করোনার প্রকোপ বাড়লেও অবাধ ঘোরাঘুরি চন্দননগর স্ট্র্যান্ডে। ছবি: তাপস ঘোষ
চন্দননগরে পুরভোটের বাকি আর ৮ দিন। এমন একটা সময়ে এই নির্বাচন হচ্ছে, যখন করোনার তৃতীয় ঢেউ এসে পড়েছে। দিন কয়েক আগেই এই পুর এলাকার ৯টি ওয়ার্ড ‘গণ্ডিবদ্ধ এলাকা’ (কন্টেনমেন্ট জ়োন) হিসেবে ঘোষণা করেছে হুগলি জেলা প্রশাসন। কিন্তু করোনার প্রকৃত পরিস্থিতি এখানে এখন কী? কত জন সংক্রমিত? এই আবহে ৩৩ ওয়ার্ডের এই পুরসভায় ভোট করা কতটা যুক্তিযুক্ত? ভোট-ময়দানে এমন নানা প্রশ্ন ঘুরপাক খাচ্ছে শহর জুড়ে।
এই শহরের কত জন বাসিন্দা এই মুহূর্তে সংক্রমিত, জেলা প্রশাসন, স্বাস্থ্য দফতর এবং পুরসভার শীর্ষ মহলে যোগাযোগ করেও তা জানা যায়নি। তবে পুরসভা সূত্রের খবর, পুর-কমিশনার স্বপন কুণ্ডু নিজেই সংক্রমিত। বিচ্ছিন্নবাসে রয়েছেন।
সাধারণ মানুষের একাংশের বক্তব্য, নির্বাচন যে হেতু কয়েক দিন পরেই, এই সময়ে শহরের সংক্রমণের প্রকৃত চিত্র প্রকাশ করা উচিত। শহরে সংক্রমিতের নির্দিষ্ট সংখ্যা জানাতে না পারলেও জেলা স্বাস্থ্য দফতরের এক আধিকারিক বলেন, ‘‘যেটা দেখতে পাচ্ছি, মানুষের মধ্যে সচেতনতা আগের তুলনায় অনেক বেড়েছে। পুলিশ-প্রশাসন সক্রিয়। ধরপাকড় চলছে।’’ তাঁর সংযোজন, ‘‘এখন গোটা ওয়ার্ড সার্বিক ভাবে গণ্ডিবদ্ধ হয় না। ওয়ার্ডের কোনও বাড়ি বা আবাসন ধরে হয়। ফলে, ৯টি ওয়ার্ড পুরোপুরি গণ্ডিবদ্ধ, এমন নয়। তার কোনও কোনও অংশ গণ্ডিবদ্ধ।’’ এ ব্যাপারে অনেকেরই অবশ্য বক্তব্য, সে ক্ষেত্রে কোন কোন অংশ গণ্ডিবদ্ধ, প্রশাসন তা নির্দিষ্ট না করায় বিভ্রান্তি তৈরি হয়েছে।
পুলিশ সূত্রের দাবি, স্বাস্থ্যবিধি নিয়ে তাঁদের তরফে ক্রমাগত প্রচার করা হচ্ছে। মাস্ক না-পরে রাস্তায় বেরোলে গ্রেফতার করে বিপর্যয় মোকাবিলা আইনের ধারায় মামলা করা হচ্ছে। গত কয়েক দিন ধরে দৈনিক ২৫-৩০ জন গ্রেফতার হচ্ছেন। সার্বিক ভাবে মাস্ক পরার প্রবণতা যে বেড়েছে, শহর ঘুরে মালুম হচ্ছে। তবে, দোকান-বাজারে মাস্কহীন কিছু লোকও চোখে পড়ছে। পুলিশের দাবি, এই অংশকে সচেতন করতেই নজরদারি চলছে।
নির্বাচন কমিশনের নিয়ম অনুযায়ী প্রার্থী-সহ পাঁচ জনের বেশি লোক নিয়ে প্রচার নিষেধ। ওই বিধি ভাঙায় গত রবিবার বিজেপির পুরশুড়ার বিধায়ক বিমান ঘোষ-সহ ৭ জনকে পুলিশ গ্রেফতার করে। ধৃতদের মধ্যে ২৬ নম্বর ওয়ার্ডের বিজেপি প্রার্থী সন্ধ্যা দাসও ছিলেন। ঘণ্টা দু’য়েক থানায় বসিয়ে তাঁদের জামিনে ছেড়ে দেওয়া হয়। অন্য কোনও দলের বিরুদ্ধে বিধি ভেঙে অতিরিক্ত লোক নিয়ে প্রচারের অভিযোগ বিশেষ শোনা যায়নি।
তবে, করোনার এই পরিস্থিতিতে ইতিমধ্যেই নির্বাচন স্থগিতের দাবি জানিয়েছে ফরওয়ার্ড ব্লক। একই দাবি চন্দননগরের একাধিক গণ-সংগঠনেরও। শহরের বাসিন্দা বিশ্বজিৎ মুখোপাধ্যায় ও শঙ্কর কুশারী লিখিত ভাবে প্রশাসনের কাছে দাবি জানিয়েছেন, একান্তই ভোট করতে হলে প্রার্থীদের সকলের করোনা পরীক্ষা করা হোক। কারণ, বাড়ি বাড়ি ঘুরে প্রচারের সময় প্রার্থীদের সঙ্গে সাধারণ মানুষের নিবিড় সংযোগ ঘটছে। অনেক ক্ষেত্রেই প্রার্থী জানেন না, তিনি সংক্রমিত কি না। প্রচার-পর্ব শেষে ফের প্রার্থী এবং তাঁদের নির্বাচনী এজেন্টদের পরীক্ষা করা উচিত। একই ভাবে ভোট গণনার আগে নির্বাচন কমিশনের আধিকারিক ও কর্মী-সহ সংশ্লিষ্ট সকলের করোনা পরীক্ষা করা দরকার।
জেলা প্রশাসনের আধিকারিকদের বক্তব্য, নির্বাচন কমিশনের নির্দেশিকা অনুযায়ী নির্বাচন প্রক্রিয়া চালানো হচ্ছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy