হাওড়া ব্রিজে ওঠার মুখে বিজেপির বিক্ষোভ। কর্মী, সমর্থকদের প্রিজন ভ্যানে তুলছে পুলিশ। — নিজস্ব চিত্র।
আরজি কর-কাণ্ডের প্রতিবাদে মঙ্গলবার হাওড়া ব্রিজ অভিযানের কর্মসূচি ছিল বিজেপির। সেতুতে ওঠার মুখে তাঁদের আটকে দেয় পুলিশ। বসানো হয় ব্যারিকেড। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে নামানো হয় র্যাফ। সেই ব্যারিকেড ভেঙে এগনোর চেষ্টা করেন বিজেপি নেতা, কর্মীরা। তখনই পুলিশের সঙ্গে শুরু হয় ধস্তাধস্তি। এই ঘটনায় বিজেপি নেতা তথা পুরুলিয়ার সাংসদ জ্যোতির্ময় সিংহ মাহাতো-সহ কয়েক জনকে আটক করা হয়েছে। সন্ধ্যার ব্যস্ত সময়ে এই বিক্ষোভের কারণে তৈরি হয়েছে তীব্র যানজট। এমজি রোড, স্ট্র্যান্ড রোডে আটকে পড়েন অফিসফেরত বহু যাত্রী।
মঙ্গলবার বিকেল ৫টা থেকে বিজেপির হাওড়া ব্রিজ অভিযান মিছিল শুরু হয়। নেতৃত্বে ছিলেন বিজেপি নেতা জ্যোতির্ময়। বিক্ষোভকারীদের আটকাতে হাওড়া ব্রিজে ওঠার রাস্তা বন্ধ করে দেয় পুলিশ। সে সময় ব্যারিকেড টপকে হাওড়া ব্রিজে ঢোকার চেষ্টা করেন বিক্ষোভকারীরা। পুলিশ বাধা দিলে শুরু হয় ধস্তাধস্তি। এর পর জ্যোতির্ময় সমর্থকদের নিয়ে অন্য রাস্তা দিয়ে ব্রিজের কাছে পৌঁছন। ব্রিজে উঠতে বাধা দিলে সেখানে বসে পড়েন তাঁরা। স্লোগান দিতে থাকেন। পুলিশ তাঁদের সরানোর চেষ্টা করলে ধুন্ধুমার কাণ্ড হয় বলে অভিযোগ। বিজেপি কর্মীদের চ্যাংদোলা করে নিয়ে যায় পুলিশ। জ্যোতির্ময়-সহ কয়েক জনকে আটক করে পুলিশ ভ্যানে তোলা হয়।
অন্য দিকে, মঙ্গলবার সল্টলেকে কেন্দ্রীয় শিক্ষামন্ত্রী ধর্মেন্দ্র প্রধানের উপস্থিতিতে একটি সরকারি কর্মসূচিতে উপস্থিত ছিলেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি তথা শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী সুকান্ত মজুমদার। তাঁরও হাওড়া ব্রিজ অভিযানে যোগ দেওয়ার কথা ছিল। শেষ পর্যন্ত তিনি যাননি। বিজেপি সূত্রের খবর, বুধবার থেকে শ্যামবাজারে যে ধর্না কর্মসূচি রয়েছে দলের, সেই নিয়ে আলোচনার জন্য তিনি দফতরে চলে যান।
আরজি করে চিকিৎসককে ধর্ষণ এবং খুনের অভিযোগ উঠেছে। প্রতিবাদে চলতি সপ্তাহ জুড়ে কর্মসূচি ঘোষণা করেছে বিজেপি। বুধবার থেকে পাঁচ দিন ধরে শ্যামবাজারে ধর্না দেবে তারা। সেই কর্মসূচিতে অনুমোদন দিয়েছে কলকাতা হাই কোর্ট। বৃহস্পতিবার স্বাস্থ্যভবন ঘেরাওয়ের ডাক দিয়েছে বিজেপি। তার আগে মঙ্গলবার স্বাস্থ্যভবনে বিক্ষোভ দেখায় সঙ্ঘের ছাত্র সংগঠন অখিল ভারতীয় বিদ্যার্থী পরিষদ (এবিভিপি)। সিটি সেন্টারে জমায়েত হয়ে স্বাস্থ্যভবনের দিকে মিছিল করে যাওয়ার চেষ্টা করেন তাঁরা। পুলিশ অবশ্য মঙ্গলবার এবিভিপি নেতা-কর্মীদের সল্টলেকের সেক্টর ফাইভের স্বাস্থ্যভবন পর্যন্ত যেতে দেয়নি। প্রায় দু’কিলোমিটার আগে ইন্দিরা ভবনের অদূরে আটকে দেওয়া হয় মিছিল। সেখানেই রাস্তায় বসে বৃষ্টির মধ্যে প্রথমে স্লোগান দিতে থাকেন এবিভিপি কর্মীরা। এর পর তাঁরা ব্যারিকেড ভেঙে এগোতে শুরু করলে উত্তেজনা ছড়ায়। এর কিছু ক্ষণের মধ্যেই শুরু হয় অশান্তি। পুলিশ জোর করে অবরোধ তুলতে গেলে শুরু হয় সংঘর্ষ। ইট ছোড়াছুড়ি, লাঠিচার্জে কার্যত রণক্ষেত্রের চেহারা নেয় গোটা এলাকা। বেশ কয়েক জন এবিভিপি কর্মীকে আটক করে ভ্যানে তোলে পুলিশ। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় বিজেপির হাওড়া ব্রিজ অভিযানেও চলল ধরপাকড়।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy