প্রতীকী ছবি।
সরকারি নানা কাজে বা পরিষেবা পেতে আধার কার্ড বাধ্যতামূলক। কিন্তু সরকারি দফতরে গিয়ে আধার কার্ড করা বা সংশোধনের মূল হ্যাপা, ঘণ্টার পর ঘণ্টা লাইনে দাঁড়ানো। একাধিক দিন ঘুরেও কাজ হচ্ছে না— এমন অভিযোগও কম নয়। এই সুযোগে হুগলির চণ্ডীতলায় ব্যাঙের ছাতার মতো গজিয়ে উঠেছে আধার সংশোধন কেন্দ্র। সেখানে এই নিয়ে রীতিমতো কারবার চলছে।
নতুন কার্ড করতে বা সংশোধনের জন্য ওই কারবারিরা যেমন খুশি টাকা চাইছেন বলে অভিযোগ। সরকারি দফতরে ‘ঝঞ্ঝাট’ এবং সময় নষ্টের হাত থেকে বাঁচতে অতিরিক্ত টাকা গুনছেন বহু মানুষ। অনেকেরই অভিযোগ, প্রয়োজনের তুলনায় সরকারি দফতরে আধার সংশোধন কেন্দ্র কম। সেই সুযোগেই চণ্ডীতলার ভগবতীপুর, গঙ্গাধরপুর, বনমালিপুর, নবাবপুর, কলাছড়া, কৃষ্ণরামপুর প্রভৃতি এলাকায় রমরমিয়ে চলছে এই আধার কেন্দ্র। সেখানে অনেকেই যাচ্ছেন নতুন আধার কার্ড তৈরি বা সংশোধনের জন্য।
কত টাকা লাগছে?
খোঁজ নিয়ে জানা গেল, কারবারিরা ইচ্ছেমতো টাকা নেন। সর্বনিম্ন ৪০০ টাকা। নতুন আধারের ক্ষেত্রে ২০০০ হাজার টাকা পর্যন্ত দিতে হচ্ছে। সংশোধনের ক্ষেত্রে ত্রুটি অনুযায়ী এক থেকে দেড় হাজার টাকা নেওয়া হচ্ছে। অথচ, সরকারি কেন্দ্রে নতুন আধার কার্ড তৈরিতে টাকা লাগে না। সংশোধনের জন্য ৫০ অথবা ১০০ টাকা লাগে।
ওই সব বেসরকারি কেন্দ্রে যাওয়া অনেকের বক্তব্য, সরকারি কেন্দ্রে লাইন দেওয়ার ঝক্কি তো আছেই, তাতেও নির্দিষ্ট দিনে সুযোগ মিলবে কি না, তার নিশ্চয়তা নেই। সেই কারণেই বেশি টাকা খরচ করে তাঁরা বেসরকারি জায়গায় আসছেন। এখন ‘দুয়ারে সরকার’ শিবির চলছে। বিভিন্ন প্রকল্পে পরিষেবার জন্য আধার কার্ড প্রয়োজন হচ্ছে। সেই কারণে ওই সব কেন্দ্রে নতুন আধার তৈরি বা সংশোধনের চাহিদাও বেড়েছে।
ভগবতীপুরে এমনই একটি কেন্দ্রে আধার কার্ড সংশোধন করাতে যাওয়া স্থানীয় বাসিন্দা সোমনাথ দুলে বলেন, ‘‘পঞ্চায়েত থেকে বিনা পয়সায় আধার কার্ড করেছিলাম। সরকারি ভাবে ৫০ থেকে ১০০ টাকায় সংশোধন হয়। অথচ, এখানে শুনছি ৪৫০ টাকা লাগবে। সরকারি নজর এড়িয়ে এরা কী ভাবে এত টাকা নিচ্ছে?’’
এমনই একটি কেন্দ্রের মালিক বুবাই রায়ের দাবি, ‘‘সাধরণ মানুষের সুবিধার্থে আধার কার্ড সংশোধন করছি। রেশন কার্ডের সঙ্গে আধার নম্বর সংযোগও করা হয়। যে যেমন টাকা দিচ্ছে, সেটাই নেওয়া হয়।’’
বুধবার আধার কার্ড সংশোধনের জন্য সিঙ্গুরের একটি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের সামনে আগের রাত থেকে লাইন পড়ে। খোলা আকাশের নীচে সন্তান কোলে মহিলাকেও সেই ভিড়ে দেখা যায়। লাইনে দাঁড়ানো জনৈক সুজলা মণ্ডল বলেন, ‘‘আমার বাড়ির ঠিকানা পরিবর্তন করতে হবে। কয়েক বার এসে ফিরে গিয়েছি। এ বার তাই রাতেই চলে এসেছি, যাতে ফিরে যেতে না হয়। আধার কার্ডের তথ্য ঠিক না থাকলে তো অনেক কাজই আটকে যাবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy