কলেজ এখনও রয়েছে সেই বিতর্কিত ফ্লেক্স। নিজস্ব চিত্র।
বিতর্ক থামার লক্ষণ নেই বলাগড়ের বিজয়কৃষ্ণ মহাবিদ্যালয়ে। বরং কলেজে সরাসরি রাজনীতি করার অভিযোগ উঠেছে তৃণমূলের বিরুদ্ধে। কলেজ চত্বরে তৃণমূল নেতাদের যে ফ্লেক্স লাগানো নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে, রবিবার পর্যন্ত সেগুলি সরেনি।
ফ্লেক্সে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে তৃণমূলের যুবনেতা শান্তনু বন্দ্যোপাধ্যায় এবং প্রাক্তন বিধায়ক অসীম মাঝির ছবি রয়েছে। একটি ফ্লেক্সে দেখা যাচ্ছে— ‘সৌজন্যে প্রিয়াঙ্কা বন্দ্যোপাধ্যায়। সদস্য, বলাগড় পঞ্চায়েত সমিতি’। অন্য একটি ফ্লেক্সের নীচের অংশে লেখা— ‘প্রচারে: সুরজিৎ মুখোপাধ্যায়। সাধারণ সম্পাদক, বলাগড় ব্লক যুব তৃণমূল কংগ্রেস’। কলেজ কর্তৃপক্ষ এবং পড়ুয়াদের একাংশ এ নিয়েই প্রশ্ন তুলছেন। তাঁদের বক্তব্য, কোনও দলের ছাত্র সংগঠন কলেজে প্রচার চালাতে পারে। কিন্তু সরাসরি দলের মূল সংগঠন বা যুব সংগঠনের নেতানেত্রী তা পারেন? বিরোধীদের দাবি, এর অর্থ কলেজের অভ্যন্তরে তৃণমূল সরাসরি রাজনীতি করছে।
কলেজে শান্তনু, অসীমের ছবি থাকা নিয়ে আগেই আপত্তির কথা জানিয়েছিলেন কলেজ পরিচালন সমিতির সভাপতি তথা এলাকার তৃণমূল বিধায়ক মনোরঞ্জন ব্যাপারী। তাঁর প্রশ্ন, ‘‘যাঁদের নামে ফ্লেক্স লাগানো হয়েছে, তারা কি পড়ুয়া?’’ ব্লকের এসএফআই নেতা প্রমিত দাসের বক্তব্য, ‘‘কলেজটা তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের জায়গা নয়। এখানে পড়াশোনার সুষ্ঠু পরিবেশ গড়ে তোলা হোক।’’ জেলা এসএফআই সম্পাদক অমৃতেন্দু দাস বলেন, ‘‘রাজ্য সরকার বছরের পর বছর কলেজে ভোট করাচ্ছে না। শাসক দলের নেতারা কলেজের ভিতরে যা খুশি তাই করছেন। ওঁদের বিধায়কই তা বলছেন। এ বার অন্তত রাজ্য সরকার এই নিয়ে কী পদক্ষেপ করেন, দেখতে চাই।’’
প্রিয়াঙ্কা শান্তনুর স্ত্রী। ২০১৩ থেকে ’১৮ সাল পর্যন্ত তিনি বলাগড় পঞ্চায়েত সমিতির সদস্য ছিলেন। অর্থাৎ এখন তিনি প্রাক্তন। ফ্লেক্স দেখে অবশ্য তা বোঝার উপায় নেই। কলেজের সঙ্গে সম্পর্কিত না হয়েও কলেজে ফ্লেক্স লাগিয়েছেন, এই প্রশ্নে তাঁর জবাব, ‘‘আমি লাগাইনি। কে বা কারা লাগিয়েছেন, তাও জানি না। খোঁজ নেব।’’ সুরজিৎ জানান, দলের যুব সংগঠনের পদের পাশাপাশি ছাত্র সংগঠনের বলাগড় ব্লকের আহ্বায়কের দায়িত্ব সামলাচ্ছেন। তিনি বলেন, ‘‘কয়েক দিন আগে রক্তদান শিবির উপলক্ষ্যে ফ্লেক্সগুলি লাগানো হয়েছিল।’’ ফ্লেক্স সরানো নিয়ে তিনি মন্তব্য করেননি।
গত মঙ্গলবার মনোরঞ্জনবাবু কলেজে যান। শান্তনু এবং অসীমবাবুর ছবির ফ্লেক্স সরাতে অধ্যক্ষকে নির্দেশ দেন। অধ্যক্ষ তা সরিয়ে নেন। ফ্লেক্সদু’টি সরিয়ে শৌচাগারের পাশে রেখে মুখ্যমন্ত্রীকে ‘অপমান’ করা হয়েছে, এই অভিযোগ তুলে টিএমসিপির ছেলেরা অধ্যক্ষকে ঘেরাও করেন। শেষে, ফ্লেক্সদু’টি যথাস্থানে লাগিয়ে অধ্যক্ষ নিস্তার পান। বহিরাগতরা তাঁকে হেনস্থা করে বলে অধ্যক্ষের অভিযোগ। এই নিয়ে তিনি পুলিশে অভিযোগও জানান।
মনোরঞ্জনবাবু বলেন, ‘‘আমাদেরই দলের কিছু লোক অধ্যক্ষকে অপমান করেছে। দলের জেলা সভাপতি দিলীপ যাদবকে পুরো ঘটনা জানিয়েছি। কিন্তু, কয়েক দিন কেটে গেলেও ফ্লেক্স সরানো হয়নি। বিষয়টি আগামীকাল দলের জেলা ও রাজ্য নেতৃত্বকে জানাব।’’ তাঁর ক্ষোভ, দলের একাংশ সামাজিক মাধ্যমে তাঁকে অপমান করছে। এই বিষয়টিও তিনি দলের রাজ্য
নেতৃত্বকে জানাবেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy