বিজেপির বিক্ষোভ। সোমবার চুঁচুড়ায়। নিজস্ব চিত্র
সন্দেশখালি-সহ রাজ্যের নানা জায়গায় নারী নির্যাতনের অভিযোগে সোমবার সকালে চন্দননগর পুলিশ কমিশনারের অফিস অভিযানেরডাক দিয়েছিল বিজেপির যুব মোর্চা। এ জন্য চুঁচুড়ার ঘড়ির মোড়ে পুলিশ ব্যারিকেড করায় সপ্তাহের প্রথম কাজের দিনের ব্যস্ত সময়ে ভুগতে হল ছাত্রছাত্রী থেকে শুরু করে বহু সাধারণ মানুষকে। ঘুরপথে তাঁদের গন্তব্যে পৌঁছতে হল।
পুলিশ সূত্রের দাবি, সাংসদ লকেট চট্টোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে বিজেপি যুব মোর্চার মিছিল ঘড়ির মোড়ে আসার কথা ছিল সকাল ১১টা নাগাদ। কিন্তু সেই মিছিল আসে ১টার পরে। নির্ধারিত সময়কে মাথায় রেখেই পোক্ত ব্যারিকেড করেছিল পুলিশ। বন্ধ করে দেওয়া হয় ওই রাস্তা। সাধারণ মানুষের সমস্যার কথা মেনে নিয়ে চন্দননগর কমিশনারেটের এক কর্তা বলেন, ‘‘এ ধরনের কর্মসূচিতে কিছুটা আগে প্রস্তুতি নিতে হয়। তাই সাড়ে ১০টা নাগাদ ব্যারিকেড দেওয়া হয়। কিন্তু ওরা (বিজেপি) একটু দেরিতেই এসেছে।’’
বিজেপির হুগলি সাংগঠনিক জেলার সভাপতি তুষার মজুমদার সকাল ১০টায় কর্মসূচি শুরু হওয়ার কথা মানেননি। তিনি বলেন, "সাড়ে ১১টার পর আমাদের জেলা কার্যালয় থেকে মিছিল শুরু হওয়ার কথা ছিল। তবে, কিছুটা দেরি হয়েছে।’’ তাঁর দাবি, পড়ুয়া কিংবা অফিসযাত্রীদের সমস্যা হোক, বিজেপি চায় না। এ দিনও রাস্তা আটকানোর কর্মসূচি ছিল না। পুলিশ আটকালে তাঁদের কিছু করার নেই।
৩ নম্বর গেটে দলীয় কার্যালয়ের সামনে থেকে মিছিল পিপুলপাতি হয়ে হাসপাতাল রোড ধরে ঘড়ির মোড়ে আসে। সেখানেই প্রথম ব্যারিকেডে আটকায় মিছিল। শ'তিনেক মানুষের সেই মিছিল অনেক চেষ্টাতেও ব্যারিকেড ভাঙতে পারেনি। লকেট পুলিশের কাছে দ্বিতীয় ব্যারিকেড পর্যন্ত যেতে দেওয়ার অনুরোধ জানান। তাঁরা পাঁচ জনের বেশি পুলিশ কমিশনারের অফিসে যাবেন না, এ কথাও জানান। এরপরে পুলিশ প্রথম ব্যারিকেড থেকে সরে যায়। গার্ডরেলের ব্যারিকেড ভাঙার চেষ্টা হলেও কাজ হয়নি। কয়েকজন বিজেপি কর্মী গার্ডরেলের সঙ্গে থাকা বাঁশের বাঁধন খুলে দিতেই হুড়মুড়িয়ে বাকিরা কিছুটা দূরে দ্বিতীয় ব্যারিকেডের দিকে এগিয়ে যান। সেখানে থেকে সাংসদ-সহ কয়েকজন পুলিশ কমিশনারের অফিসে গিয়ে স্মারকলিপি দিলে কর্মসূচি শেষ হয়।
লকেট বলেন, ‘‘সন্দেশখালি-সহ চারদিকে নারী নির্যাতনের ঘটনা ঘটছে। আমরা রাজ্যের মানুষের স্বার্থে পথে নেমেছি। তৃণমূলের পুলিশ আমাদের আটকাতে পারবে না।’’ এই কর্মসূচি নিয়ে চুঁচুড়ার তৃণমূল বিধায়ক অসিত মজুমদারের খোঁচা, ‘‘রাস্তা আটকে সমস্যা তৈরি করে লকেট সাধারণ মানুষের স্বার্থে কাজ করতে চাইছেন! অথচ, কোভিডের সময় লকেটকেই দেখতে পাযননি মানুষ।’’ লকেট এ কথা মানেননি।
তবে, দিনের ব্যস্ত সময়ে এই কর্মসূচি নিয়ে বহু মানুষ অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন। ব্যান্ডেল থেকে সাইকেলে আসা হুগলি কলেজিয়েট স্কুলের দ্বাদশ শ্রেণির এক ছাত্র বলে, ‘‘বাড়ি থেকে বেরোতে একটু দেরি হয়েছিল। তার উপর রাস্তা বন্ধ থাকায় ঘুরপথে যেতে গিয়ে সময়ের পরে স্কুলে পৌঁছেছি। আর একটু দেরি হলেই স্কুলে ঢুকতেই পারতাম না।’’ বালিকা বাণীমন্দিরের ষষ্ঠ শ্রেণির এক ছাত্রীকে রোজ সাইকেলে চাপিয়ে স্কুলে নিয়ে যান মা। ওই মহিলা জানান, ঘড়ির মোড়ের রাস্তা বন্ধ দেখে কোনওক্রমে সাইকেল ঘুরিয়ে খাদ্য ভবনেরদিক থেকে স্কুলে পৌঁছতে হয়েছে।তাঁর ক্ষোভ, ‘‘স্কুলের সময়ে এ ভাবে রাস্তা বন্ধ করলে হয়! এ ধরনের কর্মসূচিতে প্রশাসনের অনুমতি দেওয়াই উচিত নয়।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy