আরম্ভ: শুরু হয়ে গেল সাঁতরাগাছি সেতু সারাইয়ের কাজ। শনিবার। নিজস্ব চিত্র
আশঙ্কা ছিলই। প্রথম দিনই যা সত্যি হয়ে গেল। শুক্রবার রাত ১১টা থেকে সাঁতরাগাছি সেতু বন্ধ করে মেরামতির কাজ শুরুর পরে শনিবার ভোরেই যানজট ছড়িয়ে পড়ল বিদ্যাসাগর সেতু, কোনা এক্সপ্রেসওয়ে এবং আশপাশের রাস্তায়। যার জেরে হাওড়া ও শালিমার স্টেশন থেকে ট্রেন ধরতে পারলেন না বহু যাত্রী।
সাঁতরাগাছি সেতুর মেরামতি শুরু হলে তার দৈনিক ৭০ হাজার গাড়ির চাপ নিতে পারবে না কোনা এক্সপ্রেসওয়ে-সহ হাওড়ার বাকি রাস্তাগুলি। এমনটাই আশঙ্কা ছিল। প্রথম দিন সকাল আটটার পরে যানবাহন বাড়তে থাকায় কোনা এক্সপ্রেসওয়েতে দেখা যায় গাড়ির দীর্ঘ সারি। তবে, সপ্তাহের কাজের দিনগুলির তুলনায় শনিবার যানবাহন কম চলায় দুপুরের পরে যানজট কিছুটা কমে। আজ, রবিবার ছুটির দিনেও রাস্তায় যানবাহন কম চলবে, ফলে তীব্র যানজটের আশঙ্কা তেমন থাকবে না বলেই ধরে নেওয়া হচ্ছে। কিন্তু সোমবার থেকে হাওড়া ও কলকাতার দিকের যানজট কী ভাবে সামলানো যাবে, সেটাই মূল চ্যালেঞ্জ পুলিশের।
পুলিশি সূত্রের খবর, শুক্রবার রাত ১১টা থেকে সেতু বন্ধ করে দেওয়ার আগেই বিদ্যাসাগর সেতুর খিদিরপুর র্যাম্প, রেসকোর্সের দিকের রাস্তা গার্ডরেল দিয়ে আংশিক বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল। অন্য দিকে, বিদ্যাসাগর সেতুর টোল-প্লাজ়া থেকে সাঁতরাগাছি সেতুগামী মালবাহী ছোট গাড়ি-সহ অন্যান্য গাড়ি আন্দুল রোডের দিকে ঘুরিয়ে দেওয়া হয় আলমপুর হয়ে জাতীয় সড়কের দিকে। তা সত্ত্বেও শালিমার বা হাওড়া স্টেশন থেকে ট্রেন ধরতে গিয়ে নাজেহাল হলেন অসংখ্য যাত্রী।
ভোর পৌনে পাঁচটায় শালিমার স্টেশনে যাওয়ার জন্য সল্টলেক থেকে বেরিয়ে বিদ্যাসাগর সেতুর মাঝখানে যানজটে আটকে পড়েন নারায়ণচন্দ্র পাল। তিনি বলেন, ‘‘হাওড়ায় সময়ে পৌঁছতে পারব না বুঝেছিলাম। তাই শালিমার থেকে ট্রেন ধরব ভেবেছিলাম। প্রায় ৪৫ মিনিট শুধু বিদ্যাসাগর সেতুতেই আটকে থাকলাম। ট্রেন ধরতে পারিনি।’’ একই অবস্থা পাঁশকুড়ার বৈদ্যনাথ সামন্তের। তিনি বলেন, ‘‘বিদ্যাসাগর সেতু দিয়ে হাওড়া স্টেশন পৌঁছতেই প্রায় দেড় ঘণ্টা লেগে গিয়েছিল। সমস্ত রাস্তা বন্ধ করে দেওয়ায় ছোট গাড়ি নিয়ে বেরোনোর কোনও পথ পাইনি।’’
রাত থেকে পথে কয়েক হাজার হোমগার্ড ও পুলিশকর্মী মোতায়েন থাকা সত্ত্বেও এমন পরিস্থিতি কেন? ভুক্তভোগীদের অধিকাংশই আঙুল তুলছেন পুলিশি ব্যর্থতার দিকে। এ দিকে, শুক্রবারই হাওড়া সিটি পুলিশের কর্তারা জানিয়েছিলেন, গাড়ি বার করার একাধিক রাস্তা না থাকলে অতিরিক্ত বাহিনী নামিয়েও যানজট সামলানো যাবে না। তাই বিভিন্ন বিকল্প রাস্তা ব্যবহারের পরিকল্পনাও হয়। কিন্তু তা সত্ত্বেও এ দিন সকাল থেকে যানবাহনের সংখ্যা বাড়তে থাকায় সে সব সামলাতে দিশাহারা দশা হয় পুলিশের।
বেলা ১২টার পরে মোটরবাইক বা ছোট গাড়ির সাঁতরাগাছি সেতুর দিকে যাওয়া বন্ধ করে দেওয়া হয়। বাস ছাড়া অধিকাংশ গাড়ি ঘুরিয়ে দেওয়া হয় বিদ্যাসাগর সেতুর টোল-প্লাজ়া থেকে আন্দুল রোড ও হ্যাংস্যাং মোড় থেকে ড্রেনেজ ক্যানালের দিকে। দিনের ব্যস্ত সময়ে দীর্ঘক্ষণ যানজট থাকায় বাসের প্রতীক্ষায় যাত্রীদের ভিড় জমতে থাকে স্টপে। কোনা এক্সপ্রেসওয়ের বেলেপোল, ক্যারি রোডের মোড় এলাকার বাসস্টপে যাত্রীদের ভিড় চোখে পড়ার মতো বাড়তে থাকে।
অথচ, হাওড়া সিটি পুলিশের পদস্থ আধিকারিকেরা মানতেই নারাজ যে, এ দিন মারাত্মক রকমের যানজট হয়েছে। তাঁদের দাবি, কোনা এক্সপ্রেসওয়েতে এ ধরনের যানজট স্বাভাবিক। পরিস্থিতি অনুযায়ী এ দিন ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। তবে, হাওড়া সিটি পুলিশের এক কর্তা মানলেন, ‘‘প্রথম দিন কিছুটা সমস্যা হয়েছে। আসল পরীক্ষা সোমবার। ওই দিন স্কুল, কলেজ, অফিস খোলা থাকায় পথে গাড়ির সংখ্যাও বাড়বে। শনি ও রবিবার ছুটির দিন হওয়ায় গাড়ির চাপ সে ভাবে পড়ছে না। সোমবার যানজট হচ্ছে কি না বা তা নিয়ন্ত্রণ করা যাচ্ছে কি না, সেটা দেখে পরবর্তী পদক্ষেপ স্থির করা হবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy