তৈরি হচ্ছে নৌকা। বলাগড়ের রাজবংশীপাড়ায়। নিজস্ব চিত্র
‘জিআই’ (জিয়োগ্রাফিক্যাল ইন্ডিকেশন) স্বীকৃতি আদায়ের পথে অনেকটা এগিয়েছে বলাগড়ের নৌ-শিল্প। এই শিল্পের সঙ্গে যুক্ত সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য চিহ্নিত করার কাজও এ বার শুরু হল। গবেষকদের বক্তব্য, এখানকার নৌ-শিল্পের সঙ্গে বিভিন্ন লোকসংস্কৃতি লেপ্টে রয়েছে। নৌ-শিল্পকে বিশ্বের বাজারে সামগ্রিক ভাবে জনপ্রিয় করতে এই ঐতিহ্যকেও তুলে ধরা হবে।
গবেষণা দলের প্রধান দায়িত্বপ্রাপ্ত, আইপিআর (ইন্টেলেকচুয়াল প্রপার্টি রাইটস) চেয়ার প্রফেসর পিনাকী ঘোষ রবিবার বলাগড়ে নৌকা তৈরির কাজ খুঁটিয়ে দেখেন। কারিগরদের সংগঠনের লোকজনের সঙ্গে কথা বলেন। বৈঠক করেন বিডিও নীলাদ্রি সরকারের সঙ্গে। পিনাকী বলেন, ‘‘নৌ-শিল্প বলাগড়ের মানুষের জীবনে কী ভাবে সম্পৃক্ত হয়ে গিয়েছিল, আমরা জেনেছি। জিআই প্রাপ্তির পরের ধাপে নৌকা তৈরির সঙ্গে এই সাংস্কৃতিক অভিব্যক্তি মানুষের কাছে যথাসম্ভব তুলে ধরার চেষ্টা করা হবে। সেই কাজ শুরু হল।’’ সাংস্কৃতিক অভিব্যক্তির প্রসঙ্গে তিনি বোঝান, ‘‘ছৌয়ের মুখোশের সঙ্গে ছৌ নাচ বা পটচিত্র প্রদর্শনের সময় ছড়া কেটে তা ব্যাখ্যা করা। বলাগড়েও তেমনই নৌকাকেন্দ্রিক ছড়া, প্রবাদ, গান রয়েছে।
এখানকার নৌকা নিয়ে গবেষণার কাজে সহায়তা করছেন আঞ্চলিক ইতিহাস গবেষক তথা কলেজ-শিক্ষক পার্থ চট্টোপাধ্যায়। নৌ-শিল্পের ইতিহাস নিয়ে তিনি দীর্ঘদিন চর্চা করছেন। তাঁর সংগৃহীত নৌকাকেন্দ্রিক প্রবাদ, ছড়া, গান, টেরাকোটা নিয়ে বইও রয়েছে। বইটি এ ক্ষেত্রে কাজে লাগবে বলে পিনাকী জানান। বিডিও-র বক্তব্য, জিআই তকমা পেলে এবং লোক-ঐতিহ্য তুলে ধরা গেলে সামগ্রিক ভাবে এখানকার নৌ-শিল্প অন্য এক পরিচিতি লাভ করবে।
পার্থ জানান, বলাগড়ের নৌকা তৈরির সময় কারিগররা গুনগুনিয়ে গান করতেন। মুসলিমদের বিয়ের অনুষ্ঠানে গায়ে-হলুদের সময় গাওয়া গানেও রয়েছে নৌকার কথা। অনেক ছড়া, প্রবাদও আছে একে নিয়ে। মন্দিরে টেরাকোটার কাজেও রয়েছে নৌকা
পার্থের বক্তব্য, ‘‘সে ভাবে লাভ না হওয়ায় কারিগররা এই পেশা থেকে ক্রমে সরে যাচ্ছেন। এই শিল্প নতুন করে পরিচয় পেলে কারিগরদের জীবনে যদি আলো আসে, তার থেকে আনন্দের কিছু হতে পারে না।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy