জনসংযোগ কর্মসূচিতে গিয়ে পঞ্চায়েত কর্মীকে ফোনে ধমক দিচ্ছেন চুঁচুড়ার বিধায়ক অসিত মজুমদার। নিজস্ব চিত্র।
নিয়ম বলছে, আবাস যোজনার যে সমীক্ষা চলছে তাতে নতুন কোনও নাম নথিভুক্ত করা যাবে না। অথচ চুঁচুড়ার তৃণমূল বিধায়ক অসিত মজুমদার নিজে পাঁচটি নতুন উপভোক্তার নাম যাচাইয়ের জন্য পঞ্চায়েতের এক সরকারি আধিকারিককে প্রকাশ্যে ধমক দিলেন। এমনকি, ওই যাচাই না করা হলে ওই আধিকারিকের ‘চাকরি করা বিপদ’ করে দেবেন বলেও ফোনে হুমকি দিয়েছেন অসিত। শুক্রবার চুঁচুড়া-মগরা ব্লকের কোদালিয়া ১ পঞ্চায়েতের ঘটনা।
লোকসভা ভোটে পিছিয়ে গিয়ে জনসংযোগ যাত্রা শুরু করেছেন অসিত। সংশ্লিষ্ট পঞ্চায়েতে এ দিন তৃতীয় দিনের সেই যাত্রায় দক্ষিণায়ন এলাকা পরিদর্শন করেন অসিত। অনেকেই রাস্তা, নিকাশি ও সরকারি বাড়ি না পাওয়া নিয়ে অভিযোগ জানান। ঘটনাচক্রে বিগত দু'দিনের যাত্রায় অসিত মোট ৫ জনের নাম আবাসের জন্য বিডিওর কাছে পাঠিয়েছিলেন। এ দিন যাত্রার মাঝে ওই ৫ জনের নাম যাচাইকরণ হচ্ছে কি না জানতে তিনি পঞ্চায়েতের ওই আধিকারিককে ফোন করেন।
আধিকারিক জানান, তাঁর কাছে যাচাইকরণের কোনও নির্দেশ আসেনি। এরপরই বিধায়ক বলেন, ‘‘আমি বলছি, আপনি তদন্ত করবেন কি না বলুন।’’ অপর প্রান্ত থেকে ভেসে আসে, ‘‘আমি তদন্ত করার কেউ নই।’’ এরপরেই মেজাজ হারান অসিত। তিনি বলতে শুরু করেন, ‘‘আপনি লাটসাহেব হয়ে গেছেন।আপনার চাকরি করা বিপদ করে দেব আমি। আপনার জন্য যদি এই পাঁচজন মানুষ বাড়ি না পায়, তাহলে দেখে নেব!’’
অন্য দিকে, এ দিনই বিধায়কের কাছে সরস্বতী মালিক নামে এক মহিলা অভিযোগ জানান, তিনি সিপিএম করেন বলেই সরকারি আবাস পাচ্ছেন না। মহিলাকে পরে কাগজপত্র নিয়ে দেখা করতে বললেও তাঁর অভিযোগ মানেননি অসিত।
প্রশাসন সূত্রে খবর, ‘বাংলার বাড়ি’ প্রকল্পের জন্য সমীক্ষা শুরু করেছেন সরকারি আধিকারিকেরা। তালিকায় নাম থাকা বাড়িতে গিয়েই চলছে সমীক্ষা। প্রশাসনের এক কর্তা সাফ জানান, যে উপভোক্তারা তালিকা রয়েছেন, শুধুমাত্র তাঁদেরই নাম যাচাই হবে। অন্য কারও নাম যাচাইয়েরও প্রশ্নই নেই।
অসিতের দাবি, তিনি ঘুরে ঘুরে দেখছেন, ন্যায্য অনেকের নাম ওঠেনি। তাই তালিকা নিয়েই এ দিন প্রশ্ন তোলেন অসিত। অসিতের এমন কাজ নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন তৃণমূলের একাংশও। তাঁদের আশঙ্কা, এর পর অসিতের দেখানো পথে অন্য নেতারাও ওই প্রকল্পের জন্য নতুন নাম যাচাইয়ে পাঠাবেন। তখন প্রক্রিয়াটি জটিল হতে শুরু করবে।
অসিতের ক্ষোভ, ‘‘ওঁর (আধিকারিক) মতো সিপিএমের কো-অর্ডিনেশন কমিটির লোকেদের জন্যই মানুষ আবাস থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন।’’
প্রবীণ বাম নেতা ফরোয়ার্ড ব্লকের উত্তম মিশ্রের কটাক্ষ, ‘‘সত্যিই যদি উনি (আধিকারিক) কো-অর্ডিনেশন কমিটির লোক হন, তাহলে বিধায়ককে বলব সহযোগিতা করুন, সঠিক মানুষই ঘর পাবে। কারণ, উনি (আধিকারিক) তৃণমূল নয়।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy