মজে যাওয়া পুকুরের সামনে এলাকাবাসীর সঙ্গে কথা বলছেন বিধায়ক। নিজস্ব চিত্র।
হুগলি-চুঁচুড়া পুরসভার ৩ নম্বর ওয়ার্ডের একাধিক পুকুর মজে গিয়েছে। শুক্রবার সেগুলি পরিদর্শন করে সংস্কারের আশ্বাস দিলেন এলাকার বিধায়ক অসিত মজুমদার। তবে, এই পরিদর্শন ঘিরে ফের একবার এখানে তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বও চলে এল আলোচনায়।
এলাকাবাসীর একাংশের দাবি, ওই পুকুরগুলির মধ্যে একটি সংস্কারের আশ্বাস ছ’বছর আগেও বিধায়ক দিয়েছিলেন। তাই এ বারেও কাজ হবে কি না, তা নিয়ে তাঁরা সন্দিহান। এ দিন পূর্বায়ন এলাকায় ওই পুকুরটির হাল দেখে উষ্মা প্রকাশ করেন অসিত। স্থানীয়ে কয়েক জন পুকুরটি সংস্কারের দাবি জানান। ভূমি সংস্কার দফতরে কথা বলে অবিলম্বে পুকুরটি সংস্কারের আশ্বাস দেন বিধায়ক। তিনি বলেন, ‘‘অনেক পুকুরেরই বেহাল দশা। সবগুলি একসঙ্গে সংস্কার করা সম্ভব নয়। বিষয়টি আমি বিধানসভায় তুলব।’’
তৃণমূল বিধায়কের পুকুর পরিদর্শনে ওই দলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের গন্ধ পাচ্ছেন বিরোধীরা। বিজেপির দাবি, লোকসভা ভোটে হুগলি-চুঁচুড়া পুরসভায় তৃণমূল পিছিয়ে পড়ায় বিধায়কের ক্ষোভের মুখে পড়েছেন দলের বহু নেতা-কর্মী। তাঁদের কেউ কেউ বিধায়কের শিবির ছেড়ে পুরপ্রধান অমিত রায়ের দিকে ঝুঁকছেন। হুগলি সাংগঠনিক জেলা বিজেপির সাধারণ সম্পাদক সুরেশ সাউয়ের মন্তব্য, ‘‘৩ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর অনিন্দিতা মণ্ডল রাজবংশীও সেই পথের পথিক হয়েছেন। তাই ওঁকে চাপে ফেলতেই ওই ওয়ার্ডে গিয়ে নাটক করেছেন বিধায়ক।’’
বিধায়কের বিরোধী গোষ্ঠী হিসাবে পরিচিত, ৪ নম্বর ওয়ার্ডের এক সক্রিয় তৃণমূল কর্মীরও একই দাবি। তাঁর কথায়, ‘‘৮ নম্বর ওয়ার্ডের শিবতলায় তৃণমূলের দলীয় কার্যালয়ের পাশেই বহু বছর ধরে একটি বড় পুকুর মজে রয়েছে। ওই ওয়ার্ডে আরও একাধিক পুকুরের একই অবস্থা। সেগুলি নিয়ে বিধায়ক কিছু বলেন না। কারণ, সেখানকার কাউন্সিলর বিধায়কের ঘনিষ্ঠ।’’ অভিযোগ উড়িয়ে অসিতের বক্তব্য, ‘‘এলাকাবাসী অভিযোগ না করলে সমস্ত পুকুরের হাল সম্পর্কে জানা আমার পক্ষে সম্ভব নয়!
যেখান থেকে অভিযোগ পাই, সেখানেই যাই।’’
পুকুর পরিদর্শনের সময় বিধায়কের সঙ্গে অনিন্দিতাকে দেখা যায়নি। শিবির বদলানোর কথা না মানলেও তাঁর দাবি, বিধায়ক তাঁকে কিছুই জানাননি। সংশ্লিষ্ট পুকুরটি সংস্কারের জন্য তিনি গণস্বাক্ষর করা চিঠি পুরসভাকে দিয়েছিলেন। পুর পারিষদ (স্বাস্থ্য) জয়দেব অধিকারী বলেন, ‘‘পুকুরটি ব্যক্তি মালিকানাধীন। সম্প্রতি হাতবদল হয়েছে শুনেছি। যে বা যাঁরা কিনেছেন, তাঁদের সঙ্গে কথা বলে সংস্কারের প্রস্তাব দেওয়া হবে। রাজি না হলে অন্য পদক্ষেপের কথা ভাবা হবে।’’
৩ নম্বর ওয়ার্ডের আরও দু’টি মজা পুকুর পরিদর্শন করেন অসিত। তার মধ্যে শরৎ সরণি এলাকার একটি পুকুর নিয়ে তাঁর কাছে অভিযোগ জানান এলাকার প্রাক্তন পুরসদস্য সুনীল মালাকার। এক সময়
বিধায়কের উপরে ক্ষোভ উগরে পুর-পারিষদের (জল) পদ থেকে সরে দাঁড়িয়েছিলেন সুনীল। পরবর্তীতে দলীয় কর্মসূচিতেও তাঁকে আর দেখা যায়নি। এ দিন অবশ্য তিনি বিধায়কের সঙ্গে ছিলেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy