হুগলির বলাগড়ে প্রস্তাবিত ছোট বন্দরের জন্য সড়কপথ তৈরি করতে সরেজমিন পরিদর্শন করে গেলেন কেন্দ্র ও রাজ্যের সংশ্লিষ্ট দফতরের আধিকারিকেরা। ওড়ানো হল ড্রোন। শনিবার ওই পরিদর্শনের পরেই নবান্নে দু’পক্ষের মধ্যে বৈঠকও হয়েছে।
কলকাতা পোর্ট ট্রাস্টের এক আধিকারিক বলেন, ‘‘রাজ্য সরকারের সঙ্গে সমন্বয় করে কথাবার্তা এগোচ্ছে। রাজ্য সহযোগিতা করছে। ওই প্রকল্প নিয়ে আমরা আশাবাদী।’’
বন্দর সূত্রের খবর, কলকাতা বন্দরের ভার লাঘব করতে বলাগড়ে বন্দর তৈরির ভাবনা হয়েছে। এখানকার ভবানীপুর চরে প্রায় ৩০০ একর জমিতে ওই প্রকল্প হওয়ার কথা। একে বলা হচ্ছে ‘বলাগড় গেট’। বন্দর কর্তৃপক্ষ গোটা পরিকাঠামো তৈরির দায়িত্ব কোনও সংস্থাকে দেবেন। নিজেদের খরচে ওই সংস্থা সেই কাজ করবে। তার পরে নির্দিষ্ট কিছু বছরের জন্য তারাই বন্দরটি চালিয়ে খরচ এবং লাভ তুলবে। তার পরে কলকাতা বন্দর কর্তৃপক্ষ সরাসরি তা চালাবেন।
এখানে গঙ্গার যা নাব্যতা, তাতে বড় জাহাজ ঢুকবে না। পরিকল্পনা রয়েছে, ছোট জাহাজে বিশেষত কয়লা, আকরিক ইত্যাদি এনে খালাস করে সড়কপথে গন্তব্যে পাঠানো হবে। এই বন্দরের অদূরেই এসটিকেকে রোড। দিল্লি রোড এবং দুর্গাপুর এক্সপ্রেসওয়ের দূরত্বও খুব বেশি নয়। ফলে, সড়কপথের সুবিধা পুরোদস্তুর মিলবে। সেই কথা ভেবেই এই জায়গাটিকে বন্দরের জন্য নির্বাচন করা হয়েছে।
কিছু বিষয়ে বিশেষত বন্দর থেকে এসটিকেকে রোড পর্যন্ত রাস্তা তৈরি নিয়ে কিছু সমস্যা হচ্ছিল। প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, বেশ কয়েক বছর আগে ওই এলাকায় একটি বিদ্যুৎ প্রকল্প করার জন্য সিইএসসি একটি সেতু তৈরি করে। প্রকল্পটি হয়নি। ওই সেতুর কাছ থেকে এসটিকেকে রোড পর্যন্ত রাস্তা তৈরির জন্য শনিবার সরেজমিনে সমীক্ষা হয়। পোর্ট ট্রাস্ট, পূর্ত দফতর এবং সিইএসসি-র আধিকারিকেরা ওই দলে ছিলেন। বিডিও (বলাগড়) সুপর্ণা বিশ্বাস-সহ প্রশাসনের অন্য আধিকারিকেরাও ছিলেন। ছিলেন জেলা পরিষদের সদস্য পূজা ধর কর্মকার, শ্রীপুর বলাগড় পঞ্চায়েতের প্রধান নবীন গঙ্গোপাধ্যায়, জিরাট পঞ্চায়েতের প্রধান তপন
দাস প্রমুখ।
পরিদর্শনের রিপোর্ট নিয়ে নবান্নে বৈঠক হয় পূর্ত দফতরের প্রধান সচিব অন্তরা আচার্যের উপস্থিতিতে। পোর্ট ট্রাস্ট, পূর্ত দফতরের অন্য আধিকারিক এবং সিইএসসি-র কর্তারাও ছিলেন। জেলা সংখ্যালঘু উন্নয়ন দফতরের আধিকারিক সমীরকুমার দে, ডিএলএলআরও কৃষ্ণেন্দু বাগচী এবং বলাগড়ের বিডিও সুপর্ণা বিশ্বাসও ছিলেন। ড্রোনে তোলা ছবি দেখেন অন্তরা আচার্য।
স্থানীয়েরা জানান, ১৯৭৬ সালে বন্দর করার জন্য বন্দর কর্তৃপক্ষ এখানে জমি কিনেছিল। তবে,
প্রকল্প হয়নি। এ বার হবে বলে বন্দর কর্তৃপক্ষ আশাবাদী।
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)