শিক্ষিকা সাহিনা সুলতানা।
দীর্ঘদিন ধরে তিনি স্কুলে আসছেন ‘অনিয়মিত’ ভাবে। তা সত্ত্বেও প্রতি মাসের বেতন তুলে নিচ্ছেন বলে অভিযোগ উঠল তৃণমূলের এক শিক্ষিকা-নেত্রীর বিরুদ্ধে।
সাহিনা সুলতানা নামে খানাকুলের রাজহাটি বন্দর হাই স্কুলের ওই শিক্ষিকা হুগলি জেলা পরিষদের সদস্য। তাঁর বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ মানেননি সাহিনা। কিন্তু অনুব্রত মণ্ডলের মেয়ে সুকন্যার বিরুদ্ধে স্কুলে না গিয়ে বেতন তোলার অভিযোগ সামনে আসার পরে রাজহাটির ওই স্কুলের শিক্ষকদের একাংশ এবং গ্রামবাসীদের মধ্যেও সাহিনার বিরুদ্ধে ক্ষোভ দানা বাঁধে।
বুধবার খানাকুলের বিজেপি বিধায়ক সুশান্ত ঘোষ বিডিওর (খানাকুল-২) কাছে সাহিনার বিরুদ্ধে তদন্তের দাবি জানান। বৃহস্পতিবার স্কুল কর্তৃপক্ষও অতিরিক্ত জেলা পরিদর্শকের (আরামাবাগ) কাছে অভিযোগ দায়ের করলেন। অভিযোগপত্রের প্রাপ্তি স্বীকার করে অতিরিক্ত জেলা সহ-পরিদর্শক বৃন্দাবন ধাড়া বলেন, “স্কুল কর্তৃপক্ষ দু’বছর ধরে বিষয়টি জানাননি। অভিযোগপত্র জেলা স্কুল পরিদর্শকের কাছে পাঠানো হচ্ছে। তিনি প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করবেন।”
বিডিও শঙ্খ বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, তদন্ত শুরু হয়েছে। জেলা পরিষদের সাধারণ সদস্যের ক্ষেত্রে তাঁর জনপ্রতিনিধির দায়িত্ব এবং চাকরিস্থলে তাঁর ভূমিকা নিয়ে কী ব্যবস্থা আছে, তা দেখে পদক্ষেপ করা হবে।
প্রধান শিক্ষক নবেন্দু সামন্ত বলেন, “স্কুলে যোগ দেওয়ার পর মাঝে বিক্ষিপ্ত ভাবে সাহিনা কয়েকবার স্কুল এলেও গত এক বছর ধরে সমস্যাটা চলছে। আমাদের স্কুল পরিচালন কমিটির তরফে এবং আমি ব্যক্তিগত ভাবে গরহাজিরার বিষয়টি তাঁকে একাধিকবার জানালেও তিনি গুরুত্ব দেননি। এ নিয়ে বিভিন্ন মহল থেকে প্রশ্ন উঠছে।’’ একই বক্তব্য স্কুল সভাপতি শিবপ্রসাদ বন্দ্যোপাধ্যায়েরও।
পক্ষান্তরে, সাহিনার দাবি, অভিযোগ ঠিক নয়। তিনিও ব্লক প্রশাসনের কাছে তদন্ত চেয়েছেন বলে জানান। সাহিনা জানান, বাঁকুড়ার সোনামুখীর স্কুল থেকে ২০১৯ সালের অগস্ট-সেপ্টেম্বর মাস নাগাদ রাজহাটির স্কুলে যোগ দিয়েই মাতৃত্বকালীন ছুটি নেন। সাড়ে ৬ মাস পর ফের যোগদানের তিন দিন আগেই লকডাউন শুরু হয়। ২০২১ সালের ১৬ নভেম্বর স্কুল খোলার কয়েকদিন পরেই ফের দু’মাসের জন্য স্কুল বন্ধ হয়। পরে ফের স্কুল খোলার কয়েকদিন পরেই গরমের ছুটি পড়ে।
সাহিনার দাবি, ‘‘২০২১ সালের ১৬ ডিসেম্বর থেকে স্কুল খোলার পর একেবারেই যে যাইনি, তা নয়। মাঝে কয়েকদিন গিয়েছি। গরমের ছুটির পর মাসখানেক অসুস্থতার কারণে একেবারেই আসিনি। হাজিরা খাতায় সইও করিনি। আমার ৯০টি ছুটি পাওনা আছে।”
বিধায়ক বলেন, “আমরা খবর নিয়েছি, ওই শিক্ষিকা এখানে তিন বছরের চাকরিতে একদিনও স্কুলে আসেননি। তিনি বাড়িতে বসেই হাজিরা-খাতায় সই করার সুযোগ পেয়েছেন কি না, সেই তদন্তের দাবি করেছি আমরা।’’ একইসঙ্গে বিধায়কের দাবি, ওই শিক্ষিকাকে ছুটি উপভোগ করতে দেওয়ায় যাঁরা জড়িত, তাঁদের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নিতে হবে।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy