Advertisement
২৩ ডিসেম্বর ২০২৪
Children Day

Children's day: শিশু দিবসেও মুক্তি নেই সেলিমদের

উলুবেড়িয়া বাণীতলা ডাম্পিং গ্রাউন্ডে ভোর থেকে আবর্জনার গাড়ি ঢোকে। তার পিছনে দৌড়তে শুরু করে জনা কুড়ি কচিকাঁচা।

উলুবেড়িয়ার বাণীতলা ডাম্পিং গ্রাউন্ডে শিশুরা।

উলুবেড়িয়ার বাণীতলা ডাম্পিং গ্রাউন্ডে শিশুরা। নিজস্ব চিত্র।

সুব্রত জানা
উলুবেড়িয়া শেষ আপডেট: ১৫ নভেম্বর ২০২১ ০৬:৪১
Share: Save:

শিশু দিবসের কথা জানে না ওরা। জানলেও অবশ্য কিছু যায় আসে না উলুবেড়িয়া বাণীতলা ডাম্পিং গ্রাউন্ডে আবর্জনা ঘাঁটা সেলিম, রবিউল, সিরাজদের (প্রত্যেকের নাম পরিবর্তিত)। কাচ ভাঙা, লোহা ভাঙা কুড়িয়ে বিক্রি করতে না পারলে জুটবে না টাকা। আর সেটা বাড়ির বড়দের হাতে তুলে দিতে না পারলে সে দিনের খাবারও হয়তো জুটবে না। তাই রবিবার, শিশু দিবসের দিনেও মুক্তি নেই এই খুদেদের।

স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বছর দশেকের সেলিম ও রবিউল স্থানীয় একটি স্কুলের চতুর্থ শ্রেণির পড়ুয়া। আর বছর বারোর সিরাজ পড়ে স্থানীয় একটি স্কুলে ষষ্ঠ শ্রেণিতে। করোনা পরিস্থিতিতে স্কুল বন্ধ। স্কুলে গেলে যেটুকু পড়ার ছোঁয়াচ মেলে, গত দু’বছরে সেটাও বন্ধ। বাড়িতে পড়ার মতো পরিস্থিতিও নেই তাদের। এদের কারও বাবা জরির কাজ করেন। আবার কারও বাবা ভ্যান চালিয়ে সংসার টানেন। তাই সংসারের অভাব মেটাতে শৈশবেই রোজগারের জন্য নামতে হয়েছে হালিম-জাহিরদের।

উলুবেড়িয়া বাণীতলা ডাম্পিং গ্রাউন্ডে ভোর থেকে আবর্জনার গাড়ি ঢোকে। তার পিছনে দৌড়তে শুরু করে জনা কুড়ি কচিকাঁচা। নোংরা ঘেঁটে প্লাস্টিকের বোতল, কাচ ভাঙা, লোহা ভাঙা কুড়িয়ে বিক্রি করে রোজগার হয় দিনে ৫০ থেকে ৬০ টাকা। দিনের শেষে সেই টাকা বাবা-মায়ের হাতে তুলে দেয় সেলিম, রবিউল, সিরাজরা। তা দিয়ে যতটা সংসারে সাশ্রয় হয়!

সিরাজ বলে, ‘‘চতুর্থ শ্রেণি পাশ করে পঞ্চম শ্রেণিতে ভর্তি হয়েছিলাম। পরীক্ষা না দিয়েই ষষ্ঠ শ্রেণিতে উঠে গেলাম। এখনও একদিনও ক্লাস করিনি। কবে স্কুল খুলবে জানি না। স্কুল খুললে রোজ ঠিক করে খেতে তো পাব!’’ সেলিমের বাবা শেখ হায়দরের (নাম পরিবর্তিত) কথায়, ‘‘সংসারে সাতটা পেট চালাতে পারি না। স্কুলের সময়ও ছেলেটা কাজ করে। এখন স্কুল নেই। বেশি সময় কাজ করে বেশি রোজগার করতে পারে।’’ রবিউলের বাবা বলেন, ‘‘অভাবের সংসার। ছেলেটা রোজগার করে আনলে সুবিধাই হয়। তবে আমি চাই, ছেলেটা পড়ুক। সবই তো হচ্ছে। এ বার ছোটদেরও ক্লাস শুরু হলে ভাল হয়।’’

সমাজকর্মী রহিমা খাতুন বলেন, ‘‘করোনা কালে অনেক মানুষ কাজ হারিয়েছেন। ফলে সংসারের অভাব মেটাতে শিশুদেরও কাজে বেরোতে হয়েছে। এটা কাম্য নয়। এমন শিশুদের মূলস্রোতে ফেরাতেই হবে। এটা প্রশাসনের দেখা উচিত।’’

উলুবেড়িয়া পুরসভার স্যানিটারি বিভাগের চেয়ারম্যান শেখ ইনামুর রহমান বলেন, ‘‘ওই শিশুদের মূলস্রোতে ফিরিয়ে আনার জন্য পুরসভা ইতিমধ্যেই পদক্ষেপ করেছে। স্কুলছুটদের ফের ভর্তি করানো হবে। ওই সব শিশুদের পরিবার যাতে কাজ পায় তার চেষ্টা করা হবে।’’

অন্য বিষয়গুলি:

Children Day
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy