—প্রতীকী চিত্র।
ছ’দিন মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ে উলুবেড়িয়ায় বোমা বিস্ফোরণের বলি হল এক কিশোর।
সোমবার সকালে কলকাতার এসএসকেএম হাসপাতালে শেখ আরিফ (১৬) নামে ওই কিশোর মারা যায়। বোমা তৈরি নিয়ে এলাকাবাসীর উদ্বেগ বেড়েছে এই মৃত্যুর খবরে। ঘটনার প্রতিবাদে সরব বিরোধী দলগুলি এবং পরিবেশকর্মীরা। বিস্ফোরণের পাঁচ দিনের মাথায়, শনিবার ঘটনাস্থল থেকে ৭টি তাজা বোমা উদ্ধার করে বম্ব স্কোয়াড।
অভিযোগ, তপনা পঞ্চায়েতের ফতেপুর রথতলায় আরিফদের ছিটেবেড়ার ঘরে বোমা বানানো হচ্ছিল। গত মঙ্গলবার বিকেলে বিস্ফোরণে ঘরটি ভেঙে যায়। আরিফের বাবা শেখ সামসুর-সহ পাঁচ জন জখম হয়। এলাকাবাসীর অভিযোগ, তারা বোমা বানাচ্ছিল। আরিফ এবং তাঁর তুতো ভাই হাসান ঘরের সামনে খেলছিল। তারাও জখম হয়। আহত প্রত্যেককে উলুবেড়িয়া মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। অবস্থা সঙ্কটজনক থাকায় ওই রাতেই আরিফ এবং শেখ হালিম নামে এক যুবককে এসএসকেএমে পাঠানো হয়। হালিম বিপন্মুক্ত নন বলে পুলিশ সূত্রের খবর।
স্বতঃপ্রণোদিত মামলা রুজু করে তদন্তে নামে পুলিশ। হালিমের মাসতুতো ভাই শেখ হাফিজুরকে গ্রেফতার করা হয়েছে। বিরোধীদের অভিযোগ, বোমা বানানোর নেপথ্যে থাকা তৃণমূলের লোকজনকে আড়াল করতে এক চুনোপুঁটিকে ধরে প্রকৃত ঘটনা ধামাচাপা দিতে চাইছে পুলিশ। কার বা কাদের নেতৃত্বে বোমার কারবার চলত, কোথায় সরবরাহ হত, জনমানসে ওঠা এমন প্রশ্নের জবাব হাওড়া গ্রামীণ পুলিশের কর্তাদের কাছে মেলেনি। সামসুরের বাড়িতে বোমা তৈরির কথা পুলিশ জেনেও চুপ ছিল, এমন অভিযোগও উঠেছে।
পুলিশের দাবি, ঘটনায় জড়িত প্রত্যেককে গ্রেফতার করা হবে। তাদের গোচরে বিষয়টি ছিল না। সে ক্ষেত্রে বোমা তৈরি চলায় পুলিশের খবর সংগ্রহ ব্যবস্থার ত্রুটি স্পষ্ট বলে অনেকের অভিমত।
সিপিএম নেত্রী অপর্ণা পুরকাইতের অভিযোগ, ‘‘শাসক দলের সৌজন্যে তপনা পঞ্চায়েতের নানা জায়গা দুষ্কৃতীদের মুক্তাঞ্চল। তারই পরিণতি ওই কিশোরের মৃত্যু।’’ বিজেপি নেতা কৌশিক চক্রবর্তীর মন্তব্য, ‘‘সারা রাজ্যেই শাসক দল বোমার কারখানা খুলে ফেলেছে। প্রাণ যাচ্ছে নাবালকের।’’ ঘটনার নিন্দা করলেও উলুবেড়িয়া দক্ষিণ কেন্দ্রের তৃণমূল সভাপতি দুলাল করের দাবি, এর সঙ্গে রাজনীতির যোগ নেই। তাঁর দাবি, ‘‘একদল দুষ্কৃতী এই সব কাজে যুক্ত। দলের ছেলেদের আমরা বলেছি, কোনও ভাবেই তাঁরা এই সবের সঙ্গে যুক্ত না থাকেন।’’
বিস্ফোরণের ঘটনাটির প্রতিবাদে চন্দননগরের সংগঠন পরিবেশ অ্যাকাডেমি রাজ্য সরকারকে চিঠি দিয়েছে। হাওড়া গ্রামীণ পুলিশ, উলুবেড়িয়া থানাতেও চিঠি পাঠানো হয়েছে। বাজি ও ডিজে বক্স বিরোধী মঞ্চের সাধারণ সম্পাদক গৌতম সরকারের প্রতিক্রিয়া, ‘‘সকলের নাকের ডগায় বোমা তৈরি হচ্ছে, বিস্ফোরণে নাবালকের প্রাণ যাচ্ছে! নিন্দার ভাষা নেই।’’
মাস পাঁচেক আগেই লোকসভা ভোটের সময় হুগলির পান্ডুয়ার তিন্নায় বোমা বিস্ফোরণে এক বালক মারা যায়। দুই বালক জখম হয়। তাদের মধ্যে এক জনের বাঁ হাতের কব্জি থেকে খানিকটা উড়ে যায়। পরিবেশ অ্যাকাডেমির সভাপতি বিশ্বজিৎ মুখোপাধ্যায়ের অভিযোগ, ‘‘ওখানে বোমা কোথা থেকে এল, আজ পর্যন্ত জানা গেল না। পুলিশের এমনই
তদন্ত! আবার, উলুবেড়িয়ায় এক কিশোরের এই পরিণতি!’’ তিন্নার ঘটনাটি নিয়ে হুগলি গ্রামীণ পুলিশের বক্তব্য, তদন্ত চলছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy