Advertisement
০৫ নভেম্বর ২০২৪
Serampore

প্রাচ্য ও পাশ্চাত্যের সুর মিলল মোলারের স্যাক্সোফোনে

ডেনমার্কের ‘ড্যানিশ কালচারাল ইনস্টিটিউট’ এবং ‘শ্রীরামপুর হেরিটেজ রেস্টোরেশন ইনিশিয়েটিভ’ (শ্রী)-এর যৌথ উদ্যোগে হল এই অনুষ্ঠান।

মগ্ন: সুরের সাধনায় মোলার।

মগ্ন: সুরের সাধনায় মোলার।

নিজস্ব সংবাদদাতা
শ্রীরামপুর শেষ আপডেট: ২৮ জানুয়ারি ২০২৩ ০৮:৩৮
Share: Save:

মাঘ মাস। তবু, ঠাণ্ডার কামড় নেই। অনেকটা পড়ন্ত শীতের ছোঁয়া। বৃহস্পতিবার সরস্বতী পুজো আর প্রজাতন্ত্র দিবসের মিলিজুলি বিকেলে এমন অনুভূতি মেখে বিদেশি জ্যাজ আর দেশীয় রাগের ঝরনায় গা ভেজাল শ্রীরামপুরের ‘ড্যানিশ গভর্নমেন্ট হাউস’-এর সভাঘর। পাশ্চাত্যের সঙ্গে প্রাচ্যের উচ্চাঙ্গ সঙ্গীতের এই মেলবন্ধন ভেসে এল আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন শিল্পী লারস্ মোলারেরস্যাক্সোফোন থেকে।

ডেনমার্কের ‘ড্যানিশ কালচারাল ইনস্টিটিউট’ এবং ‘শ্রীরামপুর হেরিটেজ রেস্টোরেশন ইনিশিয়েটিভ’ (শ্রী)-এর যৌথ উদ্যোগে হল এই অনুষ্ঠান। অনুষ্ঠানের শুরুতেই রাগ ‘শ্রী’ পরিবেশন করে তারিফ আদায় করে নেন মোলার। ভারতীয় শাস্ত্রীয় সঙ্গীতে তাঁর অনায়াস বিচরণ, পাশ্চাত্যের সুরের সঙ্গে তার সেতুবন্ধনের প্রয়াস দর্শক উপভোগ করেন। স্যাক্সোফোনের পাশাপাশি গ্রামোফোন থেকে সানাইয়ের সুর নিয়ে আলোচনা করেন শিল্পী। ‘ফিউশন-সঙ্গীত’ চিরাচরিত সঙ্গীত-ঐতিহ্যে ভাগ বসাবে কি না, এমন প্রশ্ন করলেন দর্শক। জবাবে, সানাইয়ের সঙ্গে স্যাক্সাফোনের সখ্যতার সুর শোনালেন মোলার। আলি হুসেন, বিসমিল্লা খান, ভীমসেন যোশীদের কথা উঠে এল ডেনমার্কের মানুষটির মুখে। সব মিলিয়ে উপভোগ্য হয়ে উঠল অনুষ্ঠান। শিল্পীকে তবলায় সঙ্গত করেন মানস সুর।

ওই সভাগৃগেই রবিবার ‘শ্রী’-এর উদ্যোগে আলোচনাসভা হয়। বিষয় ছিল, ‘বৈচিত্র্যের ঐতিহ্য: পরম্পরা ও উত্তরাধিকার’। আলোচনা করেন প্রাবন্ধিক ও লেখক অভ্র ঘোষ এবং অধ্যাপক আব্দুল কাফি। সঞ্চালনায় ছিলেন মোহিত রণদীপ।

ওই দিন সংস্থার মুখপত্র ‘শ্রী’ পত্রিকার তৃতীয় সংখ্যার আনুষ্ঠানিক প্রকাশিত হয়। এই সংখ্যায় শ্রীরামপুরের ইতিহাস নিয়ে বেশ কয়েকটি লেখা রয়েছে। চার বরেণ্য দার্শনিক কৃষ্ণচন্দ্র ভট্টাচার্য, গোপীনাথ ভট্টাচার্য, কালিদাস ভট্টাচার্য এবং সুশীলকুমার মৈত্রের ভাবনার উপরে প্রবন্ধও আছে ‘শ্রীরামপুরের দার্শনিক’ শিরোনামে। আলোচনাসভার পরে ছিল উচ্চাঙ্গ সঙ্গীতের আসর। কন্ঠসঙ্গীত পরিবেশন করেন শিঞ্জিনী মুখোপাধ্যায়। সেতারে ‘কিরওয়ানি’ রাগ শোনান দিবাকর পানি। ‘শ্রী’-এর সম্পাদক দেবাশিস মল্লিক জানান, এই জনপদের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে রুচিসম্মত নানা অনুষ্ঠান ধারাবাহিক ভাবে করা হবে।

শ্রীরামপুর সঙ্গীত সমাজের উদ্যোগে শহরের আদালত প্রাঙ্গণে এক সময় রাতভর শাস্ত্রীয় সঙ্গীতের আসর বসত। ভীমসেন যোশী, কিশোরী আমনকর যশরাজ, গিরিজা দেবী, নিখিল বন্দ্যোপাধ্যায়, পণ্ডিত রবিশঙ্কর, উস্তাদ বিলায়েত খাঁ, কেরামতউল্লা, আল্লারাখা, আমজাদ আলি, বিরজু মহারাজ, চিত্রেশ দাস, রশিদ খানের মতো শিল্পী এখানে অনুষ্ঠান করেছেন। এই আয়োজন অবশ্য অনেক দিন বন্ধ। তবে, শহরের বিভিন্ন সংগঠন শাস্ত্রীয় সঙ্গীতের অনুষ্ঠানের আয়োজন করে সেই ঐতিহ্য ধরে রেখেছেন।

অন্য বিষয়গুলি:

Serampore Western Music Indian Music
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE