তপন মোদকের হাতে রিকশা তুলে দেওয়া হচ্ছে। নিজস্ব চিত্র।
প্রবাসী এক বাঙালি দম্পতির সহযোগিতায় জীবনে নতুন দিশা খুঁজে পেলেন অসহায় এক রিকশা চালক। বালি থানার পুলিশের সহযোগিতায় তাঁকে কিনে দেওয়া হল নতুন রিকশা।
গত ৯ জানুয়ারি বালি বাজার এলাকা দিয়ে টোটোয় চেপে বাড়ি ফিরছিলেন রিনা নামে এক গৃহবধু। সন্তানসম্ভবা মেয়ের চিকিৎসার জন্য ৩৪ হাজার টাকা নিয়ে যাচ্ছিলেন তিনি। অসাবধানতাবশত টাকাভর্তি ব্যাগটি রাস্তায় পড়ে যায়। সেই সময় রিকশা চালক তপন মোদক ওই রাস্তা দিয়ে রিকশা নিয়ে যাচ্ছিলেন। ব্যাগটি কুড়িয়ে নিয়ে তিনি বাড়ি চলে যান। ব্যাগ খুলে এত টাকা দেখে হতবাক হয়ে যান তিনি। এই টাকা থেকে তেরো হাজার টাকা দিয়ে নতুন রিকশা কেনার বন্দোবস্ত করেন তিনি।
ইতিমধ্যে টাকা খোয়া যাবার পর বালি থানায় অভিযোগ দায়ের করেন রিনা। তদন্ত শুরু করে পুলিশ। সিসিটিভি ফুটেজ দেখে তপনকে শনাক্ত করে পুলিশ। তার পর তাঁকে ডেকে পাঠানো হয় থানায়। তপন পুলিশের কাছে দাবি করেন, তার অভাবের সংসার। ভাড়ার রিকশা চালিয়ে স্ত্রী এবং ছেলেকে নিয়ে কোনও রকমে সংসার টেনে চলেছেন। তাই টাকা পেয়ে নতুন রিকশা কেনার কথা ভাবেন। তবে বাকি টাকা রাখা আছে বলেও জানান তিনি। সেই টাকা পুলিশকে দিয়েও দেন।
রিকশার জন্য বরাত দেওয়া টাকা উদ্ধার করে পুলিশ। এর পর রিনাকে চৌত্রিশ হাজার টাকা ফিরিয়ে দেয় তারা। এই খবর নেটমাধ্যমে দেখতে পান সুদূর কানাডার টরেন্টোর প্রবাসী বাঙালি দম্পতি অরূপ রায় এবং কেয়া রায়। হাওড়ার বালির বাসিন্দা অমিত রায় সম্পর্কে অরূপ রায়ের ভাই। তার মাধ্যমেই যোগাযোগ করা হয় পুলিশের সঙ্গে। প্রবাসী ওই দম্পতি রিকশা চালককে নতুন রিকশা কিনে দেবার জন্য ১৩ হাজার টাকা পাঠান। অমিত রায় বলেন, “দাদা এবং বৌদি অভাবী ওই রিকশা চালকের পাশে দাঁড়াতে চেয়েছেন আর যা সম্ভব হয়েছে বালি থানার ওসি সঞ্জয় কুণ্ডুর জন্য। ডানকুনি থেকে নতুন রিকশা এনে তা সুন্দর করে বেলুন দিয়ে সাজিয়ে তুলে দেওয়া হয় তপনের হাতে। ওসি সঞ্জয় কুণ্ডু জানান, পুলিশের সম্পর্কে মানুষের হয়তো কিছু খারাপ ধারণা আছে যেটা ঠিক নয়। তাঁরাও সব সময় চান মানবিক কাজ করতে।
নতুন রিকশা পেয়ে স্বভাবতই খুশী তপন। প্রবাসী ওই দম্পতি ও বালি থানার ওসিকে ধন্যবাদ দিয়ে তিনি বলেন, “জীবনে নতুন দিশা খুঁজে পেলাম।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy