Advertisement
E-Paper

সমবায় ভোটে বিরোধীদের মারধর, ছাপ্পার অভিযোগ

বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় শাসক দলের তিন প্রার্থী আগেই জয়ী হন। দু’টি আসন জিতেছেন বিরোধীরা।

—প্রতীকী চিত্র।

—প্রতীকী চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০২ ডিসেম্বর ২০২৪ ০৮:৩৫
Share
Save

দীর্ঘ জল্পনা শেষে প্রায় তিন দশক পরে বৈদ্যবাটী-শেওড়াফুলি সমবায় ব্যাঙ্কের পরিচালনমণ্ডলী গঠনের নির্বাচন হল রবিবার। পরিসংখ্যানের বিচারে একতরফা জয় পেল তৃণমূল। তবে তাদের বিরুদ্ধে পুলিশের সামনেই বিরোধীদের মারধর, ছাপ্পা ভোটের অভিযোগ উঠল। তার প্রতিবাদে অবরোধ, পুলিশকে ঘিরে বিক্ষোভও হল। ভোট বাতিলের দাবি উঠল। যাবতীয় অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছেন তৃণমূল নেতৃত্ব।

পুলিশের দাবি, ভোট শান্তিপূর্ণ। ব্যাঙ্কের বিশেষ আধিকারিক (স্পেশাল অফিসার) প্রবীর পাণ্ডের দাবি, ‘‘ভোট অবাধ ও সুষ্ঠু ভাবে সম্পন্ন হয়েছে।’’ সকাল থেকে টানটান উত্তেজনায় পুলিশি নিরাপত্তায় ভোটগ্রহণ শুরু হয়। ব্যাঙ্ক সূত্রে জানা গিয়েছে, সেখানে মোট সদস্য (শেয়ার হোল্ডার) ১৩,০৮৮ জন। নির্বাচনে প্রায় ৯০ জন প্রার্থী ছিলেন। তৃণমূলের বিরুদ্ধে সিপিএম, ফরওয়ার্ড ব্লক ও কংগ্রেস একত্রিত হয়ে ‘ব্যাঙ্ক বাঁচাও মঞ্চ’-এর পক্ষে নির্বাচনে লড়ছে। বৈদ্যবাটী, চাঁপদানি ও ভদ্রেশ্বর শহরের ৯টি বিদ্যালয়ে ভোটগ্রহণ হয়। মোট ৪৪টি আসনের মধ্যে তৃণমূলের দখলে যায় ৪২টি। এর মধ্যে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় শাসক দলের তিন প্রার্থী আগেই জয়ী হন। দু’টি আসন জিতেছেন বিরোধীরা।

বাম-কংগ্রেস জোটের প্রার্থীদের অভিযোগ, ভোট শুরু হতেই পুলিশের সামনে শেওড়াফুলি সুরেন্দ্রনাথ বিদ্যানিকেতন ও বৈদ্যবাটী কল্পনা বসু বয়েজ় অ্যাকাডেমিতে তৃণমূলের লোকেরা বিরোধীদের মারধর করে ভোটকেন্দ্র থেকে বের করে দেয়। বুথের সামনে জমায়েত করে। অবাধে ছাপ্পা ভোট চলে। এ সবের প্রতিবাদে সকাল ১১টা নাগাদ শেওড়াফুলি ফাঁড়ির মোড়ে জিটি রোড অবরোধ করেন জোটের কর্মী-সমর্থকেরা। প্রায় দু’ঘণ্টা দফায় দফায় চলে অবরোধ। নাকাল হন সাধারণ মানুষ। বিজেপির ৩ জন প্রার্থী ছিলেন। তাঁরাও দলীয় পতাকা নিয়ে শামিল হন অবরোধে। ঘটনাস্থলে শ্রীরামপুর থানার আইসি সুখময় চক্রবর্তী এলে তাঁকে ঘিরে বিক্ষোভ চলে। এর পরেই পুলিশ বিক্ষোভকারীদের রাস্তা থেকে হটিয়ে দেয়। বুথের সামনে জমায়েতও সরায়। তবে পুলিশ সরতেই ফের জমায়েত হয়।

বিভাসচন্দ্র দাঁ বালিকা বিদ্যালয়ের এক ভোটারের কথায়, ‘‘দেখলাম, ১৫ মিনিটে দু’বার টিফিন এল ভোটকেন্দ্রে। তাও দরজা-জানলা বন্ধ করে। তবে আমি আমার ভোটটা দিতে পেরেছি।’’ সুরেন্দ্রনাথ বিদ্যানিকেতনের ভোটার, বৃদ্ধ যদুগোপাল ভৌমিকের অভিযোগ, ‘‘তৃণমূল নেতাদের সামনেই ওঁদের কর্মীরা আমাকে ঠেলে বের করে দিল। ভোট দিতে দিল না। এমন ভোট কখনও দেখিনি।’’

শেওড়াফুলি ২ কেন্দ্রের সিপিএম প্রার্থী প্রবীরকুমার সাহার অভিযোগ, ‘‘বিরোধী প্রার্থী ও এজেন্টদের মারধর করে বের করে দেওয়া হয়েছে। ভোটারদের ভোট দিতে দেওয়া হয়নি। বহিরাগতদের এনে ভোট লুট করেছে শাসক দল।’’ পক্ষান্তরে, চাঁপদানির বিধায়ক তথা তৃণমূলের শ্রীরামপুর-হুগলি সাংগঠনিক জেলা সভাপতি অরিন্দম গুঁইনের প্রতিক্রিয়া, ‘‘ভিত্তিহীন অভিযোগ। রাজ্যে তৃণমূল ক্ষমতায় আসার পর থেকে যত ভোট হয়েছে, বিরোধীদের মানুষ প্রত্যাখ্যান করেছেন। এই ফলাফলই প্রত্যাশিত ছিল।’’

সদস্যদের একাংশের বক্তব্য, দীর্ঘদিন ধরে নানা সমস্যায় জর্জরিত এই সমবায় ব্যাঙ্ক। ঋণ বাবদ বেশ কয়েক কোটি টাকা আদায় হয়নি। অনাদায়ী ঋণ কার্যত ব্যাঙ্কের গলায় ফাঁস হয়ে বসেছে! সমস্যা থেকে বেরিয়ে আসতে নয়া পরিচালকমণ্ডলী কী পদক্ষেপ করে, সেই প্রশ্ন রয়েছে।

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Sheoraphuli

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:

Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy

{-- Slick slider script --}}