রাত পোহালেই রথযাত্রা। কিন্তু, এ বারেও রথে চাপা হচ্ছে না মাহেশের জগন্নাথ-বলরাম-সুভদ্রার। করোনাভাইরাসের ছোঁয়াচ এড়াতে গত বছরের মতোই তিন দেবতা থাকবেন জগন্নাথ মন্দিরেই, অস্থায়ী মাসির বাড়িতে। তাঁদের প্রতিভূ হিসেবে রাজপথ দিয়ে পদব্রজে নারায়ণ শিলা নিয়ে যাওয়া হবে মাসির বাড়ির মন্দিরে। হুগলির আরও দুই বিখ্যাত রথযাত্রাও (গুপ্তিপাড়া এবং চন্দননগর) বন্ধ থাকছে।
ইতিহাসপ্রসিদ্ধ মাহেশের রথযাত্রার এ বার ৬২৫ তম বর্ষ। প্রথা অনুযায়ী স্নানযাত্রার দিন দুধ-গঙ্গাজলে স্নান করে তিন দেবতা জ্বরে আক্রান্ত হন। মন্দির বন্ধ করে শুশ্রুষা চলে। ওই পর্বের পরে শনিবার মন্দিরের দরজা খোলা হয়। এ দিন জগন্নাথ-বলরাম-সুভদ্রার ‘প্রাণপ্রতিষ্ঠা’ হয়েছে। ওই উপলক্ষে পুজার্চনা, হোম হয়। মন্দিরের প্রধান সেবাইত সৌমেন অধিকারী জানান, কাল, বিকেল ৪টেয় নারায়ণ শিলা মন্দির থেকে জিটি রোড ধরে মাসির বাড়ির মন্দিরে নিয়ে যাওয়া হবে। সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের সেখানে থাকার কথা। ঘোড়ার গাড়িতে সন্ন্যাসীরা থাকবেন। ৬টি কীর্তনের দল থাকবে।
জগন্নাথ মন্দিরে তিন দেবতার বিগ্রহ গর্ভগৃহের পাশের ঘরে অস্থায়ী মাসির বাড়িতে রাখা হবে। উল্টোরথ পর্যন্ত সেখানেই যাবতীয় বিধি পালন করা হবে। সকাল থেকে ভক্তেরা মন্দিরে ঢুকতে পারলেও কোভিড-বিধি মানতে হবে। উল্টোরথের দিন একই ভাবে নারায়ণ শিলা পদব্রজে জগন্নাথ মন্দিরে ফিরিয়ে আনা হবে। তার পরেই জগন্নাথ-বলরাম-সুভদ্রার বিগ্রহ গর্ভগৃহে ফিরিয়ে নিয়ে যাওয়া হবে।
সৌমেনবাবু বলেন, ‘‘অতিমারি থেকে সমাজকে সুস্থ হতে হবে। সেই দিকে তাকিয়েই রথটানের চিরাচরিত প্রথা এ বারেও বাতিল করা হয়েছে। ভক্তদের কাছে অনুরোধ, তাঁরা যেন বেশি সংখ্যায় মন্দিরে আসা থেকে বিরত থাকেন।’’
গুপ্তিপাড়ায় নিয়মবিধি পালিত হবে মন্দির চত্বরে। এখানে শ্রীশ্রীবৃন্দাবনচন্দ্র জিউ মঠে একই চৌহদ্দিতে তিনটি মন্দির। বৃন্দাবনচন্দ্রের মন্দিরে অধিষ্ঠিত জগন্নাথ-বলরাম-সুভদ্রা। বাকি দু’টি মন্দির কৃষ্ণ এবং রামসীতার। মঠ ও এস্টেটের প্রশাসক গোবিন্দানন্দ পুরী জানান, গত বছর করোনা আবহে রথটান না হওয়ায় অস্থায়ী মাসির বাড়ি করা হয়েছিল কৃষ্ণমন্দিরে। এ বার তা হচ্ছে রামসীতার মন্দিরে। তিন দেবতার বিগ্রহ উল্টোরথ পর্যন্ত সেখানেই থাকবে।
ভিড় এড়াতে এখানে মাহেশের মতো পদব্রজে নারায়ণ শিলা মাসির বাড়িতে নিয়ে যাওয়ার কর্মসূচি রাখা হয়নি। এই কারণেই দেশকালী বা গোপাল মন্দিরে বিপত্তারিণী পুজো হবে না। এই মঠ পুরাতত্ত্ব সর্বেক্ষণের অধীন। তাদের নির্দেশে মন্দিরে জনগণের প্রবেশ বন্ধ। গোবিন্দানন্দ পুরী জানান, রথযাত্রা উৎসবে অল্প সংখ্যক ভক্তের মন্দিরে ঢোকার ব্যাপারে তাদের অনুমতি চাওয়া হয়েছে। সে ক্ষেত্রেও যাবতীয় কোভিড-বিধি মেনে দর্শনার্থীদের ঢোকানো হবে। বিধিনিষেধের ব্যাপারে এলাকায় প্রচার করা হয়েছে মন্দির কর্তৃপক্ষের তরফে।
রথ কমিটির সদস্য সুব্রত মণ্ডল বলেন, ‘‘ভক্তরা যাতে কোভিড বিধি যথাযথ ভাবে মানেন, সেই অনুরোধ জানাচ্ছি।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy