সবে মিলি: সাফাই চলছে আরামবাগ শহরে। ছবি: সঞ্জীব ঘোষ।
শহরে পতাকা-ফেস্টুন খোলা শুরু করেছিল তৃণমূল পরিচালিত আরামবাগ পুরসভা। বিজেপি শুরু করল মনীষীদের মূর্তি এবং আবর্জনা সাফাই। সিপিএমও নিজেদের সব পোস্টার খুলে নিয়ে বিভিন্ন জায়গায় ব্লিচিং ছড়াচ্ছে। আর এমন প্রতিযোগিতায় আরামবাগ শহর ক্রমশ পরিচ্ছন্ন হয়ে উঠেছে। রাজনৈতিক দলের হিংসার বদলে এমন সুস্থ প্রতিযোগিতায় খুশি
স্থানীয় বাসিন্দারাও।
আবর্জনাময়, রাজনৈতিক পতাকা-ফেস্টুনে মোড়া শহর নিয়ে স্থানীয় মানুষের দীর্ঘদিনের ক্ষোভ-বিক্ষোভ। পুরসভার বিরুদ্ধে উদাসীনতার অভিযোগ ছিল। গত ২৫ জানুয়ারি পুরমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম আরামবাগ হয়ে গোঘাটের কামারপুকুরে একটি কর্মসূচিতে যান। আর ২৬ তারিখ সকাল থেকেই পুরসভা শহরজুড়ে থাকা পতাকা ফেস্টুন খোলা শুরু করে। সেই কাজ পরিচালনা করেন পুর প্রশাসক তথা তৃণমূল নেতা স্বপন নন্দী। তার দু’দিন পরেই শহরে বিজেপির শুভেন্দু অধিকারীর সভা ছিল। আচমকা পুরসভার এই সিদ্ধান্তে ‘যড়যন্ত্র’ নিয়ে বিজেপি অভিযোগ তুললেও পুরসভার উদ্যোগে সাড়া দিয়ে বাধা দেয়নি। সিপিএমও একই ভাবে কয়েকদিনের মধ্যেই মহম্মদ সেলিমের পদযাত্রা থাকলেও নিজেদের দলীয় পতাকা ফেস্টুন খুলে নেয়। এবং সংশ্লিষ্ট সভার দিনগুলোতে পতাকা-ফেস্টুন লাগালেও সভা শেষেই নিজের নিজের পতাকা খুলেও নেয়।
বুধবার থেকে বিজেপির পক্ষেও শহর সাফাই অভিযান শুরু করেছে। ওই দিন তারা গৌরহাটি মোড়ে বিবেকানন্দ মূর্তি এবং হাসপাতাল মোড়ে নেতাজির মূর্তি সাফাই সহ লিঙ্করোডে যত্রতত্র পড়ে থাকা আবর্জনা পরিষ্কার করে। বিজেপি আরামবাগ সাংগঠনিক জেলা সভাপতি বিমান ঘোষ বলেন, “শহর পরিচ্ছন্নতা নিয়ে তৃণমূল পরিচালিত পুরসভা উদাসীন। ওদের পোস্টার-ফেস্টুনেই শহরে মনীষীদের মূর্তি ঢাকা পড়েছিল। অপরিষ্কার নিকাশি নালা, আবর্জনা, পলিথিন যত্রতত্র ছড়িয়ে আছে। পুরসভার না করা কাজগুলো আমরা স্বচ্ছ ভারত মিশন প্রকল্পে করছি। ৩-৪ দিন অন্তর শহর সাফাই অভিযান চলবে।”
সিপিএমের পক্ষেও তাদের সমস্ত পতাকা খুলে নেওয়া হয়েছে। শহর পরিচ্ছন্ন রাখতে পাড়া ধরে ধরে সাফাই অভিযানও শুরু করেছে। কোথাও কোথাও ব্লিচিং ছড়ানো হচ্ছে। সিপিএমের আরামবাগ এরিয়া কমিটির সম্পাদক পূর্ণেন্দু চট্টোপাধ্যায় বলেন, “শহরটা অপরিষ্কার করে শাসক দলই। একই পথে বিজেপিও পতাকা-ফেস্টুনে ঢেকে দিচ্ছে শহর। আমরা বরাবর প্রতিবাদ করেছি। বলেছি, বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের সভা বা বিশেষ কর্মসূচি হলে পতাকা-ফেস্টুন টাঙানো হলেও তা সভার পরেই খুলে নিতে হবে। এবং এই কাজের ধারাবাহিকতা যাতে বজায় রাখা যায় সবাই সচেতন থাকবে।”
পুর-প্রশাসক স্বপন নন্দী বলেন, “শহর পরিচ্ছন্ন রাখার ব্যাপারে সবার উদ্যোগ এবং সচেতনতা কাম্য।” পরে বিজেপির মূর্তি সাফাই নিয়ে খোঁচাও রাখেন, “মূর্তি ভাঙাভাঙির সংস্কৃতি বেরিয়ে তাঁদের শুভবুদ্ধি হয়েছে।”
নেতাজি মোড় সংলগ্ন ৫ নম্বর ওয়ার্ডের শিবশঙ্কর কর্মকার, ১৩ নম্বর ওয়ার্ডের কাজিপাড়ার শঙ্কর কুন্ডু, ৩ নম্বর ওয়ার্ডের টালাপার্ক এলাকার বিমল রায় প্রমুখর বক্তব্য, “দলগুলো নিজেদের মধ্যে খেউর করলেও শহর পরিচ্ছন্নতা নিয়ে তাদের স্বাস্থ্যকর প্রতিযোগিতা চমৎকার।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy