ঝোপ-জঙ্গলে ঢেকেছে নজর মিনার (উপরে)। অকেজো সিসি ক্যামেরাও। নিজস্ব চিত্র।
রাতে তো বটেই। বাদ যাচ্ছে না দিনের বেলাও। হাওড়ার বাগনানের চন্দ্রপুর থেকে রাজাপুরের পাঁচলা মোড় পর্যন্ত মুম্বই রোডের প্রায় তিরিশ কিলোমিটার এলাকায় প্রায় প্রতিদিনই ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটছে। বিষয়টি নিয়ে নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন সাধারণ মানুষ। বিষয়টি স্বীকার করে গ্রামীণ জেলা পুলিশ সুপার সৌম্য রায় বলেন, ‘‘পুলিশ সব ঘটনারই তদন্ত করছে। অপরাধীদেরও ধরার চেষ্টা চলছে।’’
সম্প্রতি উলুবেড়িয়ার জোড়াকলতলার কাছে মোটরবাইক আরোহী এক ব্যবসায়ী ছিনতাইকারীদের কবলে পড়ে তিন লক্ষ টাকা খোয়ান। অন্য একটি মোটরবাইকে করে তিনজন ছিনতাইকারী এসে আগ্নেয়াস্ত্র দেখিয়ে তাঁর কাছ থেকে টাকা ছিনতাই করে নিয়ে পালিয়ে যায়। পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, চন্দ্রপুর, মহিষরেখা, তুলসীবেড়িয়া মোড়, বীরশিবপুর, জোড়া কলতলা, পাঁচলা মোড় এই সব এলাকাতেই মূলত বেশি ছিনতাই হচ্ছে। মোটরবাইক আরোহী দম্পতিরা বিশেষত মহিলারাই
টার্গেট ওই দুষ্কৃতীদের। ছিনতাইকারীরা এক বা একাধিক মোটরবাইকে থাকে। তারা কোনও এক দম্পতির দিকে প্রথম থেকেই নজর রাখে। একদল পিছু নেয় ওই দম্পতির। অন্য দল একটু সামনে থেকে গিয়ে তাদের পথ আটকায়। সেই সুযোগে অন্য দল দুষ্কৃতী বাইকে চেপে মহিলার সোনার জিনিস টেনে ছিনিয়ে নিয়ে পালায়।
ছিনতাইয়ের ঘটনার পিছনে কয়েকটি কারণের উল্লেখ করেছেন গ্রামীণ জেলা পুলিশ কর্তাদের একাংশ। তাঁদের বক্তব্য, মুম্বই রোডের গুরুত্বপূর্ণ এলাকাগুলিতে সিসি ক্যামেরা
ছিল। তার কন্ট্রোলরুম ছিল ধূলাগড়িতে। সেখান থেকেই মুম্বই রোডে নজরদারি চলত। কিন্তু
আমপানে সিসি ক্যামেরাগুলির অধিকাংশ বিগড়ে গিয়েছে। ফলে নজরদারির কাজ বন্ধ। এছাড়া মুম্বই রোডের ধারে নজর মিনার থেকে পুলিশ সিসি
ক্যামেরার মাধ্যমে মুম্বই রোডে নজরদারি চালাত। কিন্তু নজর মিনারগুলিতে আর পুলিশ বসে না।
কয়েক বছর আগে উলুবেড়িয়া থানাকে ভাগ করে কিছু এলাকা রাখা হয়েছে নতুন থানা রাজাপুরের অধীনে। মুম্বই রোডের কিছু অংশ রাজাপুর এবং কিছু এলাকা উলুবেড়িয়া থানার অন্তর্ভূক্ত। এই দুই থানার সীমানা সংলগ্ন এলাকাতেই ছিনতাই বেশি হচ্ছে। ফলে কোন থানা সেই অপরাধের তদন্ত করবে তা নিয়ে বিভ্রান্তি সৃষ্টি হচ্ছে। তারই সুযোগ নিচ্ছে অপরাধীরা।
পাশাপাশি করোনা পরিস্থিতিতে মানুষের কাজ হারানোকেও এই অপকর্মের কারণ হিসেবে দুষছেন গ্রামীণ জেলা পুলিশের কর্তাদের একাংশ। গ্রামীণ জেলা পুলিশের এক পদস্থ কর্তার কথায়, ‘‘তদন্তে দেখা গিয়েছে ছিনতাইয়ের সাথে যারা জড়িত তাদের অপরাধের খুব একটা অতীত রেকর্ড নেই। অনেকে আবার একেবারেই স্থানীয় যুবক। এ থেকে বোঝা যায় বেকারত্ব থেকে মুক্তি পেতেই যুবকদের একটা অংশ অপরাধ জগতের সাথে জড়িয়ে পড়ছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy