ডাকাতির পরে তছনছ ঘরের জিনিসপত্র। নিজস্ব চিত্র
থানা থেকে ঢিল ছোড়া দূরত্বে এক অবসরপ্রাপ্ত সরকারি কর্মীর বাড়ির গেটের তালা ও দোতলার দরজা ভেঙে ঢুকে লুটপাট চালাল একদল দুষ্কৃতী। আলমারি খুলে তারা কয়েক লক্ষ টাকার সোনার গয়না এবং নগদ প্রায় ৪০ হাজার টাকা হাতিয়ে নেয়। দুষ্কৃতীরা গৃহকর্তা এবং তাঁর স্ত্রীকে বেধড়ক মারধর করে। তাঁরা রক্তাক্ত হন। দুষ্কৃতীদের রডের আঘাতে মাথা ফাটে দম্পতির মেয়েরও। শেষে তিন জনকেই বেঁধে রেখে দুষ্কৃতীরা চম্পট দেয়।
শুক্রবার রাত ৩টে নাগাদ এই ঘটনা জগৎবল্লভপুরের কালীতলা বাজারের। আক্রান্তদের অভিযোগ, ঘটনার পরেই তাঁরা পুলিশকে জানানোর জন্য ফোন করলেও জগৎবল্লভপুর থানা ফোন ধরেনি। পরে তাঁরা বিষয়টি লালবাজারে জানান। সেখান থেকে জানানো হয় হাওড়ার গ্রামীণ এলাকার পুলিশ সুপারের অফিসে। পুলিশ সুপারের অফিস থেকে জানানো হয় জগৎবল্লভপুর থানায়। ভোররাতে তদন্তে আসে জগৎবল্লভপুর থানার পুলিশ।
অভিযোগ স্বীকার করে হাওড়া গ্রামীণ জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর) অলকানন্দ ভাওয়াল বলেন, ‘‘ঝড়বৃষ্টির জন্য টেলিফোন লাইনের সমস্যা হয়েছিল। ফোন পাওয়ামাত্রই পুলিশ পৌঁছে যায় ঘটনাস্থলে। তদন্ত শুরু হয়েছে।’’
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই দোতলা বাড়িটি পরিবহণ দফতরের অবসরপ্রাপ্ত কর্মী প্রভাসকুমার ঘোষের। দোতলায় তিনি স্ত্রী কল্যাণী এবং মেয়ে শিল্পাকে নিয়ে থাকেন। একতলা অনুষ্ঠানের জন্য ভাড়া দেওয়া হয়। শুক্রবার রাতে প্রভাসবাবু ও তাঁর স্ত্রী একটি ঘরে এবং শিল্পা অন্য একটি ঘরে ঘুমোচ্ছিলেন। মুখে কালো কাপড় বেঁধে দুষ্কৃতীরা ওই বাড়িতে চড়াও হয়।
প্রভাসবাবু জানান, দুষ্কৃতীরা পাঁচিল টপকে ঢুকেছিল। প্রথমে একতলার গেট, তারপরে তাঁর ঘরের দরজা ভাঙে তারা। প্রভাসবাবুরা কিছু বুঝে ওঠার আগেই শুরু হয় মারধর। শব্দ শুনে পাশের ঘর থেকে শিল্পা বেরিয়ে এলে তাঁকে রড দিয়ে মারা হয়। মাথা ফেটে যাওয়ায় শিল্পা বসে পড়েন। দুষ্কৃতীরা হিন্দিতে কথা বলছিল। তারা আলমারির চাবি চায়। তারপরে নিজেরাই আলমারির মাথা থেকে চাবি নিয়ে তা খুলে টাকা-গয়না হাতায়। যাওয়ার আগে দুষ্কৃতীরা বাড়ির সিসিক্যামেরার হার্ড-ডিক্সও খুলে নিয়ে যায়।
প্রভাসবাবু বলেন, ‘‘ওরা মোট ছ’জন এসেছিল। পাঁচ জন উপরে উঠেছিল। একজন নীচে ছিল। তিন জনের হাতে পিস্তল ছিল। দু’জনের হাতে রড। মেয়ের বিয়ের জন্য টাকা-গয়না রেখেছিলাম। সব নিয়ে গেল। ওরা চলে যাওয়ার পরে ওই অবস্থায় কোনও রকমে পাশেই থাকা ভাইপোকে ফোন করি।’’
প্রভাসবাবু ভাইপো সৌভিক ঘোষ বলেন, ‘‘কাকার ফোন পেয়ে সঙ্গে সঙ্গে এসে দেখি রক্তাক্ত অবস্থায় সকলে পড়ে আছেন। থানায় একাধিকবার ফোন করলেও সাড়া মেলেনি। পরে বাধ্য হয়ে লালবাজারে ফোন করি। জানতে পারি, লালবাজার থেকে হাওড়া গ্রামীণ জেলা এসপি অফিসে ফোন করে বিষয়টি জানায়। প্রায় দু’ঘণ্টা পরে পুলিশ আসে। ওঁদের চিকিৎসার ব্যবস্থা করি।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy