ্তম শ্রেণি পর্যন্ত পড়াশোনা করেছে। চাইল্ড লাইনের আধিকারিকদের মেয়েটি জানিয়েছে, দেখাশোনা করে বিয়ে হয়েছে। মহিলার বড় ছেলে তাঁদের জানান, আঠেরো বছরের নীচে মেয়েদের বিয়ে নিষিদ্ধ, তিনিজানতেন না।
ছোট বউয়ের বাড়ি নদিয়ায়। ফেসবুকে আলাপের মাধ্যমে এক বছর আগে তার বিয়ে হয়। তারও বয়স এখন ১৭ বছর। অর্থাৎ, বিয়ের সময় সে ছিল ষোড়শী। মেয়েটি জানিয়েছে, অসুস্থতার জন্য উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার আগেই পড়া ছেড়ে দিয়েছে।
নাবালিকার সঙ্গে দুই ছেলের বিয়ে নিয়ে মোবাইলে জানতে চাওয়া হলে ওই পঞ্চায়েত সদস্যা বলেন, ‘‘আমি খুব অসুস্থ। এখন কথা বলতে পারছি না।’’ পঞ্চায়েত প্রধান মধুমিতা সমাদ্দারের বক্তব্য, ‘‘ওই সদস্যের ছেলেদের বিয়ে নাবালিকার সঙ্গে হয়েছে, এটা জানতাম না। চাইল্ড লাইন বাড়িতে যাওয়ার পরে উনি আমাকে বলেন, আমি যেন ওঁর বৌমাদের হোমে যাওয়া থেকে আটকানোর ব্যাপারে সাহায্য করি। সেটা করিনি। বড় বৌমা আবার অন্তঃসত্ত্বা। শুনছি, ছোট ছেলেরও বিয়ের বয়স হয়নি। যা হয়েছে, ঠিক হয়নি। আমাদের সবাইকেই সচেতন থাকতে হবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy